আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ট্রাফিক "জ্যাম-জেলি"তে মাখামাখি আমরা আর এই শহরের অপরাপর নাগরিকরা!



আমি বিশেষজ্ঞ নই তারপরও বিষয়টা নিয়ে লিখতে ইচ্ছা হল। একজন নাগরিক হিসাবে বলতে তো অসুবিধা নাই নিশ্চয়ই। আমি পুরো ঢাকাকে সাজাতে পারব না, যেখানে বেশীরভাগ সময় আমার বসবাস সেখানে আসা-যাওয়ার রাস্তার ব্যাপারে কিছু প্রস্তাবনা দেওয়ার সাহস দেখাতেই পারি। ১। আমার মেনে নিতে খুব কষ্ট হয় কিভাবে ডিওএইচএস-গুলো আমাদের মত সাধারণ যাত্রীদের রিক্সা গাড়ি ঢোকার মুখে পরীক্ষা করে! আমার সম্মানবোধে আসলেই বাধে।

আমি (এবং আমার মত সাধারন মানুষ) সরকারকে যথেষ্ট পরিমানে ট্যাক্স দিই, আমার বিরুদ্ধে কোন থানায় মামলা মোকদ্দমা নেই, স্বাধীন দেশে আমাকে এক শহর থেকে আরেক শহরেও না-একই শহরের এক পাড়া থেকে আরেক পাড়ায় যেতে স্টিকার দেখাতে হবে, নাম ঠিকানা বলতে হবে, কয়েকটা বাঁশের 'বার' বসানো রাস্তা পার হতে হবে - এটা কি মগদের রাজত্ব নাকি! লালমাটিয়া, মনিপুরি পাড়া এমন আরো কিছু জায়গা আছে যেগুলো এ রোগে আক্রান্ত। এদের চিকিৎসা দেওয়া উচিৎ অনতিবিলম্বে। ২। আমরা 'গণপ্রজাতন্ত্র'-এর মর্ম বুঝি না, বুঝলে খুব শক্ত প্রশ্ন করা যেত - কিভাবে আমরা 'ব্লাডি সিভিলিয়ান'রা রাস্তার পচা জ্যামে আটকে থাকি আর সেনানিবাসের ভিতর সকল রাস্তা ফাঁকা থাকে!? আমাদের পয়সায় গড়া সেনানিবাসে আমাদেরকেই শুধু রাস্তাটুকু ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না!! উত্তরা অথবা গুলসান থেকে মিরপুর কিংবা ধানমন্ডি যাবেন - ভাবলে জ্বর এসে যায় না! কিন্তু দেখুন কিছুটা সহজেই যাওয়া যায় যদি আপনি জিয়া কলোনি দিয়ে ঢুকে মিরপুর ১৪ কিংবা জাহাঙ্গির গেট দিয়ে বের হয়ে যান। অন্ততঃ অফিস শুরু আর শেষের সময়ের দু ঘন্টা করে মেইন রোডগুলো সর্বসাধারণের জন্য খুলে দিতে পারে - আমরা তো সেটা বলতে পারি (জানি না কার মাধ্যমে কাকে)।

৩। উত্তরা থেকে মতিঝিল কিভাবে যাতায়াত করেন? সকাল বেলা চা-মুড়ি বেঁধে? তেমনই তো ব্যাপারটা, তাই না? কিন্তু একটা পরিকল্পণা করে যদি (ভাল মানের) ট্রেন চালু করা যেত, তাহলে আপনি কিসে যেতেন - নিজের গাড়ির পেট্রল পুড়িয়ে না কি ট্রেনে চেপে? মতিঝিল কিন্তু কমলাপুর থেকে 'হন্টন' দুরত্ব! এবং আপনি মানেন আর নাই মানেন, সত্যি ঘটনা হল ট্রেনে চেপে উত্তরা থেকে মতিঝিল যেতে লাগে সবমিলে অর্থ্যাৎ এয়ারপোর্ট বা টঙ্গি স্টেশনে আসা, ট্রেন টিকিট কাটা (১০ টাকারও কম) এবং মতিঝিল পৌঁছানো সবমিলে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট! ৪। ৩ বছর আগেও নিউমার্কেট থেকে আসাদগেট পর্যন্ত রাস্তায় রিক্সা চলেনি কিন্তু এখন রিক্সার ভিড়ে আর কিছুই দেখা যায় না। দয়া করে ভাববেন না রিক্সার বিরুদ্ধে আমি অবস্থান নিয়েছি - ওইরকম 'সবুজ' বাহনে আপত্তি কার থাকবে বলেন (যদিও অবৈজ্ঞানিক এবং অমানবিক! কিন্তু ইন্জিনচালিত আর অ-ইন্জিনচালিত যান একই রাস্তায় পাশাপাশি চলবে আর আপনি জট কমাবেন-সে স্বপ্নের গুড়ে কচকচে-মোটা-বালি!) যাই হোক সেদিন যারপর নাই আরো অবাক হয়ে প্রত্যক্ষ করলাম রাত সাড়ে আটটার সময় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সামনে 'হিউম্যান হলার' আর রিক্সার দূর্ঘটনা দেখে! এই যখন অবস্থা তখন রাস্তার 'জ্যাম-জেলি'তে তো আমরা আটকে যাবই। বিরক্ত লাগে সরকারের 'ফায়ার ফাইটিং' মনোভাবটাও দেখছি না! এটা মেনে নিতে পারি না।

সরকারের ম্যানেজমেন্টে বড় ধরনের সমস্যা আছে এটা বলাই যায়। এটা দেখতে তো বড় বড় চোখের দরকার হয় না, আল্লা'র দেয়া এই চোখ দিয়েই দিব্যি দেখা যায়। আমি কেন এগুলো লিখছি জানি না, সরকারের কেই তো এটা পড়বেও না। ব্লগারদের মধ্যে 'প্রভাবশালী' কেউ আছেন, একটু কষ্ট করে 'উপরে' পৌঁছে দেবেন?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।