আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিধুর অর্থহীন কাজ কর্ম

সিধুর প্রতি দিনকার অভ্যেস ঘুম থেকে উঠেই রাস্তায় নামবে তারপর মোরের দোকান থেকে এক কাপ চা আর একটা সিগ্রেট পান করে পত্রিকার পাতা ওল্টাবে আর হেডিংগুলো পড়বে সেই সাথে চাকুরির বিজ্ঞপ্তির পাতাটাও উল্টিয়ে দেখতে ভুল করে না। ঈশ্বর প্রীতিও আজকাল অনেক কমে যাচ্ছে হয়তো জীবনের অপ্রাপ্তিগুলো এর দায়। তবু ভালো যে তার আক্ষেপজ্বালা অন্যান্য সাধারন মানুষের চাইতে অনেক কম। একদিন দেরীতে উঠবার কারনে সোজা চলে গেলো নাস্তা সারতে, গতকাল রাতে ঘুম হয়নি ভালো আর খাদ্যহীন ঘুমের জঠর জ্বালা ভুলে থাকতেই ভোর এসে ডেকে বললো চলো খাবে। হোটেলে নাস্তা সারছিলো, চার জনার টেবিল ও একাই বসে ছিলো।

দু'জন লোক এসে বিনীত ভাবে বসবার অনুমোদন চাইতেই ও বলে ওঠে... ---আরে বসুন আমার কোন আপত্তি নাই --না আসলে অন্যান্য কোন টেবিলে খালি নেইতো তাই। ---আরে না ভাই বসুন, আমার বিল দিতে হবে না। এইরকম তেলতেলে কথা শুনে লোক দু'জনও হাফ ছেড়ে বাঁচে। এক কথা দু'কথার পর আড্ডা জমে ওঠে। তারাও ব্যাচেলর কিন্তু কিন্তু বিণা পুঁজিতে ব্যাবসা করে সন্ধ্যার পর।

একজনের নাম টাইগার বাবু, আরেকজন ধলা বাবু। এরই মধ্যে কয়েক কাপ চা আর সিগ্রেট শ্যাষ করে সিধু উঠে আসবার উপক্রম করতেই তারা শুধায় আপনি কোথায় থাকেন। এই কথা ক্যাশিয়ার কাম মালিক সিরাজ মিয়ার কানে যেতেই সে বলে উঠে "এই ব্যাটা পাগল, খায় দায় আর ঘুইর‌্যা বেড়ায়, এই হানেই থাহে"। তারা আর অন্যান্য কাস্টমারেরা চোখ ঘুড়িয়ে তাকায়, সিধু ধলা বাবুকে চিনতো যাকে বলে মুখ চেনা এই রকম আর কি। হঠাৎ সিধু গলাটা নামিয়ে বাবুর কানে কানে বললো আজ ধানমন্ডি ২৭ নাম্বারের দিকে যাবেন না।

বাবুর মুখটা মুহুর্তেই রক্ত শূন্য হয়, ফ্যালফ্যাল করে সিধুর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে....অজান্তেই মুখ ফুটে বেরিয়ে আসে....... আপনি কি করে জানলেন? সিধু উত্তর না দিয়ে হনহন করে বেরিয়ে আসে হোটেল থেকে। পিছনে ফেলে আসে দু'জোড়া আতঙ্কিত দৃস্টি। সূর্য মামার আইজকা ম্যালা তেজ, বিয়ান বেলাই চরচর করতাসে বিরবির করতে করতে সিধু হাটতে থাকে শংকরের দিকে। বাংলাদেশ মেডিক্যালের নিচে একটা লোক অপেক্ষায় আছে ওনার ছোটবোন অসুস্থ কিডনি সমস্যা। টাকা পয়সা বেশ ভালোই আছে এসছেন রাজশাহী থেকে।

এখন ওনাকে নিয়ে ছুটতে হবে পুরান ঢাকায়, গেন্ডারিয়া সেখানে থাকেন ক্যাপ্টেন ডঃ আনিস ওয়াইজ, সিএমএইচের ডাঃ, উনি লোক হিসেবে অমায়িক, ওনাকে ধরে একটা কিডনির ব্যাবস্থা করতেই হবে। ওনার একটা মেয়ে আছে অসম্ভব রূপবতী ডাক্তারী পড়াশুনা করছে লন্ডনে, আজ ওনার মেয়ের জ্বর এবং বেশ ভাল রকমেই অসুস্থ। অণিমার সত্যি জ্বর ছিলো, তা ডাক্তার সাহেবকে জানাতেই উনি বিচলিত হোন, পাশের ঘরে চলে যান এবং ফোন করে শিওর হোন। তারপর ফিরে এসে সিধুর দিকে তাকিয়ে থাকেন অদ্ভুত এক ঘোড় লাগা চোখে এবং তারিখ দিয়ে দ্যান তিন দিন পরের। এ কয়দিন সিধুও সাথেই ছিলো, হাসপাতালের বারান্দায় বসে।

অপারেশন শ্যাষে লোকটি চলে গিয়েছিল আপন গন্তব্যে সাথে সিধু, ঘুড়ে আসবার নিমন্ত্রন হাত ছাড়া মন সায় দেয়নি কয়েকদিন খাবারের ঝামেলা থেকে রেহাই যাওয়া যাবে এই ভেবে। কিন্তু বাবু ঐ দিকে সিধুকে খুঁজে ফিরছে পাগলের মতো। কেন না সেই দিনই বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের বাড়িতে গ্রেনেড হামলা করা হয় কিন্তু তা বিস্ফোরিত হয়নি আর পুলিশের গুলিতে মারা যায় বাবুদেরই সাঙ্গ পাপলু, ধানমন্ডি লেকে, পাপলু সাতার জানতো না তাই পালিয়ে যেতে পারেনি।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.