আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রহস্যময় নিখোঁজ বাড়ছে

মানুষ নিদ্রিত এবং মৃত্যুর পরপরই সে জেগে উঠবে।


কোনোভাবেই থামছে না নিখোঁজ আর গুমের ঘটনা। একের পর এক জ্বলজ্যান্ত মানুষ উধাও হচ্ছে, লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছে। একবার নিখোঁজ হলেই মিলছে না খোঁজ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকলেও কিছুতেই রোধ হচ্ছে না অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি কিংবা হত্যার ঘটনা।

এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে দেশের সাধারণ মানুষ। সাদা পোশাকে র‌্যাব-ডিবির পরিচয়ে গাড়িতে তুলে অপহরণ করা হচ্ছে। অপহরণের পর অপহৃতরা পরিবারের কাছে থাকছেন নিখোঁজ। তারপর উদ্ধার হচ্ছে লাশ। লাশের গায়ে গুলির চিহ্ন পাওয়া যাচ্ছে।

পচেগলে লাশ হচ্ছে বিকৃত। শনাক্ত করা না গেলে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নামে সংঘটিত এসব ঘটনার রহস্য উন্মোচিত না হওয়ায় উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত জানুয়ারিতে মাত্র দুই দিনেই মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, কালিয়াকৈর, লক্ষ্মীপুর, রায়পুর, খুলনা থেকে ১১টি লাশ উদ্ধারের পর স্বজন হারানোদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্র বলছে, অপহরণ, নিখোঁজ, গুম আর গুপ্তহত্যার ঘটনা ঘটলে প্রথমেই অভিযোগের তীর ছোড়া হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার দিকে।

কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর নাম ভাঙিয়ে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটানোর ঘটনাও কম নয়। জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ভাড়াটে বাহিনী দিয়ে অপহরণ, গুম, হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েও র‌্যাব-ডিবির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার নজির রয়েছে।

অপহরণ করে গুপ্তস্থানে আটক রেখে মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ঘটিয়েও চলছে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী চক্র। তারাও অপহরণকালে র‌্যাব-পুলিশের নাম ভাঙিয়ে নিজেদের অপরাধকর্ম নির্বিঘ্নে করে থাকে। অতি সম্প্রতি এক রাতে ময়মনসিংহের ভালুকার একটি বাড়ি থেকে তিন সহোদরকে র‌্যাব লেখা পোশাক পরা একদল ব্যক্তি তুলে নিয়ে যায়।

গুমের বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে আবারও। র‌্যাব পরিচয়ে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হলেও সংশ্লিষ্ট র‌্যাব কর্তৃপক্ষ তাদের আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে। ঘটনার চতুর্থ দিনে তারা ফিরে এলেও কারা তাদের তুলে নিয়ে গিয়েছিল- এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই পুলিশের কাছে।

র‌্যাব সূত্র জানায়, অপহরণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতকারীদের ধরতে র‌্যাব এ পর্যন্ত ৫৯৭টি অভিযান পরিচালনা করে ১ হাজার ১৫ জন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এসব অভিযানে ৬৬৯ জন অপহৃতকে জীবিত এবং ২৭ জনকে মৃত উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, অপহরণের পর অনেকেরই বিকৃত লাশ উদ্ধার হচ্ছে। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস নিখোঁজ থেকে যাচ্ছেন অনেকেই। বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমের নিখোঁজ রহস্যের জট আজও খোলেনি।

চলতি বছরের প্রথম দুই মাসেই প্রায় শতাধিক ব্যক্তি অপহরণের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন বলে পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানিয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হিসাব মতে, চলতি বছরেই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে অন্তত ৬৮ ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নামে অপহরণের শিকার হয়েছেন ৩০ ব্যক্তি। চলতি মাসে আরও ৭-৮ জন গুমের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে ১৬ জন ও ফেব্রুয়ারি মাসে ১৪ জন অপহৃত হন।

জানুয়ারি মাসে সাত জনের ও ফেব্রুয়ারি মাসে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

বাকিদের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দাবি করে আসছে, দুর্বৃত্তরা অপহরণ করে পুলিশ-র‌্যাবের নাম ব্যবহার করছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগও কাজে লাগাচ্ছে সন্ত্রাসী গ্রুপ। এ কারণে বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত হচ্ছে হত্যাকাণ্ড, অপহরণ..

সমাপ্ত।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.