আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাজার সমাচার------- (৪) একটি মাজার গড়ে ওঠার কাহিনী



প্রথমেই বলে রাখি লেখাটি অগোছালো হয়েছে সময়ের অভাবে। আমার সাথে যারা মাজারের পূর্ববর্তী ৩টি পর্বে ছিলেন তাদের আর মাজার সম্পর্কে নতুন করে বলবার কিছু নাই। দ্বিতীয়ত পর্বটি বেশ বড় সড় তারপরেও কেও পড়তে চাইলে দেখেনিতে পারেন পেছনের ব্লগগুলি। আজ আপনাদের সামনে একটি মাজার গড়ে ওটার ইতিহাস তুলে ধরব। পাগলা বাবার মাজারঃস্থান_________ দুঃখিত এমনিতেই ঝাড়ির উপরে আছি মাজার নিয়ে তারপর যদি ঠিকানা দেই ভক্তবৃন্দ আমার শির কর্তন করতে পারেন, তাই মাফ চাই সাথে দোয়াও চাই।

আমি যখন একেবারেই ছোট তখন আমাদের এলাকাতে একজন মানুষিক প্রতিবন্ধী ছিলেন। উনার পুরা ফ্যামিলি ভন্ড মারুফতী বা মারুফতের নামে ভন্ডামিতে লিপ্ত সেই কবে থেকে কেও বলতে পারবে না। তো ঐ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিটির ২ছেলে ও ২ মেয়ে রেখে গত হয়েছন যখন আমি ছোট তখনই। পাশ্ববর্তী এলাকার লোকজনের কাছে জানা যায় উনি মানুষিক প্রতিবন্ধী ছিলেন। উনাকে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করেও ভাল করা সম্ভব হয়নি।

আর পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকার ফলে চিকিৎসাও করাতে পারেনি। যা করিয়েছি তা যৎসামান্য আর কবিরাজী। যা হোক বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছিল- লোকমুখে শোনা যায় যে চারিত্রিক সমস্যার কারনে স্বামী তাড়িয়ে দিয়েছিল ১ ছেলে সমতে। তার পর এলাকার এক ইন্ড্রাজটিয়ালিজ এর ৩ছেলের ২টাকে প্রায়ই যাতায়ত করতে দেখেছে ঐ বাড়ীতে যা মিথ্যে হওয়ার কোন সম্ভবনা নাই। আর্থিক দৈনতার কারনে ছোট মেয়েটিকে দিয়েও মাঝে মধ্যে বিশেষ মাহফিল করে আর্থিক দৈনতা মেটাতেন মর্মে শোনা যায়।

প্রসঙ্গত বলে রাখি- আমাদের নতুন বাড়ী এটা, আমার জন্ম আমার দাদার বাড়ীতে কিন্তু আমি বড় হয়েছে আমার বাবার আলাদা বাড়ীতে। আমার বাবা তার ছেলে মেয়েদের জন্য পৈতৃক বাড়ী রেখে নিজে বাড়ী করেন এই মর্মে যে- আমাকে আমার বাবা বাড়ী দিয়েছে- আমাকেও তো আমার ছেলে মেয়েদের আলাদা বাড়ী করে দিতে হবে। আমরা এলাকায় নতুন এবং আমার বাবা অত্যন্ত উগ্র মেজাজী হওয়ার কারনে আমাদের সাথে এলাকার অনেকেই কথা বলতেন না ভয়ে। তো প্রতিবন্ধী লোকটির বড় ছেলে কাজ করতেন আমাদের বাসায় (গ্রামের বাড়ীতে আগের দিনে বাধা লোক থাকত গরুর যত্ন নেয়া সহ ক্ষেতে খামারের কাজ দেখাশুনা করার জন্য)। তো আমার বাবার অত্যন্ত কঠোর মনোভব এবং তাদের পারিবারিক হিস্টোরী শোনার পর আর রাখেন নাই বেশী দিন, মিটিয়ে দিয়েছিলেন আরো বড় যে কারনটি ছিল তা হল বাংলাদেশেরে বড় একটি দলের দলীয় লোকজনের চামচা ছিল যার ফলে কোন কথা কেয়ার করত না।

বড় ছেলে সেই দলীয় অফিসের পিয়নের কাজ করতেন আর ছোট ছেলে মায়ের সাথে ভিক্ষা করতেন। এভাবে ছোট ছেলেটি প্রাইমারী স্কুলও পাশ দিয়েছিল। যাতায়াত করত বিভিন্ন মাজারে। এইভাবে চলতে চলতে একসময় এলাকাতে ছড়াতে লাগলেন যে- উনার বাবা আদ্ধাতিক কামেল ছিল; উনি ঐশ্বরিক পাগল ছিলেন, উনি পাগলামির নামে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। উনার মৃত্যু বার্ষিকিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে চাঁদা তুলে ইসলামী জলসা, মারুফতী গান/বাজনা'র আয়োজন করে টাকা কামাতে লাগলেন আর ভেতরে ভেতরে (তারি নামক) মাদকদ্রব্যাদির কারবর করতেন।

এভাবেই চলছিল ১৯৯৬ পর্যন্ত। সাধারণত গ্রাম্য এলাকার লোকজন খারাপ লোকের সাথে মেশে না এবং যেহেতু দলীয় লোকদের আড্ডাখানায় পরিনত হয়েছিল বাড়ীটি তাই কেও ঘাটত না একপ্রকার নিজেদের সেইভ রাখার জন্য। ১৯৯৬এ ক্ষমতা আসলেন বাআল, আর তাদের সাথে লিয়াজো করে গাজার আসর সহ বিভিন্ন আসর বসিয়ে পাগল বাবাকে হাইলাইট করে গড়ে তুললেন মাজার। সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতাও পেয়েছেন এই মাজারের নামে। এখন অনেকেই বিশিষ্ট পাগলা বাবার মাজার নামে চিনেন, এলাকার লোক ছাড়া।

পাগল ব্যক্তিটির ছোট ছেলে বিভিন্ন সময় নারী কেলেংকরীর কারনে পুলিশে ধরা খেয়েছেন বেশ কয়েক বার, আর র্যার ধরে সারাদিন বাসস্ট্যান্ড- এ বেধে রেখেছিলেন গায়ে ভন্ড পির সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে। যিনি মাজারের স্ব-নির্বাচিত খাদেম। এটি একটি মাজার গড়ে ওঠার সাধারণ ঘটনা, আমরা যারা জানি তারা তো এটার ধারে কাছেও যাব না কিন্তু আগামী প্রজন্ম বা দুরদুরান্তের যে সকল লোকজন জানেন না তারা ধরে নেন কতই না কামেল ছিলেন পাগলা বাবা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.