আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শতাব্দীর এশিয়ান সাইকো রসু খাঁ :



রসু খা : চাঁদপুরে ১১ নারীর আলোচিত খুনি রসু খাঁ (৪০) আদালতে সবক'টি খুনের বর্ণনা দিয়েছে। গত রোববার চাঁদপুরের সিনিয়র বিচার বিভাগীয় হাকিম আমিরুল ইসলামের খাস কামরায় রসুকে হাজির করা হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। বিকেল সোয়া ৫টা থেকে শুরু করে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে তার জবানবন্দি। এই ১১টি খুনই শুধু নয়, ভয়ঙ্কর এই খুনি কম করে হলেও আরও অর্ধশত নারকীয় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ প্রকাশ করছে পুলিশ। রসুর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পুলিশ রোববার রাতেই ফরিদগঞ্জের মদনা থেকে সফিক নামের সাবেক এক ইউপি মেম্বারকে আটক করেছে।

তাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সফিককে ৫৪ ধারায় কোর্টে চালান দেওয়া হবে। এছাড়া আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে রসু খাঁ এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও দু'তিনজন জড়িত ছিল বলে স্বীকার করলেও তদন্তের স্বার্থে পুলিশ এ ব্যাপারে কিছু জানাতে অপারগতা জানিয়েছে। রসু খাঁকে আরও ক'দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করার চিন্তা-ভাবনা চলছে। তবে কবে থেকে রিমান্ড চাওয়া হবে এবং তা ক'দিনের জন্য সে সম্পর্কে এসআই মীর কাশেম তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলতে পারেননি।

খুনি রসুর হাত থেকে কপালগুণে বেঁচে যাওয়া রুমা নামের এক তরুণী সম্পর্কে জানতে পেরেছে পুলিশ। আদালতে দেওয়া জবানবন্দির কাগজপত্র নিয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে নানা তথ্য তুলে ধরা হয়। আর এসব তথ্য তুলে ধরেন চাঁদপুর সদর সার্কেলের এএসপি সিরাজুল হক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মীর কাশেম। আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রসু খাঁ জানায়, গত জুলাই মাসে ফরিদগঞ্জ উপজেলার কড়ৈতলী গ্রামের পারভীন নামের ৩৫/৩৬ বছর বয়সী এক মহিলার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। প্রথম পরিচয়েই ওই মহিলা রসু খাঁর কাছে টাকা চায় এবং বলে রসু খাঁকে দেখতে তার স্বামীর মতো।

মহিলা এক পর্যায়ে রসু খাঁর সঙ্গে রাত কাটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করে। সুযোগ পেয়ে রসু খাঁ তখন পারভীনকে নিয়ে যায় বিলের মাঝখানে গাছ-গাছালিঘেরা একটি পরিষ্কার ভিটি জায়গায়। সেখানে সে পারভীনের সঙ্গে অবৈধ সঙ্গমে মিলিত হয়। কিছুক্ষণ পর ওই জায়গায় রসু খাঁর ভাগিনা জহিরুল ইসলাম (২০/২৫) ও তার বাড়িরই অপর একজন (তদন্তের স্বার্থে পুলিশ নামটি জানায়নি) সেখানে আসে। এই দু'জনও পারভীনের সঙ্গে যৌন সঙ্গমে মিলিত হয়।

পারভীন তাদের কাছে ৫ হাজার টাকা দাবি করে বলে, ৩ জনের কোনো একজন যদি তাকে বিয়ে করতে রাজি না হয় তবে সে চিৎকার করে লোক জড়ো করবে। তার হুমকিতে ভড়কে গিয়ে ৩ জন মিলে সেখানেই পারভীনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরের দিন ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মোবাইল নম্বরে রসু খাঁ তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন (নং-০১৮২৪-৬৫৪৫৭৬) থেকে ফোন করে বলে, তার নাম লেবু মিয়া, বাড়ি সিলেট, সে একজন রিকশাচালক, ভাটিয়ালপুরে ঘরজামাই থাকে। সে জানায়, তার পারিবারিক শত্রু মদনা গ্রামের তরিতরকারি ব্যবসায়ী মালেক মোলল্গা ও শফিকুল পারভীনকে খুন করেছে। এরপর সে ফোন-সংযোগ কেটে দেয়।

গত ২ আগস্ট রসু খাঁ ও তার বাড়িতে বেড়াতে আসা এক ব্যক্তি (তদন্তের স্বার্থে এ ব্যক্তির নাম জানায়নি পুলিশ) মিলে গাজীপুর বাজারের একটি মসজিদের ১০/১২টি ফ্যান চুরি করে। ফ্যানগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় বাজারের আখ ব্যবসায়ী তাজু ও নাইটগার্ডের কাছে তারা ধরা পড়ে যায়। তাদের দু'জনকে পুলিশে সোপর্দ করা হলে ডাকাতি মামলার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে কোর্টে চালান করা হয়। রসু খাঁকে ধরার সময় আখ ব্যবসায়ী তাজু তার কাছ থেকে ১টি মোবাইল ফোন ও দুটি একটেল সিম পেয়ে কাউকে না জানিয়ে সেগুলো নিজের কাছে রেখে দেয়। প্রায় দু'মাস পর তাজু পাশের গ্রামের একজনের কাছে রসু খাঁর বন্ধ সিম ১শ' টাকায় বিক্রি করে দেয়।

ঘটনার ৩ দিন আগে সিমটি ওপেন করলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টের পেয়ে যান। তদন্তকারী কর্মকর্তা কৌশলে মহিলাকে দিয়ে কল করিয়ে সিম ব্যবহারকারী ব্যক্তির ঠিকানা ও অবস্থান শনাক্ত করেন। এরপর ওই সিমের সূত্র ধরে মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করেন। রসু খাঁ ১১টি খুনের ঘটনা স্বীকার করেছে। সে প্রতিজ্ঞা করেছিল ১০১টি খুন করে সিলেটে শাহজালালের (রহ.) মাজারে গিয়ে আজীবন পড়ে থাকবে।

ইতিমধ্যে ধরা পড়ায় তার অবশিষ্ট হত্যাকাণ্ড সম্পন্ন করতে পারেনি। আদালতে জবানবন্দিতে রসু আরও জানায়, ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর/অক্টোবর মাসে সে টঙ্গী বিসিক এলাকার মুদি দোকানদার ও মালিকের স্ত্রী মিলে এক প্রেমিকাকে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার কাছে খালের পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে টঙ্গী সেনাকল্যাণ গার্মেন্টকর্মী এক মেয়ে রসু খাঁর অন্ধ ছেলেকে লাথি মারলে রসু ওই মেয়েকে খুন করবে বলে পণ করে। পরদিন সে কৌশলে মেয়েটির কাছে ক্ষমা চেয়ে তার সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে তাকে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার চান্দ্রা রাস্তা দিয়ে বালিথুবা ডিআর খালপাড়ে নিয়ে মেয়েটির দেহ ভোগ করে। এরপর খাল পার হওয়ার কথা বলে মেয়েটিকে কোলে তুলে খালের পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে।

দুই বছরের কিছু আগে রসু খাঁ ও তার শ্যালক মান্নান মিলে বরিশাল থেকে মান্নানের স্ত্রীকে কৌশলে চাঁদপুর নিয়ে আসে। ফরিদগঞ্জ থানাধীন ভাটিয়ালপুর মোড় থেকে ফরিদগঞ্জের পুরনো রাস্তার মাথায় নিয়ে খাল পার হওয়ার কথা বলে তারা দু'জনে মেয়েটিকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে টঙ্গী নিরাসপাড়ায় রসু খাঁর ভাড়া বাসার মালিক বাবলুর ছোট ভাইয়ের নির্দেশমতো রসু খাঁ পরিকল্পিতভাবে একটি মেয়েকে ফুসলিয়ে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার নায়ারহাট বাজারের পশ্চিমে হাসা বিলে নিয়ে যায়। সেখানে গাছগাছালি ঘেরা একটি নির্জন কাঁচা রাস্তার ওপর ৩ জন মিলে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। এরপর মেয়েটির গায়ের ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে পশ্চিম পাশের খালের পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে।

২০০৯ সালের মার্চ মাসে চাঁদপুর থানাধীন দুর্গাদিতে রংপুরের একটি মেয়েকে (টঙ্গী-মেঘনা রোডে তারেক রহমানের গার্মেন্টের কর্মচারী) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রসু খাঁর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে চাঁদপুর থানাধীন ছৈয়াল বাড়ির এক ব্যক্তির বাসায় এনে রাখে। পরে পরিকল্পিতভাবে মেয়েটিকে হাত-পা বেঁধে একটি হিন্দু বাড়ির পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে। ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসের শেষের দিকে রসু খাঁ ঢাকা থেকে কোহিনুর নামের একটি মেয়েকে ফুসলিয়ে চাঁদপুর নিয়ে আসে। তারপর তার বাড়ির মফু মেম্বার ও সে দক্ষিণ বালিয়া মুনাফ পাটওয়ারী বাড়ির পশ্চিম পাশে উঁচু জায়গায় নিয়ে মেয়েটিকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এরপর হাত-পা বেঁধে খালের পানিতে ছুড়ে ফেলে হত্যা করে।

একই বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে চড়কি বাবুল (অথবা অন্য কোনো নাম, বর্তমানে ডাকাতি মামলায় জেলহাজতে আছে) নামের এক লোক রসু খাঁর টঙ্গীর নিরাসপাড়ার বাসায় গিয়ে তার গ্রামের আবিদ ঢালী নামের এক শত্রুকে ঘায়েল করার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী সে কোনো একটি মেয়েকে মেরে তার লাশ শত্রুর বাড়িতে রেখে আসবে বলে ফন্দি আঁটে। সে শাহিদা নামের একটি মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। পরে চড়কি বাবুল এবং রসু খাঁ শাহিদাকে নিয়ে ইচলী খেয়া পার হয়ে রিকশায় উত্তর বাগাদী পাখির দোকানের দক্ষিণ পাশে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ের সোবহানপুরে যায়। সেখানে একটি গাছের নিচে রসু খাঁ, চড়কি বাবুল এবং তার বাড়ির জনৈক ব্যক্তি মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

এরপর তারা তিনজনে মেয়েটিকে হাত-পা বেঁধে খালের পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে। লাশের পাশে একটি কাগজে চড়কি বাবুলের শত্রুদের নাম ও শাহিদার ভুয়া নাম-ঠিকানা লিখে রেখে তারা চলে যায়। এছাড়া দেড় মাস আগে হাইমচর থানাধীন চৌধুরীর হাটের পূর্ব পাশে বিলের মাঝখানের খালের মধ্যে ঢাকা থেকে আরও একটি মেয়েকে এনে ধর্ষণ করে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে সে। ৩ বছর আগে গাজীপুর থেকে একটি মেয়েকে ফরিদগঞ্জ থানাধীন হাসা গ্রামের হাসা খালের পাড়ে এনে খালের পাশে নির্জন ভিটিতে নিয়ে জনৈক ব্যক্তি ও শফিক মেম্বার মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে। এভাবেই আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ১১ জন নারীকে নৃশংসভাবে হত্যার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে সে।

তার এই জবানবন্দি হরর ছবির কাহিনীকেও হার মানায়। চাঁদপুর সদর সার্কেলের এএসপি সিরাজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, রসু খাঁ ভয়ঙ্কর এবং খুবই জেদি প্রকৃতির লোক। সে ছোটবেলা থেকেই চুরি-চামারিতে জড়িত। নিজ এলাকা ফরিদগঞ্জের মদনা গ্রামের সবাই তাকে চোর বলেই জানে। এমনকি চুরির জন্য নিজের পরিবারের কেউ তাকে পছন্দ করত না।

এ কারণে সে পরিবার থেকে ছিল অনেকটা দূরে। মামলার তদন্তকারী প্রধান কর্মকর্তা ফরিদগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মীর কাশেম সাংবাদিকদের জানান, রোববার বিকেলে খুনি রসু খাঁ যখন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিচ্ছিল তখন তার স্ত্রী রীনা, ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে থানায় কিছুক্ষণ অবস্থান করে। ওই সময় রসু তার স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে কিছু সময় কাটানোর জন্য অনুরোধ জানায়। কিন্তু ওই মুহূর্তে পুলিশের পক্ষে তার সে অনুরোধ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ জানায়, খুনি হলেও অবাক করা ব্যাপার স্ত্রী ও সন্তানদের প্রতি রয়েছে রসু খাঁর গভীর ভালোবাসা।

থানায় জিজ্ঞাসাবাদকালে সে বারবার স্ত্রীকে কাছে পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে। স্ত্রীর প্রতি ভয়ঙ্কর এই খুনির এত ভালোবাসা কেন_ তা পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। রসুর শারীরিক গঠনও বেশ মজবুত। তাকে যখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল, তখন সে একটি কলাপসিবল গেট জাপটে ধরেছিল কিছু সময়। আর সেখান থেকে তাকে সরাতে পুলিশকে বেশ বেগ পোহাতে হয়।

এ সময় পুলিশের পোশাক জাপটে ধরে গালমন্দ করতে থাকে। তার সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্যের জামাকাপড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রসু যে ১১ নারীকে হত্যা করেছে তার সবগুলোই সে জলাশয় বা নদীতে করেছে। একটি হত্যাকাণ্ডের বিবরণ শুনে পুলিশ হতভম্ব হয়ে যায়। আর সেটি হচ্ছে, গত ২১ জুলাই ফরিদগঞ্জের হাসা গ্রামে পারভীনকে হত্যা।

আদালতে জবানবন্দিকালে এ হত্যা সম্পর্কে রসু জানায়, পারভীনকে সে খুব যন্ত্রণা দিয়ে হত্যা করেছে। পারভীনের যৌনাঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জ্বলন্ত সিগারেট দিয়ে ছাঁকা দিয়ে এবং লাঠি দিয়ে প্রচণ্ড আঘাত করে এবং সবশেষে মুখে প্রায় দেড় হাত পরিমাণ কাপড় ও একটি বড় আকৃতির টর্চলাইট ঢুকিয়ে হত্যা করে। প্রতিটি হত্যাকাণ্ড ঘটাতে গিয়ে রসু খালপাড় বা নদী ব্যবহার করেছে। বেঁচে এসেছে রুমা : পুলিশ জানিয়েছে সিরিয়াল খুনি রসুর হাত থেকে বেঁচে আসা রুমা (১৯) নামের এক তরুণীর কথা। তার বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার পাঁচরুকি গ্রামে।

তার পিতার নাম মোঃ গিয়াস উদ্দিন। এই মেয়েটিকে ২০০৫ সালের ৬ জানুয়ারি প্রেমের ফাঁদে ফেলে চাঁদপুরে নিয়ে আসে। এরপর বালিয়া এলাকায় একটি ব্রিজের কাছে নির্যাতন করে মরে গেছে ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় রুমা। পরে সে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা শেষে পুলিশকে ঘটনা জানায়।

ওই বছরের ২৯ এপ্রিল পুলিশ এ মামলার সিএস (নং-৭৯) আদালতে দাখিল করে। তাকেও মামলার স্বার্থে হাজির করা হবে আদালতে। রুমা বর্তমানে তার নিজ বাড়িতে অবস্থান করছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। রসুর পারিবারিক অবস্থা : ২ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে রসু দ্বিতীয়। ২৩ বছর ধরে ছোট ভাই লাপাত্তা।

আজও সন্ধান মেলেনি। ছোট বোন জর্দানে ও বড় বোন ঢাকায় স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার করছে। পুলিশ জানিয়েছে, রসু ছোটবেলা থেকেই চুরির সঙ্গে জড়িত। লেখাপড়া করেনি তেমন একটা। বাবা আবুল খাঁ ছিলেন কৃষক।

সামান্য জমিজমা ছিল নিজেদের। পরে এই ছেলে এলাকায় চুরি করত বলে বাবাকে জরিমানা দিতে হয়েছে কয়েকবার। মদনা গ্রামে রসুর বাড়িতে গিয়ে জানা গেল, তাদের পরিবারের কেউই বাড়িতে থাকে না। গত ১৫/২০ বছর আগে রসুর বাবা মারা যান। তার আগেই রসুর অপকর্মের কারণে টঙ্গীতে চলে যায় রসুর পরিবার।

চান্দ্রা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই জানান, ১০/১২ বছর আগে এই রসু চুরিসহ নানা ধরনের অপকর্মে জড়িত ছিল। এ নিয়ে এলাকায় বেশ ক'বার সালিশ হয়। এমনকি তাকে থানায়ও সোপর্দ করা হয়। কিন্তু সে যে এত বড় খুনি তা তারা আঁচ করতে পারেননি। রসুদের বাড়ির (সম্পর্কে চাচাতো ভাই) আনোয়ার খাঁ (৬০) জানান, খান বাড়ির বদনাম হবে বিধায় এক সময় তাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

তবে এলাকার অধিকাংশ লোকই রসুকে চেনে না। পুলিশ জানিয়েছে, ১১টি মামলার মধ্যে ১টি থানা-পুলিশ ও ১টি সিআইডি তদন্ত করছে। এছাড়া বাকি ৯টি মামলার রিপোর্ট আগেই চূড়ান্ত হওয়ার কারণে সেগুলো পুনরুজ্জীবিত করার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে। এদিকে খুন হওয়া ১১ নারীর মধ্যে ৫ জনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তারা হচ্ছে_ ফরিদগঞ্জের হাঁসার পারভীন, রসু খাঁর আপন শ্যালক মান্নানের স্ত্রী শাহিদা, টঙ্গীর নিরাসপাড়ার কোহিনুর, একই এলাকার মেহেদী ও চাঁদপুর সদর উপজেলার দুর্গাপুর এলাকার রীনা।

এদের মধ্যে স্বামী পরিত্যক্তা পারভীনের ১ ছেলে ফয়সাল (৬) ও ১ মেয়ে সুখিকে (৭) নিয়ে মা তফুরা বেগম পালতালুক গ্রামে বসবাস করছেন। মেয়ে হত্যার বিচার চেয়েছেন পারভীনের ভাই জাফর ও মা তফুরা বেগম। তারা চান রসুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। ( দেশী-বিদেশী সংবাদ মাধ্যম থেকে সংগৃহিত )

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.