আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রতিযোগিতায় হারছে চাঁদপুরের লবণশিল্প

জেলা শহরে এক সময় চল্লিশটিরও বেশি লবণমিল ছিল। কমতে কমতে এখন এসে দাঁড়িয়েছে চার-এ। এতে বেকার হয়েছে কয়েকহাজার শ্রমিক।
যেকয়টি লবণ মিল চালু রয়েছে ব্যবসায়ীরা তাও চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন আর্থিক সমস্যার কারণে।
মিলমালিক ও শ্রমিকরা জানান, নৌপথকে ঘিরে এই জেলা শহরের পুরানবাজারে এক সময় বেশ কর্মচাঞ্চল ছিল ঐতিহ্যবাহী লবণশিল্প।


আমদানি করা লবণ এখানকার মিলগুলোতে প্রক্রিয়াজাত করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হতো। এখন তা একেবারে কমে গেছে।
তারা জানান, চাঁদপুরের পুরানবাজার এলাকায় ৪০টি লবণ মিল ছিল। এর মধ্যে চারটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাকি ৩৬টি নিয়মিত চালু ছিল।


এসব মিলে প্রতিটিতে আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদনের জন্য ইউনিসেফের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প সংস্থা (বিসিক) সাড়ে সাত লাখ টাকা মূল্যের আয়োডিন মেশানোর মেশিন বিনামূল্যে প্রদান করে।
এ মেশিনের মাধ্যমে আয়োডিন মিশ্রিত লবণ একটু কালচে বর্ণের হওয়ায় ভোক্তারা ক্রয়ে কম আগ্রহ দেখায়।
বর্তমানে বাজারে উন্নত প্রযুক্তি ও মেশিনের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্রান্ডের লবণ সাদা করা হয় হাইড্রোকেমিক্যাল দিয়ে। সাদা বর্ণের হওয়ায় এসব লবণের প্রতি সাধারণ ভোক্তারা বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে।
ফলে চাঁদপুরের লবণের মিলগুলো একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।


এভাবে ৩৬টি লবণ মিলের মধ্যে ৩২টি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এখানে কর্মরত কয়েকহাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।
সরকারিভাবে অর্থ সহায়তা না পাওয়া, নদীপথে পণ্য পরিবহনে বেশি সময় ব্যয়সহ নানা কারণে এ ব্যবসায়ে আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা জানান।
লবণমিল শ্রমিক মো. কালাম, আব্দুল খালেক, মো. করিমসহ কয়েকজন শ্রমিক জানান, কয়েকটি লবণমিল চালু থাকলেও ভালো নেই শ্রমিকরা। জীবন বাঁচানোর তাগিদে এই শিল্পে জড়িত থাকা শ্রমিকরা বিভিন্ন সময় শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

কম মজুরিতে জীবনধারণ কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।
বিসমিল্লাহ সল্ট ফ্যাক্টরির পরিচালক হাজী মো. বিল্লাল হোসেন পাটওয়ারী বলেন, উৎপাদিত লবণ একটু কালচে হওয়ায় উন্নত প্রযুক্তিতে উৎপাদিত সাদা লবণের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
“এছাড়া ব্যাংক ঋণও পাওয়া যাচ্ছে না নদী ভাঙ্গনের অজুহাতে, যার কারণে আমাদের মিলগুলো যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে,” বলেন বিল্লাল।
জনতা লবণ মিলের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া লবণমিলের যন্ত্রাংশগুলো এখন অলস অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।


চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম বলেন, যে কয়েকটি মিল চালু রয়েছে তা চালাতে হিমশিম খাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। পুরানবাজারের ঐতিহ্যবাহী লবণ শিল্পের অস্তিত্ব রক্ষায় ব্যাংক ঋণ ও সরকারি সহায়তার প্রয়োজন।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.