আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অর্থনৈতিক মুক্তি ২য় পর্ব

সার্বভৌম ক্ষমতা তথা সোসিও-পলিটিকাল ক্ষমতা এবং সোসিও-ইকোনমিক ক্ষমতা বিন্যাসের উপর নির্ভর করে মানব সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। উক্ত ক্ষমতা যখন একক ( প্রভু, রাজা, বাদশাহ, একনায়ক); শ্রেণী ( সামন্ত, যাজক, অভিজাত); রাষ্ট্রীয় প্রভাবশালী ( সম্পদশালী, ধনিক বণিক ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, আমলা, সশস্ত্র বাহিনী) ইত্যাদি গণবিরোধীদের কাছে কুক্ষিগত হয়; তখন সমাজে ও রাষ্ট্রে শাসন শোষোণ কায়েম হয়। মানব সমাজে সোসিও-পলিটিকাল এবং সোসিও ইকোনমিক ক্ষমতার পর্যায়গুলো নিম্নরূপঃ-- ১। সোসও-পলিটিকালঃ- দলবদ্ধ-- গোষ্ঠীতান্ত্রিক-- গোত্রতান্ত্রিক-- প্রভুতান্ত্রিক ও দাস-- রাজতান্ত্রিক ও সামন্তবাদী-- বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক-- রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সমাজতান্ত্রিক-- জনগণের অংশগ্রহন মূলক গণতান্ত্রিক ( যা আজও প্রতিষ্ঠিত হয় নাই)। ২।

সোসিও-ইকোনমিকঃ-- আদিম সংগ্রহকারী ও শিকারি-- গোত্রীয় যৌথমালিকানা--- প্রভুবাদী মালিকানা ও দাস ব্যবস্থা -- সামন্তবাদী ও ভূমিদাস-- বুর্যোয়া পুজিবাদী--- রাষ্ট্রীয় মালিকানা ও সমাজতান্ত্রিক--- জনগণের মালিকানা ও স্বাধীন শ্রমজীবি( যা আজও প্রতিষ্ঠার অপেক্ষায়)। বিভিন্ন সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সার্বভৌমত্বের( সোসিও-পলিটিকাল এবং সোসিও-ইকোনমিক ক্ষমতার) মালিকানা নিম্নভাবে উল্লেখ করা যায়ঃ-- ১। আদিম দলবদ্ধঃ- যে সমাজে সার্বভৌম ক্ষমতা দলপতির দখলে ছিল। খাদ্যগ্রহন ও যৌনসংগীর উপর দখল প্রতিষ্ঠার ন্যায় তাতক্ষণিক মালিকানা ছিল। দলবদ্ধ সমাজে বর্তমান সমাজের ন্যায় শোষণ ছিল না ; তবে দুর্বলদের বঞ্চনা ছিল।

২। আদিম গোষ্ঠীতন্ত্রঃ-- একই দলে জন্মগ্রহনকারী এবং একত্রে জীবনধারণকারী নিয়ে গঠিত গোষ্ঠীর ক্ষমতার অধিকারি ছিল গোষ্ঠীপতি। শিকারী সমাজে শিকারের হাতিয়ারের মালিকানা সৃষ্টি হয়। ৩। আদিম গোত্রতন্ত্রঃ-- পশুপালন ও শস্য উতপাদনের মাধ্যমে খাদ্য সংগ্রহ থেকে খাদ্য উতপাদনকারী সমাজের উতপত্তি হয় এবং এটা ছিল বর্বর যুগ।

এ সময় পশুপাল, চারণ ভূমি, ফসলের জমি এবং কুটীর শিল্প দ্রব্যের মালিকানা সৃষ্টি হয়। গোত্র প্রধান ছিল সকল ক্ষমতার মালিক। ৪। প্রভু তন্ত্রঃ-- উচ্চবর্বর ও প্রাচীন সভ্যতার যুগে যুদ্ধবিগ্রহ, লুন্ঠন, দখল ইত্যাদির মাধ্যমে বিশাল সম্পদশালী ও মহাপরক্রমশালীদের উত্থান হয়। তারা নিজদেরকে সর্বময় ক্ষমতাবান প্রভু হিসেবে ঘোষণা করে।

পরাজিত ও তাদের অধীনস্থদের তারা দাসরূপে ব্যবহার করত। ৫। অভিজাততন্ত্রঃ-- গ্রীসের নগর রাষ্ট্র, প্রাচীন রোম ও ভারতে সর্বময় ক্ষমতা ছিল অভিজাতদের দখলে। গ্রীসে ও রোমে দাসদের ভোটাধিকার ছিল না। প্রাচীন ভারতে শাসক ছিল ব্রাম্মণ ও ক্ষত্রিয়রা।

৬। ধর্মতন্ত্রঃ-- দাস ও অভিজাত সমাজে প্রভুদের অত্যাচার নিপীড়নের থেকে মুক্তি পেতে দেবদেবী ও সৃষ্টিকর্তা মহাপ্রভুর দর্শন ব্যবহার করা হয়। ধর্মের প্রচারক ও যাজকগণ মানুষের প্রভুত্বের অস্বীকার করে সৃষ্টিকর্তা প্রভুর সার্বভৌমত্ব প্রচার করেন। ৭। রাজতন্ত্রঃ-- ধর্মের বিধান কিছুটা মেনে পরবর্তীতে সমাজে রাজা বাদশাহদের উত্থান হয়।

তারাও সমাজের ক্ষমতা ও সম্পদের মালিকানার অধিকারী হয়। সামন্তবাদী ও রাজতান্ত্রিক সমাজে শাসন শোষণ চরমে পৌছায়। এর থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ফরসী বিপ্লব সংঘটিত হয়। যার ফলে রাজা, অভিজাত ও যাজক শ্রেণীর বাইরে সাধারণ মানুষের সম্পত্তির মালিকানা ও রাষ্ট্র ক্ষমতার অধিকার স্বীকৃত হয় এবং বুর্জোয়া গণতন্ত্রের উতপত্তি হয়। ৮।

সমাজতন্ত্রঃ-- কৃষক, শ্রমিক ও শ্রমজীবি মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব হয়। সমাজতান্ত্রিক দর্শনে সম্পদ, উতপাদনের উপায় সমূহের মালিকানা রাষ্ট্রের অধিকারে ঘোষিত হয়। একদলীয় ব্যবস্থসায় মানুষের মত প্রকাশের অধিকার চলে যায়। ৯। জনগণের অংশগ্রহন মূলক গণতন্ত্রঃ--যে ব্যবস্থায় সার্বভৌম ক্ষমতা ও সার্বভৌম মালিকানা জনগণের অধিকারে প্রতিষ্ঠিত হবে।

জনগণ শুধু ভোটদান নয়; বরং রাষ্ট্র পরিচালনার সর্বক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্ব করবে এবং স্বেচ্ছায় স্বাধীনভাবে নিজ মালিকানায় অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ গ্রহন করতে পারবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।