পতাকায় ফালগুন মানচিত্রে বসন্ত
আমি শৈশবে যে নদীতে সাঁতার কাটতাম-
সেটি মরে গেছে-তাকে আমি ফেরত চাই।
শৈশবের সেই জামগাছ- যার ডালে চড়ে
দুপুর কাটিয়েছি-সেটির মৃত্যু হয়েছে
রাজনৈতিক কুড়ালের আঘাতে-
তাকে আমি ফেরত চাই।
সারিসারি সুপারি আর নারিকেল গাছেঘেরা-
গ্রামের পথে হেটেছি কৈশোরের দুরন্ত দুপুরে-
তাদের কংকাল ভেদ করে গড়ে উঠেছে
মন্ত্রকদের প্রমোদ কানন-
তাকে আমি ফেরত চাই।
ভোরে যে পাখিরা আমার ঘুম ভাঙাতো,
যে ফড়িংয়ের পিছে ছুটে পার হয়েছে প্রিয় বিকেলগুলো-
আজ আর তারা নেই- সবুজ বিরাণে-
আমি ফেরত চাই, ফেরত চাই সেই পাখিময় শৈশব।
আমার সে বৃষ্টি কোথায়?
খুকুর পায়ের নূপুরের শব্দের মতো বৃষ্টি!
কোথায় সে মেঘের গুরুগুরু?
প্রিয় সঙ্গীতের মতো বেজে উঠতো
প্রতিটি আষাঢ় শ্রাবণে-
তাকে আমি ফেরত চাই।
কোথায় সেই চিতইপিঠা?
নতুন রসে ভিজে ভালোবাসার মতো-
এলানো শরীর তার!
শীতের উঠোনে বসে আঙুল কামড়ে
শেষ স্বাদ পাবার আনন্দ।
সূর্যের ঠোঁটে পিট আগলে দুষ্টচোখে
রাহেলার চোখে নিষ্পাপ চাওয়া-
কোথায় হারালো লাউয়ের ডোগা থেকে
ফোটায় ফোটায় শিশিরের ঝরেপরা-
আমি তাকে ফেরত চাই।
আমার বাহান্ন, আমার একাত্তর-
চুরি হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন।
যারা যুদ্ধ থেকে ফেরেনি তাদের শোকার্ত স্বদেশ,
যারা ফিরেছে তাদের স্বপ্নের স্বদেশ-
ক্ষত-বিক্ষত সারাক্ষণ-
তার জন্য তোমরা কী ফেরত চাইবে?
কী ফেরত চাইবে তুমি?
ক্যান্টোমেন্টের নিঃছিদ্র নিরাপত্তার আবাস
নাকি গণভবনের গণ-জাগরণ?
নাকি ফিরে যাবে- একাত্তরে?
কেমন ছিলো আমাদের পাথেয়-নেতাদের
সম্পদের খেরোখাতা? তুমি কি দেখছো?
একটি বাড়িস্থ কান্না? স্মৃতির আঁকর? হায় কান্না!
সে কি সম্পাদিত চোখ থেকে প্রকাশিত জলবার্তা!
ধীরে বহ! ধীরে বহ লোভ!
এইসব অষ্টযন্ত্র স্বদেশে এখন বিকল।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।