আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপ্রিয় সত্য

বর্তমান সময়ের যে সমস্ত ছেলে-মেয়েরা বিশেষ করে বিলেতে অবস্থানরত তাহারা ইসলাম সম্পর্কে এক ধরণের অজ্ঞই রয়ে যাচ্ছে। ইসলাম ও মুসলমানিত্ব বলতে এরা বুঝে যে , নামাজ পড়া কলেমা শেখা, আকিকা করা, হালার দ্রব্য ভক্ষণ করা, কারও মৃত্যু হলে জানাজার নামাজ পড়া, মুরব্বি দেখলে সালাম প্রদান করা ও বিয়ের সময় আকদ্ব পড়ানো। ইসলাম যে সম্পূর্ন জীবন বিধান হতে পারে বা রাষ্ট পরিচালনা করতে পারে তা জানতেও মানতে চায় না। সমাজের মুরুব্বিয়ানে ক্বেরামরাও একটি গতানুগতিক নিয়ম পালন করে আসছেন, কেননা তাদের আচার-ব্যবহারও অনেক ক্ষেত্রে বিপরীত ঠেকে। যেমন বড়রা ছোটদের সালাম প্রদান করা মারাত্মক অন্যায় মনে করেন, অথচ বড় কেউ শ্রদ্বেয় ব্যক্তি যদি আগে সালাম দেন তা হলে নিশ্চয় তরুণটি লজ্জা অনুভব করবে এবং আগামীতে আগে শ্রদ্ধা জানাতে চেষ্টা করবে।

আর নিয়ম তো হচ্ছে কোন মুসলমান অপর মুসলমাকে দেখা মাত্র সালাম বিনিময় করা, কারণ সালামের উভয় বাক্যগুলিই প্রায় সমান মর্যাদা ও তাৎপর্য বহন করে। কিন্তু এই সালাম নিয়েও যে কত বিপত্তি হয়। সঠিকভাবে উচ্চারণ না করে কেউ বলে ’স্লামালাকুম’ কেহ কেহ আবার মুখে কিছুই না বলে হাত ইশারা করে। উত্তরের বেলায় সমান অবহেলা হয়। মুখে উচ্চারণ না করে মাথা ঝাকুনি দেয়।

আবার কেহ শুধু আলিকুম বলেন। অনেকে তো এ- সবের ধারই ধারেন না, অথচ এমন সুন্দর বিধান আর কোন ধর্মে ও সমাজে নেই। থাকলেও অর্থে ও মর্মে দারুন অমিল। ছোট ও বড়তে সমানভাবে শ্রদ্ধা জানানো এটি ইসলামেরই একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। যাই হোক বলছিলাম বাচ্চারা অথবা তরুণরা ইসলাম ব্যাপারে সচেতন নয়, কেন সচেতন নয় তার ব্যাপক ব্যাখায় না গিয়ে এতটুকু বলব যে ওদেরকে সঠিকভাবে ধর্ম জ্ঞান দেওয়া হচ্ছে না।

ওদেরকে মা-বাবারা স্বল্প সময়ের জন্য মক্তবে পাঠান শুধু না বুঝে কোরআন খতম করার জন্য। মক্তবের মিয়াছাহেব বেচারা অনেক ছাত্রকে পড়াতে হয়। ওদেরকে বোঝানোর সময়টা ই বা কোথায়? অনেক ছাত্রের ভারে তিনি একদম মামু বনে যান। অনেক তরুণকে বলতে শুনেছি ৩-৪ বার কোরআন খতম করেছি কিন্তু কি পড়েছি বলতে পারছি না। এখন তো ভুলেই গিয়েছি কি ভাবে পড়তে হয়।

অভিবাবকরাও বলেন ইসলামী পরিবেশ নেই যেখানে সেখানে যে ছেলে-মেয়েরা কোরআন খতম করেছে এটাই যথেষ্ট। কিন্তু এই কোরআনুল করিম সঠিকভাবে পাঠ না করায় এবং বুঝে না পড়ায় যে কত ক্ষতি হচ্ছে তা কি আমরা দেখছি। সমাজের অবক্ষয় কেন, যেখানে চরিত্রের নৈতিকতা আজ প্রায় বিলুপ্ত। যুবসমাজ বিভিন্ন কু-কর্মে নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছে। সর্বত্র হতাশা ও হাহাকার, এসব কি পাপের ফসল না সঠিক শিক্ষার অভাব? যেখানে শিক্ষা দেওয়া হবে সেই মক্তবে/ মসজিদেই যদি হানাহানী নেতৃত্বের মহরা ও বিত্ত্বের প্রদর্শনী হয়, সেখানে কি করে উপযুক্ত শিক্ষা পাওয়া যাবে।

মুরুব্বিয়ানে ক্বেরামগণ যদি এসব চিত্র না দেখে থাকেন তা হলে শ্রদ্ধার সাথে বলছি, আপনাদের চক্ষু খুলুন এবং দেখুন। আপনাদের ভবিষ্যত বংশধররা কোথায় যাচ্ছে। সুতরাং অনুরোধ করবো যে ইসলামকে আলেম সমাজের কাছে লীজ দিয়েছেন, তা আপনারা সঠিকভাবে কোরআন পড়ে তার মর্ম অনুধাবণ করুন এবং যোগ্যতা অর্জন করে সেই লীজ ফিরিয়ে আনুন। তখন দেখবেন সমাজ সুন্দর হবে, সন্তান বাধ্য হবে। থাকবে না আর হতাশা, হাহাকার।

একমাত্র কোরআনী শিক্ষাই পারবে সমাজের সুস্থতা ফিরিয়ে আনতে। এসব ব্যাপারে আলেম সমাজ অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে পারেন। বয়স্কদের নিয়ে নিয়মিত মসজিদে মসজিদে তাফসির মাহফিল করে বাস্তব কর্মসূচী প্রদান করে। এতে সমাজের কু-সংস্কার দূর হবে অন্য দিকে শাশ্বত ইসলাম ধর্মেও প্রচার ও প্রসারতা ঘটবে এবং সঠিক শিক্ষা অর্জন সম্ভবপর হবে। (পুরনো লিখা) রচনাকাল -১৯৯৮ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।