আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অভ্যাস পরিবর্তনের আহ্বানে

বাংলা আমার দেশ

এক বিশেষ ভাবগম্ভীর ও আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে ৯ জানুয়ারি ২০০৯ নরসিংদী জেলার পৌর ভবনে অনুষ্ঠিত হলো নাগরিক সংবর্ধনা ও মত বিনিময় সভা। নরসিংদী পৌরসভা মেয়র লোকমান হোসেনের সুযোগ্য নেতৃত্বে আয়োজকদের ভূমিকায় ছিল নরসিংদী পৌর পরিষদ। নির্ধারিত সময়ের দু’ঘন্টা পর বিকেল ৫:৩০ মিনিটে আনন্দ মিছিলের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অতঃপর মেয়র লোকমান হোসেনের সভাপতিত্বে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা পর্ব। অনুষ্ঠান অলংকৃত করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজু।

অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী-১ নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য লে. কর্ণেল মোঃ নজরুল ইসলাম হিরু, বীর প্রতীক, মনোহরদী এলাকার সংসদ সদস্য নুরুল মজিদ হুমায়ূন, নরসিংদী জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এডভোকেট আসাদোজ্জামান, নরসিংদী জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আ. মতিন ভূঞা, নরসিংদী জেলা প্রশাসক অমৃত বারুই ও নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার মোঃ আজিজ প্রমুখ। জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয়ে অনুষ্ঠানের প্রথমেই মাননীয় মন্ত্রীদ্বয়ের হাতে সূর্য চাবি তুলে দেন মেয়র লোকমান হোসেন এবং অতিথিদের একে একে ক্রেস্ট তুলে দিয়ে বরণ করেন তিনি। এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি ইউজিআইআইপি’র প্রকল্প পরিচালক শেখ আমজাদ হোসেনকে ক্রেস্ট প্রদানের মাধ্যমে বরণ করেন তিনি। উপস্থিত অতিথিদের বক্তব্যের পর আবেগভরা কণ্ঠে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত মেয়র লোকমান হোসেন বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম শুধুমাত্র দেশের একজন মন্ত্রী বা আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বরণীয় ও মাননীয় নন বরং '৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে নেতৃত্বদানকারী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, যিনি '৭৫ আগস্ট খুনী মুস্তাকের মন্ত্রিপরিষদে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানানোর জন্য অন্ধকার কারাগারে জেলহত্যার শিকার হয়েছিলেন, সেই নায়কের সুযোগ্য সন্তান ও নরসিংদীর পার্শ্ববর্তী জেলা কিশোরগঞ্জের গর্বিত সন্তান তিনি। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে ঘোর নিদানের কালে আওয়ামীলীগকে তিনি স্বমহিমায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন যখন আওয়ামীলীগ নেত্রী বন্দি অবস্থায় ছিলেন।

তিনি আমাদের গর্ব। তিনি বলেন, আমি যখন এই নরসিংদী পৌরসভার দায়িত্ব গ্রহণ করি তখন এই শহরের অবস্থা ছিলো অত্যন্ত করুণ। আজ আমি গর্বের সাথে বলতে পারি আমার ও পৌর পরিষদের মিলিত প্রচেষ্টায় এই শহরকে আমরা একটি পরিচ্ছন্ন রূপ দেয়ার পথে এগিয়ে চলেছি। এটা সম্ভব হয়েছে নরসিংদীর জনগণের সহযোগিতায়, কোন গায়ের জোর খাটিয়ে নয়। আমি যে শক্তি প্রয়োগ করেছি তা হলো ভালোবাসার শক্তি।

আগামীতে আমি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলতে পারি আমাকে আরো সুযোগ দেয়া হলে ও সরকারের সহযোগিতা থাকলে বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে নরসিংদীর আত্মপ্রকাশ ঘটবে। তিনি আরো বলেন, মাননীয় মন্ত্রীর কাছে আমার কোন দাবী নেই। শুধু এটুকু বলবো, আমার অনেক স্বপ্নের মধ্যে একটা হলো যে আমার জেলার-দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মের বেড়ে ওঠার সুন্দর খেলার একটি শিশু পার্ক আমি করতে চাই সেখানে যেন তার সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা আমরা পাই। এই নরসিংদী শহরে বড় কোন মিলনায়তন নেই - সেটা গড়তেও আমরা তার সহযোগিতা চাই। এই আমার ভালোবাসার দাবী।

একটি ছোট কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন। মেয়রের কথার প্রতিধ্বনি করে মন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজু বলেন, ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা হিসেবে নরসিংদী জেলার যেভাবে গড়ে ওঠার কথা ছিলো অতীতে তা না হলেও ধীরে ধীরে আমরা সে পথে চলেছি। আগে নরসিংদীর মানুষ অনেক সুবিধা বঞ্চিত ছিলো - সরকারী নানা কারণে তাদের ছুটতে হতো নারায়ণগঞ্জ। এখন সে সব সুবিধাগুলো আমরা নরসিংদীতে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। ভবিষ্যতে আওয়ামীলীগ সরকার নরসিংদী- নারায়ণগঞ্জ জোড়া দেয়ার জন্য ব্রিজ নির্মাণে সচেষ্ট হবে এই প্রত্যাশায় আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী আমার ছোট ভাই ও সুযোগ্য নেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

আমিও সচেষ্ট হবো এই ব্যাপারে আরো অগ্রসরমান হতে। মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, মেয়র লোকমান হোসেনের সুযোগ্য নেতৃত্বে সুন্দর শহর গড়ায় আপনারা সবাই সচেষ্ট এজন্য আমি আনন্দিত। এখানে এসে এই অনুষ্ঠান যেমন ভালো লেগেছে তেমন ভালো লেগেছে তার বক্তব্য - সেখানে যেমন আবেগ ছিলো তেমন ছিলো বাস্তবতাও। আওয়ামীলীগ সরকারকে যখন দেশের মানুষ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় দেশের নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠ করে তখন দেশ একটা মহাসঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলো। ওই সঙ্কটকে আরো উস্কে দিতে স্বাধীনতাবিরোধীরা আরো ষড়যন্ত্র চালিয়ে যেতে থাকে।

তারা সেনাবাহিনী ও বিডিআরের মধ্যে গন্ডগোল বাঁধিয়ে দিয়ে ভাইয়ে-ভাইয়ে লড়াই করিয়ে দেশে গৃহযুদ্ধ বাধাতে চেয়েছিলো। কিন্তু আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে এগিয়ে চলেছি। এই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে গেলে প্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হলো নিজেদের বদলে ফেলা। নিজেদের পুরোনো অভ্যাসগুলো বদলে ফেলে নতুন অভ্যাস গড়তে হবে যেগুলো নিজের সাথে অপরের কাজে লাগে। সেই অভ্যাস তৈরির মাধ্যমেই আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হবো।

এখানকার মানুষের আনন্দ - এই আনুষ্ঠানিকতা দেখে আমার ভালো লেগেছে। তবে আমাকে যে ক্রেস্ট দেয়া হলো, সেটা আমি মেয়রকে দিয়ে যেতে চাই - এর অর্থ দিয়ে যদি কোন মানুষের উপকার হয় সেটাই হবে আমার জন্য বেশি আনন্দের। এই আনুষ্ঠানিকতাগুলো ধীরে ধীরে নতুন অভ্যাসের মাধ্যমে পরিবর্তন করতে হবে। তিনি এলাকার মানুষের দাবীগুলো বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দিয়ে তার বক্তব্য শেষ করেন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.