আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইউরোপের মেয়ে বনাম বাংলাদেশের মেয়ে (কিছুটা আঠারো প্লাস)

যেথায় পড়শী বসত করে, আমি একদিন ও না দেখিলাম তারে।

বিঃদ্রঃ সিরিয়াস টাইপের মানুষদের এই পোস্ট, না পড়লেই ভাল। আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে সুন্দরতম কি? এটার এক কথায় উত্তর হচ্ছে, মানুষ প্রজাতি। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, মেয়ে-মানুষ প্রজাতি। (একটু সম্মান করে বললে বলতে হয়, 'নারী' প্রজাতি--------না হলে আবার নারীবাদিরা ঝাঁপিয়ে পড়াতে পারেন)।

বিধাতা কি যে দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে, যে পুরো পৃথিবীই তাদের জন্য ফিদা। হোক সে পরাক্রমশালী সম্রাট, তেজী যোদ্ধা, সাহসী বীরপুরুষ অথবা ছাপোষা কেরানী। কবি লিখেছেন 'রাজা করিয়াছে রাজ্য শাসন রাজারে শাসায় রাণী' যাই হোক। আসল কথায় আসি। একটা স্কলারশিপ নিয়ে ইউরোপে এসেছিলাম পড়াশুনা করতে।

কয়েক মাসের ছুটাছুটি, লেখালেখি শেষে, একদিন সত্যি সত্যি পেয়ে গেলাম ইউরোপের টিকেট। হাতে সময় খুব কম। সপ্তাহ খানিকের ভেতরেই কোনমতে গুছিয়ে প্লেনে চড়ে বসলাম। প্লেন, ফ্রাঙ্কফুর্টের বন্দর স্পর্শ করল। ইমিগ্রেশন, তেমন কোন ঝামেলা ছাড়াই পার হয়ে গেলাম।

শুরু হলো ইউরোপীয় জীবন সংগ্রাম। এই সংগ্রামের মাঝেই যে জিনিষ টা চোখে, সবচেয়ে বেশী করে ধরা পড়ল, তা হলো দেশের এবং ইউরোপের মেয়েদের মধ্যেকার পার্থক্য। সেই পর্যবেক্ষণের কথাই আজ বলার চেষ্টা করব। প্রথমেই বলব সৌন্দর্য্যের কথা। সৌন্দর্য্যঃ সৌন্দর্য্যের কোন সংগা নেই।

শ্রাবনের মেঘে ঢাকা আকাশ যেমন সুন্দর, শরতের ঝকঝকে আকাশ ও অসাধারণ। আমার কাছে মানুষের সৌন্দর্য্য ব্যাপার টা অনেককিছুর সমন্বিত একটা গূণ। যার কিছু আসে উত্তরাধিকার সূত্রে, আর বাকিটা অর্জন করতে হয়। উত্তরাধিকার সুত্রে প্রাপ্তঃ ইউরোপের গড় মেয়েরাই, যেন ডানা কাটা পরী। একটার থেকে আর একটা বেশী সুন্দর।

বিধাতার নিজ হাতে বানানো এক একটা চিত্রকর্ম যেন। পটে আঁকা ছবি। ক্রীম ফর্সা (লালচে ফর্সা না) মুখায়বের উপর বড় বড় গভীর দুটো চোখ। চোখের মনি কারো সবুজ, কারো নীল, কারো কারো বা কালো। ভুরুদুটো প্রাকৃতিকভাবেই চিকন করে বাকানো।

মাথার চুল সোনালী অথবা কালো। কালো চুলই সবচেয়ে বেশি ভাল মানায় ঐ চেহারায়। পাতলা ঠোঁট, তাকালেই মনে হতো ছোট্ট করে একটা কামড় বসিয়ে দিই (ঐ সময়ের বয়সের দোষ। মাফ করবেন, লেখাটা কিছুটা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য)। এরপর আসি ফিগারের কথায়।

বেশিরভাগ মেয়েই এখানে উত্তরাধিকার সূত্রেই তন্বী (স্লিম) ফিগারের অধিকারী। মেদ বলতে কিছুই নেই। মাথা থেকে পা পর্যন্ত, শরীরের বাঁকগুলো একটা প্রবহমান ঝর্নার মত। কোথাও হঠাৎ স্ফীতি বা সঙ্কোচন নেই। একবার দেখে চোখ ফিরিয়ে নেয়া খুবই কঠিন।

প্রথম প্রথম চেষ্টা করতাম, তাড়াতাড়ি চোখ নামিয়ে নিতে। কিন্তু পারতাম না। বেশীরভাগ সময় ই হাবলার মত তাকিয়ে তাকিয়ে তাদের কে দেখতাম। অবশ্যই তারা এতে বিরক্ত হলে এটা করতাম না। কিন্তু তাদেরকে এজন্য কখনোই বিরক্ত হতে দেখিনি।

একারণে তাদের প্রতি এক ধরণের কৃতজ্ঞতাও পোষণ করি। এই কারণে আমি ইউরোপের মেয়েদের কে বলি আগুন-সুন্দরী। পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেও এর উত্তাপ টের পাওয়া যায়। টেলিভিশন বা সিনেমার পর্দায় নয়, পথে-ঘাটে এরকম আগুন-সুন্দরীর ছড়াছড়ি এই দেশে। বাংলাদেশেও কিছু কিছু আগুন সুন্দরী দেখতে পাওয়া যায়।

কিন্তু সেটা বেশ দূর্লভ। বেশীরভাগ ই দেখা যায় টেলিভিশন-সিনেমার পর্দায়। বড় বড় এয়ার-কন্ডিশনড মার্কেটেও এদের দু'একজন কে দেখতে পাওয়া যায়, কিন্তু উৎসুক তরুণদের ভীড়ে এদের পাশ দিয়ে হাঁটাহাঁটিও কঠিন হয়ে যায়। যাই হোক দেশের গড় মেয়েদের বর্ণনা দেয়ার প্রয়োজন বোধ হয় নেই, কারণ পাঠকদের নিশ্চয় সে বিষয়ে যথেষ্ট জানা-শোনা আছে। অর্জিতঃ ইউরোপের মেয়েরা নিজেদের রূপ সম্পর্কে মারাত্মক সচেতন এদের মেক-আপ, লিপ্সটিকের বাহার দেখলে অবাক হতে হয়।

অনেককেই দেখেছি, ১০-১৫ মিনিট পরপর ব্যাগ থেকে ছোট আয়না বের করে, লিপ্সটিক, ফেস পাউডার, কাজল, নেইল পালিশ ঠিক করে নিচ্ছে। নিজেদের ফিগার ঠিক রাখার জন্য এদের চেষ্টায় কোন আলস্য নেই। এরা খুবই মিত আহারি, প্রচুর শারীরিক পরিশ্রম করে, এবং নিয়মিত ব্যায়াম করে। পাখি যেমন খাবার সময় একটু একটু করে ঠুকরিয়ে ঠুকরিয়ে খায়, এদের খাদ্যাভ্যাস ও অনেকটা সেরকম। প্রতিদিন লাঞ্চের সময় দেখেছি, লতা-পাতা, শসা, সালাদ এগুলো খেয়েই এরা থাকে।

আমাদের দেশের মেয়েরাও রূপ সচেতন। তারাও সাথে আয়না, লিপ্সটিক, কাজল নিয়ে ঘুরে। কিন্তু একটা জায়গায় তারা ইউরোপের মেয়েদের তুলনায় ভীষন রকম পিছিয়ে। সেটা হলো ফিগার সচেতনতা। এরা যথেষ্ট পরিশ্রম ও করে।

কিন্তু খাবার নিয়ে একদমই সচেতন না। মূলত প্রচুর পরিমাণ আহারের (বিশেষ করে ভাত) অভ্যাসের কারণে, এরা খুব অল্প বয়সেই মুটিয়ে যায়। এর জন্য আফসোস হলেও প্রতিকারের চিন্তা করে না। দেশের আর্থ-সামাজিক কারণেই হয়তো তারা এটা করতে পারে না। তারপর ও আরেকটু সচেতন হলে তারা আরো বেশী সুন্দর, প্রাণবন্ত, পরিশ্রমী এবং দীর্ঘায়ূ হতে পারে।

চলবে-------------------------------

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।