আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বুয়েট ও বন্ধু্রা (এই কবিতাটির মাঝে আমার প্রয়াত বুয়েট বন্ধু মুকুলের স্মৃতি জড়িয়ে আছে।)

১৯৯৩

পলাশী আর বকশী বাজারের মাঝে ছায়ানিবিড় সুশীতল একটি পরিবেশে এশিয়ান হাইওয়ের দুই পাশে আমাদের বুয়েট ক্যাম্পাস দাড়িয়ে আছে। অল্প জায়গায় বিস্তৃত ঐ নিবিড় পরিবেশে। পার করেছিলাম অনেকগুলি বছর। অনেক কল্পনা, স্বপ্ন, বা আশা বুকে নিয়ে পাশ করব কবে গুনতাম প্রহর। মাঝে মাঝে ক্লাশটেস্ট, কুইজ বা ভাইভার যন্ত্রনা চোখের ঘুম কেঁড়ে নিয়ে মনে দিত বেদনা।

তিনটি ঘন্টা একটানা দাঁড়িয়ে। সেশোনাল করে ক্লান্তি দিত বাড়িয়ে। পাহাড় সমান লোড থাকত মাথার উপরে, সারা সেমিস্টার ধরে। তবুও আমি গর্ব করতাম বুয়েটে পড়ি বলে। আজ রয়েছি আমি অনেক দূরে।

ছাত্রজীবনের দিনগুলির স্মৃতি মনে করে। সকালে অনেক কষ্টে ঘুম ঘুম চোখে ছুটে যেতাম ক্যাম্পাসের দিকে। কিছু নাস্তা আর ক্লাশনোট হাতে। দল বেঁধে যেতাম বন্ধুদের সাথে। আজ বেশি মনে পড়ছে মোর বন্ধুদের।

কাটিয়েছি অনেকগুলি বছর আমি সাথে যাদের। স্মৃতির মাঝে রয়ে গেছে আজও ওদের স্থান। এতগুলি বছর দূরে থেকেও তা অম্লান। মোর হৃদয়ে সর্বদায় থাকবে ওদের নাম লেখা। আর কখনো কি হতে পারবো একত্রিত, পাবো কি সবার দেখা? জানি সম্ভব নয়, এটা নিয়তির পরিহাস।

হবেনা মিলন মেলা, যতই ফেলি দীর্ঘশ্বাস। সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে মুকুলের কথা। ওর স্মৃতি আজও মনে এনে দেয় অনেক ব্যথা। ও ছিল খুবই সহজ, সরল আর মিষ্ঠভাষি পরোপকারী, হাসি খুশিতে ভরপুর আর বিনয়ী। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ছিল লেভেল-৪, টার্ম-১ শেষে।

সবাই গেলাম ট্রেনিংয়ে অতি আনন্দের বেশে। ও গিয়েছিল ছাতক সিমেন্ট ফাক্টরিতে। উইকেন্ডে মাধবকুন্ডে গেল বেড়াতে। চারজন একসঙ্গে ওরা নেমেছিল গোসলে। সাঁতার না জানায় ও ঝর্নার নিচে গেল চলে।

বাকি তিনজন গোসল শেষ করে উঠে এল উপরে। কিন্তু মুকুল আর এলোনা ফিরে। এইভাবে আমাদেরকে না বলে। ও একাকি গেল চলে। ট্রেনিং এ থাকায় হয়নি শেষ দেখা।

মনের মাঝে ও টেনে গিয়েছে একটি কালো রেখা। ভাগ্যের টানে ও রয়েছে আজ অনেক অনেক দূরে। আমি আজও গর্ব করি ওর মত বন্ধু বুয়েটে পেয়েছিলাম বলে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।