আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রহস্যময় বারমুডা ট্রায়াঙ্গল...........

আমি প্রযুক্তিকে ভালবাসি....তাই প্রযুক্তির সাথে আছি ...থাকব ....ভবিষ্যৎ এ দেশের মানুষের জন্য কিছু একটা করতে চাই .......... বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম শুরু করছি আরেকটি টিউন বারমুডা ট্রায়াঙ্গল সম্বন্ধে ...ইহা সাম্প্রতিক কালে মানুষের অজানা এক রহস্য ...এটি পৃথিবীর অন্যতম রহস্যময় স্থান । এই স্থানে এলে সামুদ্রিক জাহাজ, উড়ো জাহাজ হঠাৎ এমনভাবে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় যে - এর নাম নিশানা আর খুজে পাওয়া যায় না । এই স্থানটিত এমন কি এক অদ্ভুত রহস্য লুকিয়ে আছে তা কেউ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়নি আজও । সমুদ্রে জাহাজ ডুবলে সেটি উদ্ধার করা না গেলেও তার অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায় কিন্তু এই বিস্ময়কর স্থানে জাহাজ ডুবলে ঐ স্থানে আঁতিপাতিঁ খুজলেও তার একটু খানি চিহৃ আর খুজে পাওয়া যায় না........বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল বিষয়ে যারা লিখেছেন তাঁদের মতে ক্রিস্টোফার কলম্বাস সর্বপ্রথম এই ত্রিভূজ বিষয়ে অদ্ভুত অভিজ্ঞতার কথা লিখেন। তিনি লিখেছিলেন যে তাঁর জাহাজের নবিকেরা এ অঞ্চলের দিগন্তে আলোর নাচানাচি, আকাশে ধোঁয়া দেখেছেন।

এছাড়া তিনি এখানে কম্পাসের উল্টাপাল্টা দিক নির্দেশনার কথাও বর্ণনা করেছেন। তিনি ১১ই অক্টোবর, ১৪৯২ তে তাঁর লগ বুকে লিখেন..বর্তমানে বিশেষজ্ঞরা প্রকৃত লগবুক পরীক্ষা করে যে মত দিয়েছেন তার সারমর্ম হল – নাবিকেরা যে আলো দেখেছেন তা হল স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ব্যবহৃত নৌকায় রান্নার কাজে ব্যবহৃত আগুন, আর কম্পাসে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল নক্ষত্রের অবস্থান পরিবর্তনের কারণে। ১৯৫০ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর ই. ভি. ডব্লিউ. জোন্স( E.V.W. Jones) সর্বপ্রথম এ ত্রিভূজ নিয়ে খবরের কাগজে লিখেন। এর দু বছর পর ফেইট (Fate)ম্যাগাজিনে জর্জ এক্স. স্যান্ড( George X. Sand) “সী মিস্ট্রি এট আওয়ার ব্যাক ডোর” ("Sea Mystery At Our Back Door") শিরোনামে একটি ছোট প্রবন্ধ লিখেন, এ প্রবন্ধে তিনি ফ্লাইট নাইনটিন ( ইউ এস নেভী-র পাঁচটি ‘টি বি এম অ্যাভেন্জার’ বিমানের একটি দল, যা প্রশিক্ষণ মিশনে গিয়ে নিখোঁজ হয়) এর নিরুদ্দেশের কাহিনী বর্ণনা করেন এবং তিনিই প্রথম এই অপরিচিত ত্রিভূজাকার অঞ্চলের কথা সবার সামনে তুলে ধরেন। ১৯৬২ সালের এপ্রিল মাসে ফ্লাইট নাইনটিন নিয়ে আমেরিকান লিজান (American Legion) ম্যগাজিনে লিখা হয়।

বলা হয়ে থাকে এই ফ্লাইটের দলপতি কে নাকি বলতে শোনা গিয়েছে- We don't know where we are, the water is green, no white। এর অর্থ হল "আমরা কোথায় আছি জানি না, সবুজ বর্ণের জল, কোথাও সাদা কিছু নেই"। এতেই প্রথম ফ্লাইট নাইনটিনকে কোন অতিপ্রাকৃতিক ঘটনার সাথে যুক্ত করা হয়। এরপর ভিনসেন্ট গডিস (Vincent Gaddis) “প্রাণঘাতী বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল”( The Deadly Bermuda Triangle) নামে আর এক কাহিনী ফাঁদেন ১৯৬৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এর উপর ভিত্তি করেই তিনি আরও বিস্তর বর্ণনা সহকারে লিখেন "ইনভিজিবল হরাইজন" (Invisible Horizons) মানে “অদৃশ্য দিগন্ত” নামের বই।

আরও অনেক লেখকই নিজ নিজ মনের মাধুরী মিশিয়ে এ বিষয়ে বই লিখেন, তাঁরা হলেন জন ওয়ালেস স্পেন্সার, তিনি লিখেন "লিম্বো অফ দ্যা লস্ট" (Limbo of the Lost, 1969, repr. 1973), মানে “বিস্মৃত অন্তর্ধান” ; চার্লস বার্লিটজ (Charles Berlitz) লিখেন “দি বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল”(The Bermuda Triangle, 1974),; রিচার্ড উইনার লিখেন "দ্যা ডেভিল'স ট্রায়াঙ্গেল" “শয়তানের ত্রিভূজ” (The Devil's Triangle, 1974) নামের বই, , এছাড়া আরও অনেকেই লিখেছেন। এরা সবাই ঘুরেফিরে একার্ট ( Eckert) বর্ণিত অতিপ্রাকৃতিক ঘটানাই বিভিন্ন স্বাদে উপস্থাপন করেছেন। . ****কুসচ ( Kusche) এর ব্যাখ্যা লরেন্স ডেভিড কুসচ হলেন “অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি”-র রিসার্চ লাইব্রেরিয়ান এবং “ দ্যা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল মিস্ট্রি: সলভড (১৯৭৫)” এর লেখক। তাঁর গবেষণায় তিনি চার্লস বার্লিটজ (Charles Berlitz) এর বর্ণনার সাথে প্রত্যক্ষ্যদর্শীদের বর্ণনার অসংগতি তুলে ধরেন। যেমন- যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমান থাকার পরেও বার্লিটজ (Charles Berlitz) বিখ্যাত ইয়টসম্যান ডোনাল্ড ক্রোহার্সট(Donald Crowhurt) এর অন্তর্ধানকে বর্ণনা করেছেন রহস্য হিসেবে।

আরও একটি উদাহরণ হল- আটলান্টিকের এক বন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়ার তিন দিন পরে একটি আকরিকবাহী জাহাজের নিখোঁজ হবার কথা বার্লিটজ বর্ণনা করেছেন, আবার অন্য এক স্থানে একই জাহাজের কথা বর্ণনা করে বলেছেন সেটি নাকি প্রশান্ত মহাসাগরের একটি বন্দর থেকে ছাড়ার পর নিখোঁজ হয়েছিল। এছাড়াও কুসচ দেখান যে বর্ণিত দূর্ঘটনার একটি বড় অংশই ঘটেছে কথিত ত্রিভূজের সীমানার বাইরে। কুসচ এর গবেষণা ছিল খু্বই সাধারন। তিনি শুধু লেখকদের বর্ণনায় বিভিন্ন দূর্ঘটনার তারিখ, সময় ইত্যাদি অনুযায়ী সে সময়ের খবরের কাগজ থেকে আবহাওয়ার খবর আর গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো সংগ্রহ করেছেন যা গল্পে লেখকরা বলেননি। কুসচ –এর গবেষণায় যা পাওয়া যায় তা হল- বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে যে পরিমাণ জাহাজ ও উড়োজাহাজ নিখোঁজ হওয়ায় কথা বলা হয় তার পরিমাণ বিশ্বের অন্যান সমুদ্রের তুলনায় বেশি নয়।

এ অঞ্চলে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় (tropical storms) নিয়মিত আঘাত হানে, যা জাহাজ ও উড়োজাহাজ নিখোঁজ হওয়ার অন্যতম কারন। কিন্তু বার্লিটজ বা অন্য লেখকেরা এধরনের ঝড়ের কথা অনেকাংশেই এড়িয়ে গিয়েছেন। অনেক ঘটনার বর্ণনাতেই লেখকেরা কল্পনার রং চড়িয়েছেন। আবার কোন নৌকা নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে দেরিতে বন্দরে ভিড়লে তাকে নিখোঁজ বলে‌ প্রচার করা হয়েছে। আবার কখনোই ঘটেনি এমন অনেক ঘটনার কথা লেখকেরা বরেছেন।

যেমন- ১৯৩৭ সালে ফ্লোরিডার ডেটোনা সমুদ্রতীরে( Daytona Beach) একটি বিমান দূর্ঘটনার কথা বলা হয়, কিন্তু সেসময়ের খবরের কাগজ থেকে এ বিষয়ে কোন তথ্যই পাওয়া যায়নি। সুতরাং কুসচ –এর গবেষণার উপসংহারে বলা যায়- লেখকরা অজ্ঞতার কারনে অথবা ইচ্ছাকৃত ভাবে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নিয়ে বানোয়াট রহস্য তৈরি করেছেন। ****অন্যদের প্রতিক্রিয়া মেরিন বীমা কোম্পানী “লয়েড'স অব লন্ডন”(Lloyd's of London) দেখেছে যে , এই ত্রিভূজে অন্য সমুদ্রের চেয়ে উল্লেখ্য করবার মত ভয়ংকর কিছু নেই। তাই তারা এই অঞ্চল দিয়ে গমনকারী কোন জাহাজের উপর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাশুল আদায় করে না। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড লেখকদের বর্ণনার উপর ব্যাপক অনুসন্ধানের পর অনুমোদন করেছে এই অঞ্চলে অস্বাভাবিক কিছু নেই।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- ১৯৭২ সালে ভি.এ. ফগ (V.A. Fogg) নামের একটি ট্যাঙ্কার মেক্সিকো উপসাগরে বিষ্ফোরণেরর পর ডুবে যায়। কোস্ট গার্ডরা সে বিধ্বস্ত ট্যাঙ্কারের ছবি তোলেন এবং বেশ কিছু মৃত দেহও উদ্ধার করেন। , কিন্তু কতিপয় লেখক বলেছেন ঐ ট্যাঙ্কারের সব আরোহী অদৃশ্য হয়ে গেছে, শুধুমাত্র এর ক্যাপ্টেনকে তার কেবিনের টেবিলে হাতে কফির মগ ধরা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। টিভি সিরিয়াল NOVA / Horizon এর “ দ্যা কেস অব দ্যা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল (১৯৭৬-০৬-২৭)” পর্বে বলা হয়েছিল , যে সব দূর্ঘটনার কথা বলা হয় সেগুলো ভিত্তিহীন। "সংশয়বাদী গবেষকগণ, যেমন আর্নেস্ট ট্যাভস ( Ernest Taves) এবং ব্যারি সিংগার( Barry Singer), দেখিয়েছেন যে , মিথ্যে রহস্য তৈরি করা বেশ লাভজনক।

কারণ তখন ঐ মিথ্যে রহস্যের উপর ভিত্তি করে বই লিখে বা টিভিতে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করে প্রচুর অর্থ কামানো যায়। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল টি কিছু স্থলভাগের উপর দিয়েও গিয়েছে যেমন পোর্তো রিকো ( Puerto Rico), বাহামা এমন কি বারমুডা নিজেই। কিন্তু এসব জায়গায় কোন স্থলযানের নিখোঁজ হবার খবর জানা যায়নি। এছাড়া এই ত্রিভূজের মধ্যে অবস্থিত ফ্রীপোর্ট শহরে বড়সড় জাহাজ কারখানা রয়েছে আর রয়েছে একটি বিমান বন্দর, যা কোন গোলযোগ ছাড়াই বছরে ৫০,০০০ টি বিমানের ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ****কম্পাসের ভূল দিক নির্দেশনা কম্পাসের পাঠ নিয়ে বিভ্রান্তি অনেকাংশে এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের কাহিনীর সাথে জড়িত।

এটা মনে রাখা প্রয়োজন যে কম্পাস থেকে চুম্বক মেরুর দূরত্বের উপর ভিত্তি করে এর দিক নির্দেশনায় বিচ্যূতি আসে। উদাহরন হিসেবে বলা যায়- যুক্তরাষ্ট্রে শুধুমাত্র উইসকনসিন(Wisconsin) থেকে মেক্সিকোর উপসাগর(Gulf of Mexico) পর্যন্ত সরলরেখা বরাবর চৌম্বক উত্তর মেরু সঠিক ভাবে ভৌগোলিক উত্তর মেরু নির্দেশ করে। এই সাধারণ তথ্য যে কোন দক্ষ পথপ্রদর্শকের জানা থাকার কথা। কিন্তু সমস্যা হল সাধারণ মানুষকে নিয়ে, যারা এ বিষয়ে কিছুই জানে না। ঐ ত্রিভূজ এলাকা জুড়ে কম্পাসের এমন বিচ্যূতি তাদের কাছে রহস্যময় মনে হয়।

কিন্তু এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। ...উপরে এই স্হানের একটি ম্যাপ দিলাম দেখে নিন .. ....আসলে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন তথ্য উপস্হাপন করেছে আসলে যে যাই বলুক আমরা মুসলিম হিসেবে আমরা একটা কথাই বিশ্বাস করি এগুলো সব আল্লাহর লিলা খেলা......আল্লাহর কুদরতে বহিঃপ্রকাশ............আজ এইটুকুতেই থাক সময়পেলে এটা নিয়ে আরেকদিন লিখব...............ধন্যবাদ সবাইকে........... বি:দ্র:- সময় পেলে নিচের তিনটি সাইটে ঘুরে আসুন ..... http://techtweets.com.bd/ http://www.tunerpage.com/ http://rejvi587.blogspot.com/  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.