আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের দেশেও কি পরিবর্তন আসবে?

ছায়া ছায়ায় পথ হেটে চলি--ছায়া আমার সামনে ও পিছে।

পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হলেন বারাক ওবামা। মার্টিন লুথারের যে স্বপ্ন দীর্ঘদিন অধরা ছিল সে স্বপ্ন পূরণ হলো এরই মাধ্যমে। এখন বলা হচ্ছে প্রতিটি দেশের জন্যই চাই একজন করে ওবামা। তবে এ চাওয়া কতদিনের? আমরাও তো স্বপ্ন দেখেছিলাম ‘বাপের বেটা ফখুরুদ্দীন, মশহুদ আর মইন’কে নিয়ে।

এবার একটু চোখ বন্ধ করুন। ভাবুন- ১/১১ এর আগের দিনগুলির কথা। কি কিছু ভাসিয়ে তুলতে পেরেছেন? পারেন নি? এবার কয়েকটি ছবি মনে ভাসিয়ে তোলার চিন্তা করুন। ১. চারদলীয় জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, ২. মতিউর রহমান নিজামী, ৩. আলী আহসান মুজাহিদ, ৪. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ। শেখ হাসিনাই বা বাদ যাবে কেন? তার মুখশ্রীটাও ভাসিয়ে তুলুন আপনার মনলয়ে।

ভাবুন সেই নৈরাজ্যের দিনগুলোর কথা। বলছিলাম ১/১১ এর আগের কথা। পরের কথা একটু বলি। ফখরুদ্দীন সরকার আসার পর অনেককেই তার প্রশংসায় বলতে শোনা গেছে- ‘বাপের বেটা ফখরুদ্দীন’। বাপের বেটা বলতে বলতে অনেকেই মুখে ফেণা তুলেছেন।

এই ফখরুদ্দীন হতে পারতেন বাংলার ওবামা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার অবস্থান মানুষের আস্থা বাড়িয়ে দিয়েছিল। আর সেনা প্রধান জেনারেল মউন উ আহমেদের সেই- ‘৩৬ বছরের জঞ্জাল দূর করার’ বুলিও কি আমরা ভুলতে পারি। ভুলতে কি পেরেছি তার আলু নিয়ে জাতীয় স্বপ্নের কথা! মইন উ-ও হতে পারতেন বাংলার ওবামা। আমরা বারবার হোচট খাই।

বারবার। প্রশাসন থেকে বিচার বিভাগ পৃথকের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবের রূপ পেল এই সরকারের সময়ে। তবুও বিচার বিভাগ কি আসলেই স্বাধীন হতে পেরেছে? একটা ছোট্ট উদহারণ দিতে চাই...। নূর আলী নামের এক ব্যবসায়ীর দায়ের করা চাঁদাবাজির মামলায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগই পায়নি পুলিশ। এটি পত্রিকান্তরে জানলাম।

এতে এও বলা হয়, এ মামলায় অভিযুক্ত তার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল ও তার স্ত্রী রূপা চৌধুরীর বিরুদ্ধেও কোনো ক্লু পায়নি তদন্তকারী। অথচ এ মামলায় হাসিনাকে এতদিন জামিন দেয়নি আদালত। প্রশ্ন হলো কার নির্দেশে? আর কেনইবা হাসিনা দেশে ফেরার মাত্র একদিন আগে ওই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন থেকে আসামিদের অব্যাহতি দেওয়া হলো? তাহলে কি বিচার বিভাগ এখনও সরকারের রক্ষাকবচ? বিচারকরা এখনও সরকারের গোলাম? সামনে নির্বাচন। আওয়ামী লীগ বা বিএনপি’র মধ্যে একটি দল অবশ্যই ক্ষমতায় যাবে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিছুদিন আগে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন বাংলাদেশ সফরে এসে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি বিষয়ে সজাগ থাকতে সরকারকে পরামর্শ দিয়ে গেছেন।

নির্বাচিত যেই হন না কেন, হয়তো বলবেন- এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু হয়নি। হয়তো কেউ বলবেন, স্থুল কারচুপি হয়েছে। তবে সাধারণরা তাদের কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য শুনতে চাই না। আবার এও শুনতে চাই না বাপের বেটি ‘অমুক’। আমরা ওবামার মতো কোনো রাষ্ট্রনায়ক না পাই ম্যাককেইনের মতো দেশপ্রেমিক রাষ্ট্র নায়কের প্রত্যাশাতো করতে পারি।

নির্বাচনী রণক্ষেত্রে ম্যাককেইন কিংবা ওবামা একে অপরের প্রতি যতই বিষোদগার করে থাকুন না কেন ফলাফলের পর দুজন যেভাবে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তা উঁচুমানের গণতান্ত্রিক সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার অত্যুৎকৃষ্ট নজির। আমরা এমনই নজির দেখতে চাই বাংলার মাটিতে। হোক না তিনি ম্যাককেইনের মতো রক্ষণশীল আদর্শের।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.