আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপ্রিয় সত্য

অনেকে নারীই বলেন পুরুষ শাষিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত, কিন্তু অনেক পুরুষরাও আছে নারীদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছেন। পুরুষেরা পুরুষত্ত্বের লজ্জ্বা ঢাকার জন্য প্রকাশ্যে বলে বেড়ান না, কৌশলের প্রতিশোধ নিচ্ছেন। যা ইদানিং কালের এক ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। নারীরা নির্যাতনের কথা বলতে গিয়েই ইসলাম ধর্মকে টেনে নিয়ে আসেন। ইসলাম ও পুরুষরাই কি-না তাদের স্বাধীনতার প্রধান অন্তরায়।

আমার বুঝে আসে না এসব নির্যাতনের মধ্যে ধর্মের কি সম্পর্ক। এসব ব্যাপারে আমি বলব, নারীরা হয়তো ধর্ম জ্ঞান সম্পর্কে অজ্ঞ, নয়তো ইচ্ছে করেই এসব বলেন। আমি যতটুকু জানতে এবং বুঝতে পেরেছি এ থেকে দেখা যায় পুরুষদের চাইতে ধর্মই নারীকে অধিক অধিকার ও মর্যাদার অধিকারী করেছে। নারীরা তাদের প্রাপ্য পুরুষদের কাছ থেকে আদায় করে না বলেই পুরুষরা তা দেয় না। যেমন ধর্মে আছে পুরুষরা বিয়ে করতে হলে মেয়েকে মোহরানা পরিশোধ করতে হবে।

বাস্তবে কি তা অদৌ আদায় করেন? কাজী দিয়ে লেখানো ৫ লক্ষ ১১ হাজার ১ টাকার মোহরানা ধার্য্য করে আমি ঐ মহিলার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলাম। ইমাম সাহেব কবুল বলার সাথে সাথেই দোয়া করেন এবং তাদের দাম্পত্য জীবনের সফলতার অনেক কল্যাণ কামনা করেন। বস্তুত এই নিয়ম একটি আনুষ্ঠানিকতাই পরিণত হয়ে আছে। বর্তমানে সঠিকভাবে এর প্রয়োগ হচ্ছে না। তারপরে বিয়ে হয়ে গেল এবং বাসর শয্যায় ক্ষমা প্রার্থনার অভিনয় করে স্ত্রী হিসেবে মহিলার কাছ থেকে দাবী ছাড়িয়ে নেন।

এই যে মাফির মাধ্যেমে স্ত্রী নামক মহিলা পরাজিত হন এর কি কোন অর্থ হয়? স্ত্র্রী মোহরানার দাবী ত্যাগ করেন, এই মোহরানাই কি সব যে, স্ত্রী তার সতীত্ব বিলিয়ে দিল- তা কি ত্যাগ নয়? সতীত্ব যে অমূল্য সম্পদ তার কি কোন মূল্য নেই? অথচ ধর্মে কঠোর নির্দেশ আছে নারীকে তার প্রাপ্য মোহরানা মিটিয়ে দাও এবং নারীকে বলেছে, তুমি তা আদায় করে নাও। তুমি কি ক্ষমা করবে, তুমি তো তোমাকেই বিলিয়ে দিচ্ছ, তা হলে কেন মোহরানা নিবে না। কিন্তু বর্তমান সময়ে উল্টোটা হচ্ছে। স্ত্রীকে মোহরানা দেবার পরিবর্তে বিয়ের সময় অযথা যৌতুক গ্রহন করা হয়। যৌতুক ছাড়াও অনেক সময় শ্বশুড় বাড়ী থেকে স্ত্রীকে দিয়ে অনেককিছু আনা হয়।

স্ত্রী যদি আনতে না পারে তা হলে মানসিক চাপসহ চলে আসে শারীরিক নির্যাতন। যদিও বলা হয়ে থাকে যৌতুক প্রথা সমাজের অভিশাপ- বস্তুতঃ কয়েকজন তা মেনে চলেন? উপরন্ত স্ত্রীরা যদি মোহরানা দাবী করে তাহলে এমনিতেই যৌতুক প্রথা বিরূপ্ত হয়ে যাবে বলে বিশ্বাস। আমাদের সমাজে এসব রীতিনীতি সচরাচর চোখে পড়ে না, কিন্তু আরব্য সমাজে ঠিকই মোহরানা আদায় না করে স্ত্রী সম্ভোগ সম্ভব নয়। তার অনেককেই দেখেছি আরব এসে বিদেশে সহজ শর্তে এবং অল্প মূল্যে বিদেশ তথা বাংলাদেশে, ভারত, ইন্ডিয়ায় এসে বিববাহ করে নিয়ে যায়। তাহলে বলব এসব ব্যাপারে সচেতন না হয়ে কেন আমাদের সমাজের নারীরা ধর্মের উপর অপবাদ দেন।

যার কোন ভিত্তি অদৌ নেই। মূলতঃ ধর্মই দিয়েছে নারীদের পূর্ণ স্বাধীনতা, মর্যাদা ও অধিকার। সেই উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানো মানেই নিজেকে অবহেলিত ও দুর্বল ভাবা। নারীরা সহজেই ধরা দেয় বলেই তাদের মূল্য দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। ঘন ঘন বিবাহ বিচ্ছেদ, এসিড নিক্ষেপ, যৌতুক প্রথা এসব কি সস্তার সু-ফল নয়? চুপি চুপি অভিসার ও দেহের অবাদে আদান প্রদান এসবে চাহিদা মেটাতে পারে কিন্তু তৃপ্তি মেটানো যায় না।

তৃপ্তি পাওয়া যায় মনের মিলে। এই মন পেতে হলে কোন না কোন ভাবেই মূল্য দিতে হয়। সেই মূল্যটুকুন যদি নারীরা দিতে না জানে তবে তাদের আজীবনই নির্যাতিত থেকে যেতে হবে। সুতরাং অবাধে স্বাধীনতা অর্জন করে নিজেকে আগে মূল্য দিতে শিখুন, সঠিক মর্যাদায় নিজেকে করুন সমাসীন। তাহাতেই পাবেন কাঙ্ক্ষিত প্রাপ্য মর্যাদা-সফলতা।

(পুরনো প্রকাশিত লিখা থেকে) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।