আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিধুর নিবাস পরিবর্তণ

সিধুর আজ প্রচন্ড জ্বর। শুয়ে আছে বিউটি বোর্ডিং এর দোতলার একটি রুমে। রুমটা মুলতঃ নিশিনাথ বাবুর এখানে কয়েক ঘর পার্মানেন্ট বাসিন্দা বাস করেন। রুম ভাড়া ৪০ টাকা, আর যারা মাস কাবারী থাকেন তাদের জন্যে ৮০০ টাকা। ষাটোর্দ্ধ ব্যাচেলর মানুষ নিশিনাথ বাবু একাই থাকেন আর বোর্ডিং এ ম্যানেজারি করেন।

বাড়তি কিছু আয়ের জন্যে বেচারা রুমটা ভাড়া দিয়ে দেন কাজলের কাছে ৬০০ টাকায়। উনি এখন পাঁচক হরি’র সাথে শেয়ার করে থাকে। রুমগুলো বেশ বড়ো আর ঠান্ডা, অনায়াসে চারটে চৌকি ফেলা যায়। আর এখানে থাকবার ব্যাবস্থাটা করে দেয় কাজল। ওদের একটা প্রেস আছে কাজল প্রেস, শিরিশ দাস লেনে।

কাজলের সাথে পরিচয় পলাশির মোড়ে। সে রাতে সিধু রেকি শেষ করে বাসায় ফিরছে হেটে তখন রাত ৩ টার মতো হবে। পূর্ণিমার ঘোর এখনো কাটেনি তাই কৃষ্ণচুরার ছায়াতলে শহীদ মিনারের চারপাশটা ঘুড়ে মাত্রই পলাশির দিকে হাটা দিলো তখন কথা বলছিলো চাঁদ মামার সাথে................. উদ্ভ্রান্ত যুবক হয়ে এই যে আমি জোৎস্না আবিষ্কার করতে হিংসুটে ঈশ্বরের অভিশাপে হাটি, আর আমার সংগ দেয়া অশোক পেঁচাটি শশ্মানের পাকুর গাছে পোড়ানো আত্মহত্যায় প্রেমিক আর্তনাদে ভয় পেয়ে নিশিডাহুকের অবেদ্য কান্নার হু হু সুরে বিষন্নতার বিষ উগড়ে দিয়ে কয়েকটি অন্ধ জোঁনাককে আমন্ত্রন জানিয়ে যায়, তাল মিলিয়ে বিলাপ করতে, তখন কি আমি শব্দ শিকারী হয়ে অমানিষার অন্ধকারে কামুক হবো কুয়াশার দেহে সঙ্গম লিপ্সায় অমাবশ্যার প্রতীক্ষায় না প্রেমিকার তরে পৌঁছে দিবো এক ফোটা হেমলক সাথে দিয়ে শবদূত? তখন হোচট লাগে কাজলের পা’য়ে...... কে রে বাবা!!! ...... বলেই তাল সামলে দেখে সিগারেটের বন্ধ দোকানের পাশেই পড়ে আছে বেহুশ এক গেলমান....গেলমান শব্দটা ঠিক আছে কি না ভাবতে ভাবতে খুঁজে আনে দাড় করানো টায়ারে জমানো জল। তার ঝাপটা দিতেই মনে হয় শব্দটার আক্ষরিক প্রয়োগ ঠিক আছে কেন না গ্রীক দেবতা হোমারের ইলিয়ডের এ্যাপোলো কিংবা জিউসের পুত্রও লজ্জা পাবে তবে হেফেস্টাস লজ্জা পাবে কি না বলতে পারছি না কিন্তু এটা ঠিক আমি মেয়ে হলে ঠিক তার রক্ষীতা হতেও দ্বিধা করতাম না......তখনই দেবতা নড়েচড়ে ওঠে। অনেক কথা শেষে বুঝতে পারে সে নেশারু মাতাল আর থাকে পুরানো ঢাকায় তাই ভোরের প্রথম রিক্সার অপেক্ষার প্রহর পেড়িয়ে তাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে একটা ঘুম দেয় দারোয়ানের ঘরে.......তারপর সিধুর ঠিকানা হয় এই বোর্ডিং।

এটা কি ঈশ্বরের অভিশাপ না বর তা নিয়ে ভাবতে ভাবতে সে আবার চলে যায় জ্বরের ঘোরের মধ্যে কাথা মুড়ি দিয়ে...... আগের কথা........  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.