আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শতাব্দির আলোচিত রাস্ট্রনায়ক- দেশপ্রেমিক- ফ্যাসিস্ট- এডলফ হিটলার (২য় পর্ব)

গেলবার আমরা হিটলারকে স্কুলে পাঠিয়ে আর এগোইনি। আসুন দেখি তারপর কি হল। হিটলারের বাবা চাকরী থেকে অবসর নিলেন আর বেচারি হিটলারের জীবনে খানিকটা বিপদ এসে পড়ল। স্কুলের কড়া নিয়ম, বাবার কঠিন শাসন হিটলারকে একেবারে ঝামেলাতেই ফেলে দিল। বাড়ীতে বড় সৎভাই এলয়েস জুনিয়র সৎবোন এন্জেলা, বাবা, মা, ছোট ভাই এডমন্ড আর বোন পলা মানে সব মিলিয়ে একটা হট্টগোলের বাজার, যেখানে হিটলার পরানটা হাস ফাস করত।

উপরে পলা হিটলার বাবার জ্বালায় সৎভাই এলয়েস বাড়ী থেকে পালায়। তাকে আর কোনদিন কেউ দেখেনি। যার জন্য তার কোন ছবি পাওয়া যায়নি। স্কুলে হিটলার খুব একটা ভদ্র গোছের ছিলনা। সিগারেট খেতে গিয়ে ধরা পড়ে যায় এক পাদ্রীর হাতে।

৯ বছর বয়সে হিটলার একবার জার্মানীর একটা নদীর ঠান্ডা পানিতে ডুবে মরছিলেন তখন যোহান কুয়েবারজার (Johan Kuehberger) নামক এক বালক তাকে বাঁচায়। সেদিন সেই বন্ধুটি তাকে না বাচালে পৃথিবীর ইতিহাস হয়ত অন্যরকম হতো। ছবিতে ঐ পাদ্রী আর সেই নদী: স্কুলে থাকার সময় হিটলার কার্ল মে ( Karl May ১৮৪২-১৯১২) নামক একজন বিখ্যাত লেখকের বই পড়া শুরু করেন। তাঁর ছবি নীচে: এই লেখকের বই তিনি ফুয়েরার হবার পরেও পড়তেন। এছাড়া যুদ্ধের বইও পড়তেন বিশেষ করে ১৮৭০- ৭১ সালে সংঘটিত জার্মানী ফ্রান্স যুদ্ধের উপর লেখা বেশ পড়তেন।

একথাটি তার মেইন ক্যাম্পফ বইতে উল্লেখ আছে। এই সময় তার ছোটভাই এডমন্ড হিটলার ৬ বছর বয়সে হাম হয়ে মারা যায়। হিটলারের বয়স যখন ১৩ বছর তখন অস্ট্রিয়ার লিয়নডিং শহরে ৬৫ বছর বয়সে ফুসফুসে রক্তক্ষরন হয়ে হিটলারের বাবা এলয়েস ১৯০৩ সালের ২৩ শে জানুয়ারি হঠাৎ মারা যান। বলে রাখি হিটলারেরও ফুসফুসে সমস্যা ছিল। নীচে অস্ট্রিয়ায় এডলফের বাবা এলয়সের সমাধি: নীচের এই বাড়ীটিতেই এডলফ হিটলার জন্মেছিলেন।

স্কুলে তিনি মাধ্যমিক পরীক্ষায় খুব খারাপ করেন। তাকে পুরো বছরের পড়াটা আবার পড়তে হয়েছিল, শাস্তি হিসেবে। এটাকে তিনি খুবই অপছন্দ করলেন। তখন তিনি তার মাকে গিয়ে বলেন তার আর লেখা পড়ার দরকার নেই। মা রাজি হলে তিনি মদ্যপান করে সেটাকে সেলিব্রেট করেন।

মদপান করার সময় তার ঐ জিনিসটার প্রতি এক অজ্ঞাত কারণে বৈরাগ্য এসে পড়ে আর ত্রিশ বছর বয়স হবার আগে থেকেই তিনি মদ খাওয়া সম্পুর্ণ ছেড়ে দেন, জীবনে আর মদ খাননি। ছবি আকায় হিটলারের বেশ ঝোক ছিল। ইচ্ছে ছিল চিত্রশিল্পি হবেন। দক্ষতাও ছিল। বিশেষ করে বাড়ী ঘর বড় ভবনের ছবি আকাতে তিনি বেশ দক্ষ ছিলেন।

১৮ বছর বয়সে তিনি বাবার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন এবং বেশ কিছু টাকা হাতে পান। এরপর তিনি ভিয়েনা আর্ট একাডেমিতে ভর্তির জন্য দরখাস্ত করেন। দুর্ভাগ্য হিটলারের, দুর্ভাগ্য পৃথিবীর যে তার দরখাস্তখানা প্রত্যখ্যাত হয়। এরপর তিনি দরখাস্ত করেন ভিয়েনা স্কুল অব আর্কিটেকচারে ভর্তির জন্য আর সেখানেও তাকে ভর্তি করা হয়নি কারন তার কোন স্কুল ছাড়ার সার্টিফিকেট ছিলনা। আগেই পড়েছেন হিটলার মাধ্যমিক পরীক্ষাই দেননি।

সেদিন যদি ভিয়েনা কতৃপক্ষ এডলফ হিটলারে দরখাস্তখানা প্রত্যাখ্যান না করতেন তাহলে পৃথিবীর ইতিহাস হয়ত অন্যরকম হত! উপরে হিটলারের আঁকা বহু সুন্দর ছবির দুটি। বোরিং হবার আগেই আজ ক্ষ্যামা দিলুম। আমার প্রিয় মানুষটির ইতিহাসের বাকিটুকু? আরেকদিন।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.