আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খালেদার আর কতো মিত্র চাই???

খালেদা জিয়া ঘন ঘন বিদেশ সফর করেন। সেটা তারেক কোকো ব্যবসা দেখার জন্য, নাকি তার চিকিৎসার জন্য সেটা পরের কথা। আসল কথা হলো, আগামীতে ক্ষমতায় আসতে ও নির্বাচনের আগে দলের অবস্থান শক্ত করতে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এখন আন্তর্জাতিক মিত্রের সন্ধানে মাঠে নেমেছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারকারী বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। বিএনপি চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, এরই অংশ হিসেবে শিগগিরই ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদিআরবসহ প্রভাবশালী পাঁচটি দেশ সফর করবেন খালেদা জিয়া।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, রোজার মধ্যে ম্যাডাম হজে যাবেন। এছাড়া তার কয়েকটি দেশ সফরে যাওয়ার কথাও রয়েছে। কিন্তু এখনো সেসব চূড়ান্ত হয়নি। সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের চুক্তি বাতিল, র‌্যাবকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার ও বিডিআর বিদ্রোহের বিচার বন্ধে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি সত্ত্বেও গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরিয়ে দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার সঙ্গে সরকারের সৃষ্টি হওয়া শীতল সম্পর্কের সুযোগ নিতে চাইছে বিএনপি। আগামী ডিসেম্বরের দিকে ভারত, গণচীন ও যুক্তরাষ্ট্র সফরে যেতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

দলের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুম, তারপর রোজা, দুই ঈদ, হজসহ বিভিন্ন কারণে আগামী ডিসেম্বরের আগে বড় কোনো আন্দোলন কর্মসূচিতে যাচ্ছে না বিএনপি। বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, বিএনপি আন্দোলন করেই দাবি আদায় করবে। তবে জনগণের দুর্ভোগ হয় এমন কোনো কর্মসূচি আপাতত দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে না। এর পরিবর্তে অবরোধ, অনশন, মানববন্ধন, সভা-সমাবেশের কর্মসূচি চলবে। এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এ দেশে ক্ষমতায় যেতে হলে আন্তর্জাতিক মুরবি্বদের সাহায্য ও সমর্থন লাগে।

পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারি ও ইউনূস ইস্যু নিয়ে সরকার যখন সঙ্কটে রয়েছে ঠিক সেই মুহূর্তে বিএনপি একটি সুযোগ নিতে চাচ্ছে। তাদের রাজনৈতিক অবস্থান মজবুত করতে আন্তর্জাতিক মিত্রের সন্ধানে নেমেছেন খালেদা জিয়া নিজেই। সূত্র মতে, বিএনপি ভারতের কাছে দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দল হিসেবে চিহ্নিত। ইসলামী নামধারী সংগঠনগুলো বিএনপির মিত্র ও সহযোগী হওয়ায় বহিঃবিশ্বে অনেকটা বেকায়দায় রয়েছে দলটি। ইসলামী সংগঠনগুলোর সঙ্গে চলাফেরার কারণে আমেরিকার গুড বুকে নেই বিএনপি।

তবে পাকিস্তান বিএনপির ভালো মিত্র ছিল। কিন্তু আমেরিকার পাল্লায় পড়ে তাদের সমর্থনও এখন হারাতে বসেছে বিএনপি। জানা গেছে, বিএনপির জন্মলগ্ন থেকে দলের আন্তর্জাতিক যোগাযোগ রক্ষা করতেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। ২০০১ সালে দল ক্ষমতায় আসার পর তাকে রাষ্ট্রপতি করা হয়। ২০০২ সালে বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।

একই সঙ্গে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি। এর পর থেকে দলের আন্তর্জাতিক লবিং কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। এরপর দলের ভেতরে অনেক নেতাকে এ দায়িত্ব দিলেও কেউ খুব একটা সফলতা অর্জন করতে পারেননি। ফলে এ সঙ্কটময় মুহূর্তে বিদেশি মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার এবং নতুন মিত্র ও মুরবি্ব খোঁজার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তাছাড়া যেসব আন্তর্জাতিক বন্ধু ও মুরবি্বর সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক মোটোমুটি ভালো তাদের নির্দেশনার বাইরে গিয়ে এই মুহূর্তে কোনো ঝুঁকিও নিতে চাচ্ছে না দলটি।

জানা গেছে, এখন বহিঃবিশ্বে প্রাথমিক যোগাযোগ রক্ষা করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে.জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও ড. ওসমান ফারুক। এ ব্যাপারে জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, 'বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ। বহিঃবিশ্বে আমাদের অনেক বেশি বন্ধু থাকা উচিত। তাই আমরা দলীয়ভাবে কাজ শুরু করেছি। যে কোন দেশ পরিচালনায় আন্তর্জাতিকভাবে পার্টি টু পার্টি, সরকার টু সরকার সম্পর্কের উন্নয়ন করতে হয়।

এ লক্ষ্যেই দলীয় প্রধান বহিঃবিশ্ব সফর করবেন। আগামীতে পর্যায়ক্রমে তিনি আরো বেশ কয়েকটি দেশে যাবেন!!! তবে ভয়ের ব্যাপার হলো খালেদার বিদেশ সফর কোনোভাবেই ভালো চোখে দেখছে না বিশেষজ্ঞ মহল। যে সময়ে দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলছে, ঠিক সেই সময়ে খালেদার বিদেশ সফর অবশ্যই সন্দেহের উদ্রেগ করে। এছাড়া আগামী নির্বাচনে নতুন কোনো ফন্দি ফিকির করে দেশকে একটা অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিবে নাতো??? ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।