আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সংক্ষেপে বিশ্বব্যাংক

No more will my green sea go turn a deeper blue I could not foresee this thing happening to you

আমাদের দেশের উন্নয়নের সিংহভাগই বিশ্ব ব্যাংক সহ অন্যান্য দেশের অবদান। তাই আসূন আমরা এদের সম্র্পকে কিঞ্চিত জানি................... বানান ভূল হলে নিজ দায়িত্বে ক্ষমা করতে হবে কিন্তু................. ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর জার্মানী পোল্যাণ্ড আক্রমন করলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ হয়। ইউরোপের যে অর্থনৈতিক অবক্ষয়, অনিশ্চয়তা ও সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তাকে আরোও জটিল ও ভয়াবহ করে তোলে। আরও কয়েক বছর অতিবাহিত হওয়ার পর ১৯৪৪ সালের জুলাই মাসে যুদ্ধবিধস্ত ইউরোপের পূর্ণগঠনে অর্থ সাহায্য জরুরী হয়ে উঠেছিল । এরই প্রেক্ষিতে বিশ্বের অর্থনীতির প্রভাবক হিসেবে ‘ব্রেটন উডস’ চুক্তি অনুসারে ১৯৪৫ সালে বিশ্বব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়।

এক নজরে বিশ্বব্যাংক পরিচিতিঃ- প্রতিষ্ঠিত সালঃ ১৯৪৫ ‘ব্রেটন উডস’ চুক্তি অনুসারে। কার্যক্রম শুরু করেঃ ১৯৪৬ সালের ২৫ জুন। সদর দপ্তরঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডি সি। বর্তমান সদস্য সংখ্যাঃ ১৮৪। বিশ্বব্যাংকের সংস্থাসমূহঃ বিশ্বব্যাংক ৫ টি ভিন্ন ভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত।

১. ওইজউ: ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ইধহশ ভড়ৎ জবপড়হংঃৎঁপঃরড়হ ধহফ উবাবষড়ঢ়সবহঃ. স্থাপিতঃ ১৯৪৫ সালের ২ ডিসেম্বর সদর দপ্তর ঃ ওয়াশিংটন ডি সি (যুক্তরাষ্ট্র) সদস্য সংখ্যাঃ ১৮৪। ২. ওউঅ: ওহঃবৎহধঃরড়হধষ উবাবষড়ঢ়সবহঃ অমবহপু– স্থাপিতঃ ১৯৪৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর। সদর দপ্তর ঃ ওয়াশিংটন ডি সি (যুক্তরাষ্ট্র) সদস্য সংখ্যাঃ ১৬৯। ৩. ওঋঈ: ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঋরহধহপব ঈড়ৎঢ়ড়ৎধঃরড়হ. স্থাপিতঃ ১৯৪৫ সালের ২০ জুলাই। সদর দপ্তর ঃ ওয়াশিংটন ডি সি (যুক্তরাষ্ট্র) সদস্য সংখ্যাঃ ১৮২।

৪. গওএঅ: গঁষঃরষধঃবৎধষ ওহাবংঃসবহঃ এঁধৎধহঃবব অমবহপু. স্থাপিতঃ ১৯৮৮ সদর দপ্তর ঃ ওয়াশিংটন ডি সি (যুক্তরাষ্ট্র) সদস্য সংখ্যাঃ ১৭৫। ৫. ওঈঝওউ: ঈবহঃৎব ভড়ৎ ঝবঃঃষবসবহঃ ওহাবংঃসবহঃ উরংঢ়ঁঃবং. স্থাপিতঃ ১৯৬৬ সদর দপ্তর ঃ ওয়াশিংটন ডি সি (যুক্তরাষ্ট্র) সদস্য সংখ্যাঃ ১৫৫ (মে ২০০৫ পর্যন্ত)। বিশ্বব্যাংকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যঃ বিশ্বব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রধান প্রধান উদ্দেশ্য হলোঃ- ১. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ দেশ সমূহের অর্থনৈতিক পূর্ণগঠনে সাহায্য করা। ২. যুদ্ধবিধস্থ পৃথিবীকে পূর্ণগঠনের জন্য অর্থের যোগান দেয়া। ৩. দরিদ্রতর ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সাহায্য প্রদান।

৪. উন্নয়নশীল দেশগুলোর দারিদ্রদূরীকরণ ও টেকসই উন্নয়নকে তরান্বিত করা। ৫. আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের স¤প্রসারণে সাহায্য করা। ৬. গ্যারান্টি প্রদানের মাধ্যমে কোন দেশকে ঋণ পেতে সাহায্য করা। ৭. প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে নিজস্ব তহবিল থেকে ঋণ দান করে বেসরকারী বিনিয়োগ বাড়ানো। ৮. অনুন্নত দেশে উৎপাদন সুবিধা বাড়ানোর জন্য সাহায্য করা।

৯. বৈদেশিক বিনিয়োগের হারকে স্থায়ীত্ব প্রদান করা। ১০. পৃথিবীর অনুন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নে সাহায্য করা। ১১. আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের স¤প্রসারণে সাহায্য করা। পরিচালনা পর্ষদঃ বিশ্বব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী এর প্রধান হয়ে থাকেন একজন আমেরিকার অধিবাসী। প্রধানকে নিয়ে একটি বোর্ড অব গভর্নরস আছে সেখানে প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রের একজন প্রতিনিধি থাকে।

তবে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য একটি বোর্ড অব এক্সিকিউটিবস আছে যার সদস্য সংখ্যা ২১ যারা ভোটের মাধ্যমে সিলেকটেড হিসাবে দায়িত্বপালন করে থাকে। বোর্ড অব এক্সিকিউটিবস ডাইরেকটরস এর একটি বোর্ড অব ডাইরেকটরস আছে যেখানে ৫ টি শিল্প উন্নত দেশ স্থায়ী সদস্য হিসাবে থাকে, বাকী সদস্যগুলোকে নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে থাকে। তবে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে এই ৫ টি সদস্য রাষ্ট্রের সবার সম্মতি প্রয়োজন হয়। বিশ্বব্যাংকের যাবতীয় কাজের জন্য একটি বোর্ড অব ডাইরেকটরসগণ দায়ী। তারা ব্যাংকের ঋণ প্রদান হতে শুরু করে প্রকল্প গ্রহণ বাছাই প্রভৃতি কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

ব্যাংক এর প্রেসিডেন্ট ৫ বছরের জন্য দায়িত্ব পালন করেন। বিশ্বব্যাংকের ঋণদান পদ্ধতিঃ ওইজউ বিশ্বের অনুন্নত দেশ যাদের মাথাপিছু আয় ৮০০ ডলারের উপরে তাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য ৭% হারে সুদে ১৫ থেকে ২০ বছরের জন্য ঋণ প্রদান করে থাকে। ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ৫০ বছরে ওইজউ বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশগুলিতে প্রায় ২৫০ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদান করেছে। ঋণ গ্রহণের ফলে যে সমস্ত দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে এবং মাথাপিছু আয় ৪৭১৫ ডলারের উপর গিয়ে পৌছেছে তাদেরকে ঋণ প্রদানের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। এই ঋণ প্রদানের প্রধান উদ্দেশ্য থাকে উন্নয়নশীল দেশগুলির সামাজিক ও অর্থনেতিক উন্নয়নকে আরো গতিশীল করা।

ঋণের সুদের হার নির্ধারিত হয় ব্যাংক কি মূল্যে অর্থ ধার করছে এবং অর্থ প্রদানের জন্য কত খরচ হচ্ছে, পাশাপাশি দেশের আর্থ সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনা পূর্বক। ২০০৫ সালের জানুয়ারীতে ঋণের সুদের হার ছিল শতকরা ৭.২৭ ভাগ। প্রতি ৬ মাস অন্তর এটা পরিবর্তিত হয়। সদস্য রাষ্ট্র সমূহের প্রত্যেকের ভোট ক্ষমতা রয়েছে। ভোটের সংখ্যা আবার নির্ধারিত হয় এই সংস্থার প্রতিটি রাষ্ট্রের শেয়ারের পরিমাণে।

৮০০ ডলারের নিচে মাথাপিছু আয়ের দেশগুলিকে ওউঅ সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে থাকে। বার্ষিক ০.৭৫% হারে সার্ভিস চার্জে ৪০ বছরের জন্য সুদমুক্ত ঋন প্রদান করে। তবে যে সমস্ত দেশ ঋণ নিয়ে থাকে তাদেরকে ১% হারে প্রশাসনিক খরচ বাবদ একটি অংশ প্রদান করতে হয়। ওইজউ ও ওউঅ যেখানে সরকারকে ঋণ দেয় সেখানে ওঋঈ সরাসরি বেসরকারী ঋণ প্রদান করে এবং এই ঋণ দীর্ঘমেয়াদী। সংক্ষেপে ওঋঈ একে বলে।

ওঋঈ মূলত উন্নয়নশীল দেশে বেসরকারী বিনিয়োগকে উৎসাহিত করে। এই প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ বা উপদেশসমূহ প্রণয়ন করা হয় দরিদ্রতা দূরীকরণ ও মানুষের জীবন মান উন্নয়নকে সামনে রেখে, যা পরিবেশ এবং সামাজিকভাবে উপযুক্ত। এর কাজের মধ্যে দেশের এমন কিছু খাত অন্তর্ভুক্ত যা দেশের জন্য বিপদজনক খাত হিসাবে বিবেচিত। ওঋঈ এর প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে বেসরকারী খাতকে শক্তিশালী করা। রাষ্ট্রে দরিদ্রতার হার হ্রাস এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন।

লক্ষ্য হচ্ছে বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সাথে নিজেকে যুক্ত করা। বৈদেশিক বিনিয়োগে আগ্রহী উন্নয়নশীল দেশগুলিকে সাহায্য করার লক্ষ্যে ১৯৮৮ সালে গওএঅ প্রতিষ্ঠিত হয়। মালিকানা বাজেয়াপ্ত, যুদ্ধ এ ধরনের অ-বাণিজ্যিক ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য গওএঅ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের গ্যারান্টি প্রদান করে। প্রতিটি প্রকল্পের জন্য ৫০ মিলিয়ন ডলার সর্বোচ্চ সাহায্যসহ একটি বিনিয়োগের ৯০ ভাগ পর্যন্ত আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চয়তা প্রদান করে এই সংস্থা। এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য তিনটি কাজ করে থাকে।

(১) রাজনৈতিক সংকটে যাতে বিনিয়োগকারীর কোন সমস্যা তৈরী না হয় সে জন্য দেশের পক্ষ থেকে গ্যারান্টি প্রদান করা। (২) বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য দেশের অবকাঠামো নির্মাণ করার পাশাপাশি বিভিন্ন বিনিয়োগ সহায়ক নীতি প্রণয়নে দেশগুলির সাথে কাজ করা। (৩) বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাঁধা এবং প্রতিবন্ধকতা দূর করা বা দূর করার জন্য দেশগুলিকে বিভিন্ন সাহায্য প্রদান এবং কর্মসূচী বাস্তবায়নের নীতি প্রণয়ন ও ঋণ প্রদান করা। ১৯৬৬ সালে সরকার এবং বৈদেশিক বিনিয়োগকারীর মধ্যে মীমাংসা ও নিষ্পত্তিতে সহায়তা প্রদানের দ্বারা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের হার বৃদ্ধি করতে ওঈঝওউ প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। এর প্রধান কাজ হচ্ছে বৈদেশিক বিনিয়োগকারী ও বিনিয়োগ প্রাপ্ত দেশের মধ্যে বিভিন্ন চুক্তির শর্ত ঠিক করা।

এছাড়া বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সাথে বিভিন্ন বিনিয়োগ অর্থ ঋণ প্রদান। এই প্রতিষ্ঠানটি বিদেশী বিনিয়োগকারীর স্বার্থ বেশি দেখে থাকে। চুক্তিকৃত শর্ত কোন দেশ বা বৈদেশিক প্রতিষ্ঠান ভঙ্গ করলে তার উপযুক্ত সমাধান প্রদান করে এ প্রতিষ্ঠান। বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ওঈঝওউ প্রকাশনার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে কয়েক খণ্ড বিনিয়োগ আইন ও চুক্তি সংকলন এবং একটি বার্ষিক আইন জার্নাল। বিশ্বব্যাংক ও তৃতীয় বিশ্বঃ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির কাছে বিশ্বব্যাংকের অনুমোদিত ঋণের পরিমান প্রতিবছরই বাড়ছে।

এই বৃদ্ধির হার ১৯৯৪-৯৫ সালে ছিল ৮ শতাংশেরও বেশি। বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৯৯৫ সালেল ৩০ জুন শেষ হওয়া আর্থিক বছরে উন্নযনশীল দেশগুলিকে দেওয়া ঋণের পরিমান ২২৫০ কোটি ডলার। ঋণের হার বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক বলেছে, পূর্ব ইউরোপের পূর্ণগঠন, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ক্রমবর্ধমান আর্থিক সংকট এবং রাশিয়া, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দ্বীপপূঞ্জকে দেয়া বড় অংকের ঋণের জন্য এই বৃদ্ধি। এই সময় আফ্রিকার দেশগুলি ততটা সুবিধা করতে পারেনি। এর কারণ সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক বলেছে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের শ্লথগতির জন্যই প্রত্যাশার তুলনায় কম ঋণ পেয়েছে এই দেশগুলি।

আফ্রিকান দেশগুলি অর্থনীতিতে বরাবরই পিছনের দিকে। চাঁদ, জাম্বিয়া, অ্যাঙ্গোলো, মোজাম্বিক এর বার্ষিক গড় উৎপাদন ১৯৬০-১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ছিল নেগেটিভ। মেক্সিকোয় ১৯৯৪ এর ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট, বাজার অর্থনীতি ও বৈদেশিক ঋণের কুফল সম্পর্কে বিশ্বের মানুষকে সতর্ক করে দেয়। বিশ্বব্যাংক বিভিন্ন কৌশলপত্র ও রিপোর্ট প্রদান করে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে উন্নত দেশের স্বার্থে পরোক্ষভাবে কাজ করতে উৎসাহ প্রদান করছে। যেমন- বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের উপর ১৯৮২ সালে বিশ্বব্যাংক একটি রিপোর্ট প্রদান করে।

এতে দেশের প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পদকে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহারের জন্য ৩ টি প্রস্তাবের কথা বলা হয়েছিল: ক) পাইপ লাইনে গ্যাস ভারতে রপ্তানী। খ) তরলীকরণ করে গ্যাস রপ্তানী। গ) গ্যাসকে ফিডস্টক হিসেবে ব্যবহার করা। কিন্তু পরবর্তীকালে দেখা যায়, ২ টি প্রস্তাব বিলুপ্ত হয়ে গেলেও ভারতে গ্যাস রপ্তানীর প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হয় ১৯৯৮ সালে। বিশ্বব্যাংক দরিদ্র দেশগুলির উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করে।

কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় যে প্রকল্পগুলি সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়না। প্রকল্প বাস্তবায়িত না হলেও এর জন্য গৃহীত ঋণের বোঝা বহন করতে হয় দরিদ্র দেশগুলিকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ‘গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প’ এর কথা বলা হয়। আবার কখনো কখনো উন্নয়ন প্রকল্পের দ্বারা পরিবেশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়। যেমন, ৮০ এর দশকে উন্নয়নের নামে ‘শিল্প কালচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ গৃহীত হয় যার প্রভাব হিসাবে ১৯৮৬ সালে পুরো এলাকায় প্রতিবেশগত বিপর্যয় নেমে আসে।

তাছাড়া প্রকল্পগুলির জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের সিংহ ভাগ চলে যায় বিদেশী পরামর্শদাতা ও বিশেষজ্ঞদের কাছে। ২০০৩ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ১৭৯ বিলিয়ন টাকার প্রকল্প গৃহীত হয় যার ২/৩ ভাগ চলে যায় ১৯ জন বিদেশী পরামর্শকদের হাতে। বিশ্বব্যাংক অনেক সময় মুনাফার আশায় মানবতা বিরোধী কাজ করে থাকে। স¤প্রতি বহুল আলোচিত আল বেনিয়ার বিষয়টির দিকে তাকালে দেখা যায়, আল বেনিয়ার সমুদ্র উপকূলের নয়নাভিরাম প্রাচীন একটি গ্রাম ধ্বংস করে সেখানে বিলাসবহুল মোটেল তৈরীর জন্য ৯০ লাখ ডলারের বিশাল প্রকল্পের অর্থ যোগান দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশে ১৯৬৫ সালে ‘সবুজ বিপ্লব’ এর মাধ্যমে উফসি ধানের প্রসার ঘটিয়েছিল যে বিশ্বব্যাংক বর্তমানে বহুজাতিক ব্যবসায়ীদের মুনাফার জন্য সেই প্রতিষ্ঠানেই হাইব্রিড ও টারমিনেটর বীজের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে।

খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠার জন্য, খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য বিশ্বব্যাংক যথেষ্ট ঋণ দিতে রাজি। শিশু খাদ্য, মায়েদের সেবা, নিরক্ষরতা দূরীকরণ ও প্রাথমিক শিক্ষার উন্নতির জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলিকে পর্যাপ্ত অর্থের সাহায্যের কথা বলেছে বিশ্বব্যাংক। কিন্তু ঋণ দেয়া নিয়ে বিভিন্ন রকম অজুহাত, শর্ত আরোপ, ঋণের ফাঁদে জড়িয়ে পড়া সব নিয়ে বিশ্বব্যাংকের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। বিশ্বব্যাংক তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির নিকট আন্তঃরাষ্ট্রীয় সক্রিয় ক্রিয়ানক ভূমিকা পালন করছে। যার কারণে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো উন্নত দেশগুলোর কাছে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।

কেননা বিশ্বব্যাংক পরিচালনার পিছনেও বিশ্বের বৃহত্তম শক্তিগুলোই কলকাঠি নাড়ছে। তবে সংগঠন হিসেবে বিশ্বব্যাংক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক পূর্ণগঠনে নিরলস কাজ করছে বলে সিংগাপুর, কোরিয়া, ভারতসহ বহুদেশ উন্নয়নের উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভেঙ্গে পড়া অর্থনীতির পূর্ণগঠন ও দরিদ্র দেশগুলোর দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং টেকসই উন্নয়নের মহৎ লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংক গঠিত হয়েছিল তা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ বলা যায়। কেননা, অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যটি সামান্য পূরণ হলেও তা কোন ক্ষেত্রে, কোন দেশের হয়েছে গোটা বিশ্ব সে সম্পর্কে অবগত। আর অন্যতম উদ্দেশ্য আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশের দারিদ্র্য বিমোচন মোটেও বাস্তবায়িত হয় নি।

বরং গোটা বিশ্বকে অর্থনৈতিক দিক থেকে ২ টি মেরুতে বিভক্ত করে দিয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.