আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ট্রাফিক সিগন্যাল

আমি আমার দেশকে ভালবাসি। দেশের জন্য কাজ করতে চাই। লিখতে চাই মানুষ ও মানবতার জন্য। মিসেস সুমিকে বেশ উৎফুল্ল মনে হচ্ছে। মার্কেটে যাচ্ছেন।

দু’দিন আগে একটি নতুন ডিজাইনের শাড়ী দেখে গেছেন। কিন্তু তখন কিনতে পারেননি। কেনার মত টাকা কাছে ছিল না। আজ কিনতে এসেছেন। গাড়ীতে রবীন্দ্র সংগীত বাজছে।

খুব মনযোগের সাথে গান শুনছেন। যেন সুরের রাজ্যে হারিয়ে গেছেন। গাড়ীটি ট্রাফিক সিগন্যালে দাড়িয়ে আছে। মিসেস সুমি সুরের রাজ্যে ভেসে বেড়াচ্ছেন। হঠাৎ প্রচন্ড ধাক্কায় কেঁপে উঠল গাড়ীটি।

ড্রাইভার পিছনে তাকিয়ে রাগন্বিত মুখে নামলেন। একটি রিক্সা পিছন থেকে গাড়ীটিকে ধাক্কা দিয়েছে। গিয়ে রিক্সাওয়ালার সার্টের কলার ধরে চড় থাপ্পর দিতে লাগল। “শুয়ারের বাচ্চা! চক্ষু হাতে লইয়া গাড়ী চালাস। খাড়া মজা দেখাইতাছি।

” বলে বিক্সার সিট তুলে নিয়ে গাড়ীর দরজা- গ্লাস বন্ধ করে বসল। রিক্সাওয়ালা ব্যথিত মুখে সিট ফেরত পাওয়ার জন্য অনুনয় বিনয় করতে লাগল। মিসেস সুমি প্রচন্ড বিরক্ত মাখা চোখে ঘটনা গুলো লক্ষ্য করে আবার গানে মনযোগ দিতে চেষ্টা করলেন। হেলাল সাহেব এতক্ষন রিক্সায় বসে ঘটে যাওয়া দৃশ্যগুলো অবাক নয়নে দেখলেন। রিক্সা থেকে নেমে এসে গাড়ীর গ্লাসে নক করলেন।

ড্রাইভার বিরক্ত মাখা মুখে গ্লাস নামালেন। “আসসালামুআলাইকুম। ওস্তাদ ভাল আছেন। ” হাসি মুখে হেলাল সাহেব বললেন । “কি হইছে।

” ড্রাইভার বিরক্ত মাখা মুখে বলল। “ওস্তাদ রিক্সাওয়ালা কি আপনার এলাকায় থাকে? আপনার প্রতিবেশী?”হেলাল সাহেব বললেন । “না। ” ড্রাইভার বলল। “আপনার সাথে কি ওর কোন শত্র“তা আছে?” হাসি মুখে বললেন হেলাল সাহেব।

“না। ” ড্রাইভার অবাক হয়ে বলল। “আপনার প্রতিবেশী না। “আপনার সাথে কোন শত্র“তাও নাই। প্রতিবেশী হইলে বুঝতাম ইয়ার্কি কইরা ধাক্কা দিছে।

আর শত্র“ হইলে বুঝতাম হিংসা করছে। আসলে এইটা একটা এক্সিডেন্ট। গরীব মানুষ বেচারর সিটটা দিয়া দেন। ” হেলাল সাহেব বললেন । “না।

ভবিষ্যতে যেন এই কাম না করে এর জন্য এইডা ওর শাস্তি। ” ড্রাইভার কঠর কন্ঠে বলল। “দেখেন আপনি যদি ওর সিটা না দেন তাইলে ওর একদিনের কামাই নষ্ট হইব। না খাইয়া থাকতে হইব। আমি আপনার ক্ষতি পুরনের টাকা দিয়া দিতাছি।

” বলে ব্যাগ থেকে টাকা বের করতে গেল। “টাকা দরকার নাই। ড্রাইভার সিটটা ফেরত দাও। ” মিসেস সুমি বলল। ড্রাইভার সিট ফেরত দিল।

হাসি মুখে চলে গেল রিক্সাওয়ালা। হেলাল সাহেব ধন্যবাদ জানালেন মিস সুমিকে। ট্রাফিক সিগন্যাল উঠে গেছে। সবাই নিজ নিজ গন্তব্যে ছুটছে ব্যাস্ত শহরের রাস্তায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।