কমলাপুর ষ্টেশনের দুই আর তিন নম্বর প্লাটফর্মের মাঝখানে সামান্য ঘাস-গজে ওঠা উঠোনে বসে তাস পেঠাচ্ছি চার বন্ধু মিলে। আন্ত:নগর একতার অপেক্ষায় টাইম পাস আরকি! সন্ধার একটু আগে।
হঠাৎ এক হুযুর এসে কুব ভদ্রভাবে, অত্যন্ত বিনয়ভরে কিছু উপদেশ রাখলেন। তারপর বললেন, আল্লাহ'র ঘর মসেজিদের জন্য কিছু সাহায্য করতে। আমাদের মধ্যে রিয়াদ নামে একজন ছিলো, যে আছিলো মহাপাজি।
সেও বিনয় সহকারেই জিজ্ঞেস কর্লো, কোথায় হচ্ছে মসজিদ? একদিকে হাত তুলে(সম্ভবত: উত্তর সাজাহানপুর) হুযুর বললেন, ঐদিকে।
ওইখানে তো অলিডি মসজিদ আছে, রিয়াদের উত্তর!
হুযুরও দমবার পাত্র নন..বললেন: কোনদিকে হৈলে দিতেন???
-----------------------------
ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। সাবজেক্ট চয়েসের ভাইবা পর্বও শেষ। ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ডিপার্টমেন্টে গেছি। নয়া নয়া ভাব চোখে মুখে।
ফিস জমা দেবার আগে পে-ইনস্লিপ ফিরাপ কর্তে হবে। অফিসরুমে গিয়ে চিকনা হ্যাংলা একজনকে দেখে মামা' টাইপ মনে হলো। জিজ্ঞেস কর্লাম, ভর্তি হতে কয় ট্যাকা লাগে মামা?
উনি উনত্রিশ পাটি কেলিয়ে বললেন: ৫ ট্যাকা লাগে।
একসারি ছেলেমেয়ে হোহো করে হেসে উঠলো তার কথা শুনে।
--------------------------------
চবি:তে প্রক্সি দেয়ার জন্যে এক দোস্ত খুব ধর্লো।
সেখানে পরীক্ষা পড়ছে এমন সময়, এর দুদিন বাদে ঢাবির পরীক্ষা। সে ছাড়বার পাত্র নয়। আমারও বেড়ানোর খায়েস। বললাম, ঠিকাচে। সব খরচাপাতি তার।
আমার পকেট একেবারে ফাকা না হলেও তেমন টাকাপয়সা নিইনি। পরীক্ষার পর, এদিক ওদিক ঘুরেটুরে আমরা প্রথম এলাম হালিশহর --না ষোলোশহর, মনে নাই। ওখানে এসে বন্ধুবর জানালেন, তার গাটে ট্যাকা যা আছে তা দিয়ে আরামে ঢাকা পর্যন্ত যেতে পারলেও ময়মনসিংহ যাওয়া হবেনা। আমি বললাম সমস্যা নাই, আমি তো ঢাকাতেই থাকবো, তোরে আমি ট্যাকা দিমুনে। সে ইনিয়ে বিনিয়ে বললো, তার চে চল, ফটিকছড়ি যাই, রাবার বাগানে।
হেভি জায়গা, বেড়ানোর ষোলকলা হবে! সেখানে তার এক ফুফাতো ভাই থাকেন। রাবার বাগানে চাকুরী করেন। তার কাছ থেকে ট্যাকা পয়সা যতো ইচ্ছ নেয়া যাবে। কি মনে করে রাজী হয়ে গেলাম। বাসে উঠে পড়লাম।
যাবো তারাখো। আমাদের নামতে হবে হেয়াকু। আমরা ভুল করে হেলপারকে বলিনি। বাস চলে গেলো ফটিকছড়ি সদরের দিকে। ওখানে গিয়ে হলো সন্ধ্যা।
আবার ফিরতি বাসে উঠে এলাম হেয়াকু। হাফ ছেড়ে ভাবলাম ওফ কি ঝক্কিটাই না গেলো বোকামির জন্যে। তারাখোর রিকশা খোঁজা শুরু কর্লাম। একজন বললেন, সেপথে তো রিকশা যায়না!
সেকি?তা কতোদুর?
৮ /৯মাইল তো হবেই। আপনেরা কোত্থেকে?
.......................ইত্যাদি আলাপের পর, সাব্যস্ত হলো হেটেই যেতে হবে, আর কোনো উপায় আমাদের নেই।
সো শুরু হলো হাটা। হাটতে হাটতে রাস্তা আর ফুরোয়না। আর রাবার বাগানের সেই রাস্তা যে কি দুর্ধর্ষ! পানির তিষ্টায় ছাতি ফেটে গেলো। ঘুটঘুটে অন্ধকার। অবশেষে একটু আলোর ঝলকানি দেখা গেলো তা প্রায় মাইল দুয়েক দুরে।
একটা আলোঝলমলে শহরের হাতছানির মতো। পুরা হোটেল ক্যালিফোর্নিয়ার অবস্থা!
সেখানে পৌঁছাতে রাত বাজলো ১০:৩০। ছোট বাজারের মতো এলাকায়, আমাদের দেখে জনা কয়েক এগিয়ে এলেন। ক্ষুধা আর তৃষ্ণায় আমাদের কথা আসছেনা গলা দিয়ে। সব বলা হলো।
জানা গেলো, বন্ধুটির ফুফাতো ভাই অদ্য বিকালেই টাঙ্গাইল, বাড়িতে গেছেন। অবশ্য তার পরিবার আছেন। আমাদের নেয়া হলো একটা কোয়ার্টারে। প্রায় ৪০ ওয়াটের বাতি। জীর্নশীর্ন অবস্থা কোয়ার্টারের।
দরজা বাঙা কোথাও কোথাও।
ভাবী ২ বছরের বাচ্চা নিয়ে বসে। আমাদের দেখে খুশি এবং বিমর্ষ দুটোই। অবাকও হলেন বেশ। কি ব্যাপার?? কেও মারা টারা গেছে নাকি? তোমরা এখানে, এতো রাতে।
কিভাবে?!!!!!!!!!!!
............
আলুভর্তা আর আলুভাজি অমৃত মনে করে গোগ্রাসে মোটা চাওলের ভাত গিললাম। এসময় এলেন ফুফাতো ভাই। তিনি ভুত দেখার মতো চমকে উঠলেন। এবং খাওয়া শেষে বাইরে আলাপচারিতায় জানালেন: ৬মাস দরে বেতন বন্ধ। বেতনবকেয়ার দাবীতে আজও সচিবের গাড়ি বাংচুর হয়েছে।
বাড়ি তেকে টাকা এনে এনে চলেন এখানকার রাবারবাগান কর্মচারীরা। তাই, আমাদের ঢাকা যাওয়ার াতিরিক্ত কিচু তাকলে যেনো দিয়ে যাই
-------------
পরের দিন সকালে,তিনি একশো টাকা ধরিয়ে দিয়ে বললেন: যেদিক দিয়ে এসেছি এর উল্টো দিকটা ভালো রাস্তা। যেতে হবে হেটেই। হাটতে হাটতে বুঝলাম, কিরাস্তা দিয়ে এসেছি কাল রাতে। (ইষৎ সংক্ষিপিত)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।