আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খোলা আকাশ, হাড় কাঁপানো শীত তবুও থেমে নেই...



পরনে নেই শীতের বসন। ছিন্নমূল তাদের বাসস্থান। দু’বেলা যেখানে খাবার জুটে না সেখানে শিার আলো পাওয়া তাদের কাছে অলীক স্বপ্ন। তবুও তারা ভাসতে চায় জ্ঞানের স্রোতে। শীতের কনকনে কামড় উপাে করে তবুও তারা ঠাঁই খুঁজে জ্ঞানালোকের আস্তানায়।

উপরে খোলা আকাশ আর হাড় কাঁপানো শীত, তবুও দমাতে পারে না তাদের। ুদে ুদে শিশুরা শিখবেই, জানবেই আর জয় করবেই (কনকনে কুয়াশা আবৃত খোলা আকাশ আর জ্ঞানের সমুদ্র )। চোখে তাদের মৌলিক চাহিদা পূরনের স্বপ্ন , বুকে রয়েছে বিশ্বাস ; আর এভাবেই প্রতিনিয়ত জ্ঞানের অন্বেষণে ছুটছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কিনের স্কুলে অধ্যরনরত সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা। নেই কাস রুম, আছে শত প্রতিবন্ধকতা তবুও থেমে নেই তাদের শিা কার্যক্রম। জানা গেছে, শুধুমাত্র পড়াশোনা,পরীা আর ডিগ্রী অর্জন এই গতানুগতিক ধারায় আবদ্ধ থাকতে চায় নি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কিনের সদস্যরা।

উচ্চ শিার পাশাপাশি সুকোমল মনটা অনেক উচুঁতে নিয়ে যেতে ওরা কুন্ঠাবোধ করে নি। মনের মাঝে সেবার ব্রত গেঁথে নিয়ে নিরলসভাবে স্বার্থহীন মানসিকতায় এগিয়ে চলছে তারা। সেই মানসিকতার স্বপ্নকে লালন করে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিার ব্যবস্থা করছে এই সংগঠনটি। ‘চেনা হোক প্রতি মুখ শিার আয়নায়’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে এবং ‘আলোকিত জাতি গঠনের ল্েয’ সমাজের সুবিধা বঞ্চিত ও শিার আলো থেকে বঞ্চিত শিশুদের জন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘কিন’ ২০০৪ সালের ২৬ মার্চ চালু করে একটি স্কুল। প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয় ছুটির পর বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ।

প্রায় ১১০ জন শিশু বর্তমানে এই স্কুলে পড়ালেখা করছে। ৭ বছর ধরে চালু হওয়া এই স্কুলে গত দেড় মাস ধরে বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে কিনের সদস্যরা। এর আগে তাদের জন্য নির্দিষ্ট ক বরাদ্দ দিলেও এখন ওইসব সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কোন ক বরাদ্দ নেই। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে খোলা আকাশের মধ্যেই বিকেলের শীত আর মশার কামড় উপো করেই চলছে পাঠদান কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প থেকে বারবার আশ্বাস এবং পরবর্তীতে স্কুলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প থেকে নিদিষ্ট জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত তা অন্ধকারেই রয়েছে।

আলোর মুখ দেখেনি। সূত্র জানায়, কাস রুমের এ সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিকদের অবহিত করা হলেও তারা বলেন, আপাতত কিছু করার নেই এবং এর সমাধানে আরো ৫-৬ মাস সময় লাগতে পারে। তবে কিনের সদস্যদের দাবি, সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশুদের জন্য একটা ক বরাদ্দ দিলে প্রশাসনের সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তারা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিকদের নিয়মিত চাঁদা দিয়ে স্কুলটি পরিচালিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও শিকরা এই স্কুলে নিয়মিত কাস নেন।

স্কুলের ছেলে মেয়েদের বই খাতা পেন্সিল সবই দেওয়া হয় বিনা মুল্যে। সুবিধা বঞ্চিত এসব ছেলে মেয়েদের যতদূর সুবিধা দেওয়া যায় তারা তা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। পড়ালেখা করে হয়ত এরা একদিন বড় কিছু করবে। কিন্তু তার আগে নুন্যতম সুবিধা তো দিতে হবে । সেই সুবিধা দেওয়ার ল্েযই স্কুলটি পরিচালিত হচ্ছে।

তাই অবহেলিত এইসব শিশুদের কথা চিন্তা ভাবনা করে তাদের পাঠদান কার্যক্রমে গতি ফিরিয়ে আনতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিগগিরই একটি করে বরাদ্দ দিবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কিন সদস্যরা। কিনের সাধারন সম্পাদক তানজীদ হাসান বলেন, অনেক আগ্রহ নিয়ে আর কষ্ট করে ছোট ছোট বাচ্চারা এখানে পড়তে আসে। গত দেড় মাস ধরে তাদের জন্য নির্দিষ্ট ক না থাকলেও শীতের তীব্রতা আর মশার কামড় উপাে করেই পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছি। শিকদের কাছে বারবার করে দাবি জানানো হলেও তাদের সহানুভূতি পাওয়া যাচ্ছে না। তবে শিগগিরই প্রশাসন একটি করে বরাদ্দ দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।