আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অর্বাচীন কথা

স্বপ্ন ছুঁয়ে

মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা আমাদের সমাজের এক শ্রেণীর ছেলেদের কাছে অতি আনন্দময় এক বিনোদন। এই শ্রেণীতে রাস্তার পাশে দাঁড়ান বখাটে ছেলেটা থেকে শুরু করে ভার্সিটিতে পড়ুয়া সভ্য! ছেলেরাও আছে। কিন্তু এখন আর বিষয়টা বিচ্ছিন্নভাবে না থেকে ব্যাপক হারে বেড়েছে। বখাটের উতপাতে অতিষ্ঠ হয়ে আত্তহত্যা, এই ধরনের খবর এখন আর আমাদের কাছে তেমন কোন বিষয় না! আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি এগুল দেখতে দেখতে। একটা মেয়ে যখন এলাকার অথবা আশেপাশের বখাটেদের অত্যাচার এ জর্জরিত, তখন অসহায় বাবা -মা প্রথম প্রথম প্রতিকারের চেষ্টা করেন।

কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফলাফল হচ্ছে আরো বেশি নির্যাতন। তো এরপর পড়াশুনা বন্ধ, এতেও কাজ না হলে বিয়ে দিয়ে দেওয়া। কারণ তারা ভাবেন বিয়ে হয়ে যাওয়া মানে ঝামেলা শেষ। হ্যাঁ, খুব অপ্রিয় হলেও কথাটা সত্যি যে, এই সমাধান আমাদের দেশের অসংখ্য মেয়ের ভাগ্যে জুটে, আর মেয়েরা বেঁচে যায় বিয়ে হয়ে যাওয়ার কারনে!কিন্তু এখন ডিজিটাল যুগ বলে কথা, সব কিছু নাকি ডিজিটাল, তো মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাটাও নিশ্চয় ডিজিটাল করতে হবে, সেটাই করে দেখালেন জগন্নাথ ভার্সিটির এক ছাত্রলীগ কর্মী। কিছুদিন আগে পত্রিকায় প্রকাশ, এক বিবাহিত ছাত্রীকে তিনি প্রকাশ্যে থাপ্পড় মেরেছেন, চুল টেনে ধরেন, শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করেন অসংখ্য মানুষের সামনে।

কারণ তার প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়া!!!!!!!!!ছাত্রীটি আর তার স্বামী থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ প্রথমে নেয় নি, পরে ভিসি কে ফোন করে তার অনুমতি পাওয়ার পর জিডি নেয়া হয়েছে!!!!!!!!!!!!!! কি চমৎকার! একজন নারী নির্যাতিত হবেন সবার সামনে, তার অভিযোগ ও পুলিশ গ্রহণ করবে না, কারণ অপরাধী ছাত্রলীগের কর্মী!!!!!!!!!!বাহবা জানাছি, ছাত্রলীগের সেই কর্মীকে, যিনি বিবাহিত একজন নারীকেও লাঞ্চিত করতে পারেন, তার সাথে প্রেম না করার অপরাধে!, তিনি যে ছাত্রলীগের কর্মী! বাহবা, পুলিশকেও, যারা অত্যন্ত সাফল্যের সাথে এই অসাধারাণ কর্মের নায়ক কে বাঁচিয়েছে! পত্রিকার আরো একটি খবর, রাজশাহী ভার্সিটির এক ছাত্রলীগ ক্যাডার আবাসিক হলের এক ছাত্রীকে রাস্তায় কিল, ঘুষি, লাথি মেরেছেন । ছাত্রীটির অপরাধ তার প্রেমে সাড়া দেয় নি সে! এর আগেও তিনি একই কাজ করেছিলেন, পত্রিকাতেও এসেছিল! পুলিশ তাকে ধরেছে, দশ মিনিটের মাথায় ছেঁড়ে দিয়েছে! কারন , তারা নাকি এই খবর জানে না! অন্য বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে নাকি পুলিশ, দশ মিনিটের ভিতর! ইডেনে চরমতম নোংরামি, ময়মনসিংহে ছাত্রীদের লাঞ্ছিত করা, রাজশাহী ভার্সিটির ছাত্রীকে মারধর, জগন্নাথে বিবাহিত ছাত্রীকে প্রকাশ্যে লাঞ্চনা, এছাড়াও আরো অসংখ্য ঘটনা যা প্রতিদিন আসছে পত্রিকায়, তা দেখে সত্যি বলতে ইচ্ছা হয়, ছাত্রলীগ এর নেতা কর্মীরা নারী নির্যাতন কে পুরোপুরি ডিজ়িটাল বানিয়ে ফেলেছেন, তাদের হাত থেকে এখন বিবাহিত ছাত্রীরাও বাঁচতে পারছেন না!মারহাবা আমাদের সরকার কে, মন্ত্রীদেরকে, সাংসদদেরকে যারা দেশ ও জাতি( বিশেষত নারীদের!) উন্নয়নে ছাত্রলীগ কে নিয়মিত সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন! এগিয়ে যান আপনারা, ছাত্রলীগ আছে আপনাদের সাথে!!!!!!!!!!! দুষ্টূ লোকেরা বলে, আমাদের রাজনীতিবিদেরা নাকি বেশিরভাগ ই পড়াশোনা বিষয়টা তেমন ভালোবাসেন না, তাই তারা এটাকে এড়িয়ে চলেন! তবুও বলি, যদি একটু ইচ্ছা হয় তবে ফ্রাঙ্কেস্টাইনের গল্পটা পড়বেন। আর মনে রাখবেন, যে দানব আজ সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে, সে যখন আরো শক্তি পাবে, তখন আপনাদেরও না ছাড়তে পারে,এটা ইতিহাসের শিক্ষা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.