আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভোলায় বিএনপি-বিজেপি মুখোমুখি

ভোলায় চারদলীয় জোটের রাজনীতিতে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। ভোলা-১ আসনের এমপি এবং বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থর সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের অবনতির ফলে মূলত চারদলীয় জোটে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। স্থানীয় বিএনপির একটি গ্রুপ চাইছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে এই আসন থেকে দলের জেলা সভাপতি গোলাম নবী আলমগীরকে মনোনয়ন দেওয়া হোক, যিনি গত পৌর নির্বাচনে বর্তমান পৌর মেয়র মনিরুজ্জামানের কাছে হেরে যান। বিগত জাতীয় নির্বাচনে এই আসন থেকে ব্যারিস্টার পার্থকে মনোনয়ন দেওয়ার পর থেকেই বিএনপির সঙ্গে বিজেপির দূরত্ব বাড়তে থাকে। দলের প্রবীণ নেতা ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোশারেফ হোসেন শাজাহানকে মনোনয়ন না দেওয়ায় তাঁর সমর্থিতরা এমপি পার্থকে নিজেদের প্রতিপক্ষ হিসেবে ভাবতে শুরু করে।

সেই থেকে আজ পর্যন্ত ভোলা বিএনপির সঙ্গে জোটের শীর্ষ নেতা পার্থ এবং তাঁর দল বিজেপির মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। দুই দলের বিরোধের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ঘটে গত বুধবার। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৭৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত কর্মী সমাবেশে দলের নেতারা বিষোদ্গার করেন সদর আসনের এমপি ব্যারিস্টার পার্থর বিরুদ্ধে। বিএনপি নেতা ও বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান সরোয়ারকে এনে প্রধান অতিথি করা হয় ওই সভায়। তাঁর উপস্থিতিতেই ভোলা জেলা বিএনপি এবং ছাত্রদলের নেতারা এমপি পার্থকে উদ্দেশ করে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন।

দাবি তোলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীকেই মনোনয়ন দিতে হবে। এ নিয়ে ভোলায় শুরু হয় তোলপাড়। উত্তেজনা দেখা দেয় বিএনপির শরিক দল বিজেপির নেতা-কর্মীদের মধ্যেও। এ ব্যাপারে ভোলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন জানান, কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে সদর আসনের এমপি পার্থ সম্পর্কে ছাত্রদল সভাপতির অশোভন কটূক্তি দুঃখজনক ও বিভ্রান্তিমূলক। তিনি আরো বলেন, 'আমরা বিএনপির ক্ষমতাকালেও চারদলীয় জোটে ছিলাম।

কিন্তু তখন এখানকার দায়িত্বে থাকা মন্ত্রীর কাছ থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাইনি। অথচ আমাদের দলের চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ তাঁর ব্যক্তিগত এবং নিজ এমপি কোটায় থাকা বরাদ্দের অধিকাংশই এখানকার বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে বণ্টন করে আসছেন। ' বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, ভোলা বিএনপির রাজনীতিতে দুটি গ্রুপ দুই মেরুতে অবস্থান করছে। সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাইসুল আলম এবং জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হারুন-অর-রশিদের নেতৃত্বে রয়েছে একটি গ্রুপ। অপরদিকে, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোশারেফ হোসেন শাজাহান ও তাঁর ভাই জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফারুক মিয়ার নেতৃত্বে রয়েছে আরেকটি গ্রুপ।

একই দলের দুই গ্রুপের এই বিভক্তিতে ভোলা বিএনপির রাজনীতি এখন শম্বুক গতিতে চলছে। দলের রাইসুল গ্রুপের নেতা-কর্মীরা বিজেপি চেয়ারম্যান পার্থর সঙ্গে সমন্বয় করে চলছেন। আর এ কারণেই অপর গ্রুপটি এককভাবে শক্তি সঞ্চয় করতে পারছে না বলে দলের নেতা-কর্মীরা মনে করছেন। ফলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেও বর্তমান এমপি পার্থর দিকেই সদর আসনে জোটপ্রার্থী হিসেবে খালেদা জিয়ার আশীর্বাদ রয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এদিকে, ছাত্রদল সভাপতির অশোভন কটূক্তি সম্পর্কে বিএনপির অপর গ্রুপের নেতা রাইসুল আলম জানান, ঘটনাটি দুঃখজনক।

চারদলীয় জোটের শীর্ষ নেতা এবং একজন এমপি সম্পর্কে এ ধরনের বেফাঁস মন্তব্য কেউই মেনে নেবে না। তবে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফারুক মিয়া বলেছেন ভিন্ন কথা। তাঁর মতে, 'বিএনপির মতো একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল আগামী সংসদ নির্বাচনে নিজ দলীয় নেতার জন্য মনোনয়ন চাইতেই পারে। এতে কেউ মনে কষ্ট পেলে আমাদের করার কিছু নেই। ' ছাত্রদল সভাপতির অশোভন মন্তব্য সম্পর্কে ভোলা সদর আসনের এমপি ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ জানান, এটা স্থানীয় বিএনপি নেতাদের রাজনৈতিক স্টান্টবাজি।

তিনি আরো জানান, কারো শিখিয়ে দেওয়া আবোলতাবোল কথা মঞ্চে দাঁড়িয়ে কে কী বলল, তা জাতীয় রাজনীতিতে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.