আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মায়ের চোখে পানি, মুখে হাসি

জোবেদা বেগমের চোখ বেয়ে ঝরছে পানি, মুখ বেয়ে নামছে হাসি। যাঁর খোঁজে, যাঁকে না পেয়ে পাগল হয়ে এত দিন এদিক-ওদিক ঘুরে বেরিয়েছেন, আজ তিনি ফিরে এসেছেন মায়ের বুকে। তাঁর আদরের মেয়ে রেশমা ১৭ দিনের মাথায় জীবিত উদ্ধার হয়েছেন রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে।
জোবেদার সঙ্গে আনন্দে মেতেছে পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও পরিচিত সবাই। রেশমাকে উদ্ধার করে যখন সাভারের সিএমএইচ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন হাসপাতালের সামনে যেন প্রাণের জয়ধ্বনি চলছে।

স্বজনদের কেউ ক্ষণে ক্ষণে আকাশের দিকে তাকিয়ে মোনাজাত করছেন, একে অপরকে জড়িয়ে ধরছেন, আবার কেউ আবেগে-আনন্দে কথাই বলতে পারছিলেন না। হতদরিদ্র পরিবারটির জন্য এ যেন এক অলৌকিক পাওয়া।
সাভারের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়ার পর রেশমাকে রাখা হয় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। রেশমার মা তখন মোনাজাত ধরে বললেন, ‘আল্লাহ, তোমার কাছে আমার আর কিছুই চাওয়ার নাই। ’ জোবেদা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এত দিন স্কুল-হাসপাতালে পাগলের মতো আমার মাইয়ারে খুঁজছি।

পাই নাই। আল্লাহ আমার মাইয়ারে বাঁচাইয়া রাখছে। ’ কথা বলতে বলতেই আবেগে আটকে যাচ্ছিলেন ভাই জাহিদুল ইসলাম। বললেন, দুর্ঘটনার পর প্রতিদিন রানা প্লাজা, অধরচন্দ্র স্কুল, হাসপাতাল—এমন কোনো জায়গা নেই রেশমার লাশ খুঁজে বেড়াননি তাঁরা। রেশমাকে জীবিত পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন তাঁরা, হাড়গোড়ের অপেক্ষায় ছিলেন।


রেশমা সাভারের নামাবাজার এলাকায় এক বাসায় থাকতেন। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগে ওই বাসার মালিক হাজেরা বেগমকে ফোন করেছিলেন তিনি। এর পর থেকে মুঠোফোন বন্ধ। রেশমাকে উদ্ধারের সংবাদ শুনে সেই হাজেরাও ছুটে এসেছেন হাসপাতালে। কী বলবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না।

শুধু বললেন, ‘এটা যে কত বড় পাওয়া, তা বইলা বুঝাইতে পারুম না। ’
সিএমএইচের উপসহকারী পরিচালক মেজর ফখরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ রেশমাকে অনেক ভালো রেখেছেন। তিনি আশঙ্কামুক্ত। তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। ’
চিকিৎসকেরা জানান, আইসিইউতে রেশমার সামনে তাঁর স্বজনদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

তিনি মা, ভাই-বোনসহ সবাইকে চিনতে পারছেন। শুধু বলছেন, খিদে লেগেছে। ভাত খেতে চান। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.