আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘুড্ডির পাইলট এর মার্জনা প্রত্যাশি পোষ্ট !!!

সামুর এক মাত্র সর্বাধীক বানান ভুল সম্পন্য ব্লগ ! মনে রাখবেন আপ্নে সামুর সবচাইতে বিপজ্জনক ও বদ ব্লগারের ব্লগে প্রবেশ করেছেন , আপ্নি দুষ্টু প্রকৃতির না হলে এখানে সময় নষ্ট কইরেন না ।

আসলে এখন বেশি সময় গ্রামেই থাকি ! স্লো নেটে মোবাইল দিয়া ব্লগে ঢুকতে পারি না ! ফেসবুকেও থাকি খুব কম , বেশিরভাগ সময় ছোট ভাই বোনদের দিয়া অই ফেসবুক আইডিটা মেইনটেইন করাই তাই অইটারে অনলাইন দেখায় , কিন্তু ওদের হাতে তো ব্লগের এই আইডিটা ছেড়ে দিতে পারি না । অনেক দিন পরে এলেও সামুকে আগের মতোই ভালোবাসি । তাই এলাম আজকে, সামুকে দেখতে । এসেছি যখন খালি হাতে ফিরবো না , তবে কমেন্ট এর রিপ্লাই দিতে দেড়ি হতে পারে তাই আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি কুসংস্কার হলো রুপকথার মতো , মানুষ একে অবিশ্বাস করে ঠিকি কিন্তু এটা মুখে চর্চা করতে শব্দের কৃপনতা করে না ।

তার উপর যদি এটা হয় কোন মৃত মানুষের ফিরে আসার মতো ঘটনা তাহলে তো কথাই নেই ! মোহনকুমার ঘোষের বাড়িতে ডাকাত পরলো আর স্বপরিবারের হত্যাকান্ডে শুধু রেহাই পেলো মোহনকুমারের নববধু ময়ুরাক্ষি দেবী , ঘটনার রাতের পরের দিনই ময়ুরাক্ষি দেবীর ভাইয়েরা নিরাপত্তার খাতিরে বোনকে পিতৃগৃহ কোলকাতায় নিয়ে গেলেন, এরপর আর তার খবর কেউ জানে না , পড়ে রইলো শুধু আগুনে পোড়া ধংস হয়ে যাওয়া ”ঘোষ প্যালেস” । কাজটি যে গ্রাম সেরা কুচক্রি ভুবন চাটুজ্যের, সেটা কারও বুঝতে বাকি রইলো না যখন মোহকুমারের মালিকানা বিহীন জমিগুলোতে চাটুজ্যে পরিবারের নিয়মিত কৃষকদের ফসল বোনা শুরু হলো । আর তারা জমির দখল নেবেই না বা কেন ? এ জমি যে মোহনকুমার ডাকাত পরার আগের মাসেই চাটুজ্যেদের কাছে বন্ধক রেখে টাকা ধার করেছে ! পরোপকারি মোহনকুমারের কোলকাতার জুয়ার নেশার গোপন তথ্যটিও রটিয়ে দিতে ভুল করলো না চাটুজ্যে পরিবার ! আজ চোউত্রিশ বছর পরে মৃত মোহনকুমার ফিরে এসেছে ! এও কি সম্ভব ? গ্রামে স্বর্গবাসের অপেক্ষারত অবশিষ্ঠ বৃদ্ধের দল প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঘোষ প্যালেসের ছাদে পায়চারিরত মোহনকুমারকে দেখে অবাক হয়েছে ! সেই একই চোখ , তেমনি উঁচু নাক , মোটা ঠোটের ওপরে তরোবারী সুদৃশ্য গোফজোড়া আগের মতোই পাখনা মেলে বসে আছে ! এযে মোহনকুমার ঘোষ !!! কিন্তু কিভাবে এটা সম্ভব ? গ্রামের মানুষের সাথে থানার বড় বাবু নিজে দাড়িয়ে থেকে ক্রিয়া কার্জ সম্পন্য করেছিলেন ! অশিক্ষীত ছোটলোকের জাত মুখরোচক কোন ঘটনা পেলে সেটাকে মিথ্যা প্রমানের জন্য কোন যুক্তিকে মস্তিস্কের কাছে ধারে ঘেষতে দেয় না ! তাতে যে মজা নষ্ট হয়ে যাবে ! মুখে মুখে রটে গেলো মোহনকুমার ভুত হয়ে ফিরে এসেছে । আজ প্রায় তিন যুগ পরে মোহনকুমারের ভুত হয়ে ফিরে আসার কারনটা কি ? এ প্রশ্ন গ্রামের যেসব মানুষকে চিন্তিত করেছে তাদের মধ্যে সকলের চেয়ে চিন্তায় এগিয়ে ছিলো ভুবন চাটুজ্যে ! গ্রামের সর্বকালের সেরা কুচক্রি মানব ! কথিত আছে কোন এক সাধুকে নদীর ধারে প্রতুষ্যস্নানরত অবস্থায় দুস্টু ছেলেরা উৎপিরিত করে অতপর সাধুর অভিশাপের ফলস্বরুপ ভুবন চাটুজ্যে এই গ্রামের বাসিন্দা হিসাবে জন্ম নেয় ! কোন প্রমান না থাকলেও বৃদ্ধ এই মানুষটি যে মোহনকুমার হত্যাকান্ডের প্রধান পরিচালক একথা গ্রামের সকলেই জানে। দশোড়ার মেলাটা হলো এ গাঁয়ের আনন্দের পর্বগুলোর মধ্যে অন্যতম ! সেই প্রাচীনযুগের বেহায়া রাবন , রামের স্ত্রী সীতাকে হড়ন করার অপরাধে রামের হাতে মৃত্তুবরন করে , সেই থেকে রামের অনুসারীরা রাবনের প্রতি ঘৃনা জানাতে এতোটুকু কার্পন্য করছে না , বেচারা রাবনকে দশোরার মেলায় প্রতিবছর দশমুন্ডুতে সাজিয়ে গুছিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দেয় , রাম কতৃক হত্যাকৃত রাবনকে প্রতিবছর বাঁচিয়ে তোলা হয় নিজেদের হাতে পুনরায় হত্যা করার জন্য ।

রাবন বধ উপলক্ষ্যে নানরকম পসরা সাজিয়ে দোকান বসে , পুতুলনাচের পুতুলগুলো নতুন জামাকাপর পরে প্রানবন্ত হয় , যাত্রা পালার অভিনয়কারীরা বিগতদিনের অভিনয় চর্চার নৈপুন্য দেখাতে মঞ্চে নামে , কালু বিহারি কোলকাতা হতে সংগ্রহীত বিলেতি মদের বোতলে দেশীয় তড়লে নানান রকম সুবাস মেশায় ! ভজহরি তার জুয়ার কৌশলকে কাজে লাগিয়ে উঠতি ছোকরাদের পকেটের ওজন কমায় । সাতদিন ধরে চলে এই উৎসব । প্রতিদিন রাত দ্বিপ্রহরে মেলার কোলাহল থেমে যায় , লোকজন ক্লান্ত শরীরে যে যার ঘরে ফেরে , এতো রাতে সাধারন মানুষের ঘরে ফেরায় বিশেষ কোন আয়োজন থাকে না , কিন্তু যারা সমাজের মাথা , আর যাদের কাছে ধনসম্পদের লক্ষী স্থায়ীভাবে ঘাটি গারে তারা একনলা বন্দুক আর বল্লম সহকারে পাইক পেয়াদা পরিবেষ্টিত হয়ে পথ চলে ! ভুবন চাটুজ্যে মেলার সময় বেশি সময় দেয় কালু বিহারির আড্ডায় , গলাঅবধি পান করেন , এতো বয়স হওয়া সত্যেও তার পান করার যোগ্যতার কাছে যে কোন ব্যাটা ছেলে হার মানবে ! সাথে থাকা পাঁচজন দেহরক্ষিকে নিয়ে মধ্যরাতে বাড়ির পথ ধরেন । আগুনে পোরা ধংস্বস্তুপ “ ঘোষ প্যালেসের “ সামনে দিয়েই তাকে যেতে হয় , পেটের মধ্যে সদ্য ঢোকা পানিয়র প্রভাব থাকলেও মোহনকুমারের ভুত বিষয়ক চিন্তাটা হঠাৎই মাথায় চাগার দিয়ে উঠলো , ”ঘোষ প্যালেস” এর সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় বার বার বাড়িটার দিকে তাকিয়ে টলমল পায়ে হাটছিলো ভুবন চাটুজ্যে । হঠাৎ রাস্তার পাশের ঝোপের ভেতর হতে বহু পুর্বের পরিচিত এক কন্ঠ তাকে ভুবন বলে ডেকে উঠলো ! ঝোপের দিকে চোখ ফেরাতেই ভুবন বাবুর মদের নেশা ছুটে গেলো! চাদের আলোয় স্পষ্টভাবে দেখতে পেলো আজ হতে চৌত্রিশ বছর আগে খুন হওয়া মোহনকুমার ঝোপের মধ্যে দাড়িয়ে !!! সাথে থাকা দেহরক্ষীরা প্রথমে হাতের বল্লম বন্দুক বাগিয়ে ধরে মনিবকে রক্ষার করার স্বিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ! কিন্তু তারা মনিবের নুন খায় চোর ডাকাত আর দুস্টু মানুষের হাত থেকে মনিবকে রক্ষা করতে , কোন অশরীরি প্রেতের সাথে লড়াই করার মতো অস্র তাদের হাতে নেই ! এধরনের পরিস্থিতিতে আক্রান্ত সকলের মস্তিস্কের ভাবনায় সাধারন একটা বিষয় খুব মিল পাওয়া যায় আর তা হলো ”দৌড়ে পালাও আর নিজের জীবন বাঁচাও” দেহরক্ষীরা প্রথম স্বিদ্ধান্তের বদলে দ্বিতীয় স্বিদ্ধান্তটিকে বেশি প্রাধান্য দিলো ।

অতপর রাস্তার ধারের ডোবার শান্ত জলকে ঘোলা করে দিয়ে , ডোবার ওপারে গিয়ে ভেজা শরীরে পাঁচ দেহরক্ষী হাপাতে লাগলো , আর শুধু এটুকু নিরাপত্তাকে তারা যথেস্ট মনে করলো না । তারা জাত দেহরক্ষী , মনিবকে রক্ষা করার কৌশল যেমন জানে তেমনি নিজেদের জীবনকে রক্ষার করার কায়দাটাও রপ্ত করা আছে , তাইতো আর অপেক্ষা না করে ডোবার পাশের মাঠে নেমে ছুটতে লাগলো আর চোখের নজরে বিন্দুতে পরিনত হলো । শুধু মাত্র ভুবন চাটুজ্যে দাড়িয়ে রইলো ধ্বংস্ব প্রাপ্ত ঘোষ প্যালেসের সামনে ! যেখানে আজ হতে চৌত্রিশ বছর আগে খুন হওয়া মোহনকুমার এর প্রেতাত্বা ধিরে ধিরে তার দিকে এগিয়ে আসছে । থানার বড় বাবু সহ অন্যান্য কর্তা ব্যাক্তিরা এসব ভুত প্রেতে বিশ্বাস করেন না , বয়সের কারনে দুর্বল চিত্ত আর অতিরিক্ত মদ্যপানের কারনে ভুবন চাটুজ্যের হৃদযন্ত্রটি দায়ীত্ব পালনে অস্বিকৃতি জানায় আর এভাবেই মৃত্যু হয়েছে বলে থানার দাপ্তরিক নথীতে ভুবন চাটুজ্যের মৃত্যু রহস্য লিপিবদ্ধ হয় । পরিশিষ্ঠ : ঘোষাল প্যালেস এখন আবার সেই আগের মতো জৌলুসপুর্ন হয়ে গেছে ! এটি এখন আর সেই আগুনে পোড়া ধ্বংসস্তুপ নেই সেখানে গড়ে উঠেছে প্রাসাদসম নতুন ঘোষ প্যালেস।

মানুষের কোলাহলে পুরোবাড়ি গম গম করছে , দিনে রাতে শখানেক চাকর বাকর বাড়িটির দেখাশোনা করে , আর এখন বাড়ির কর্তা হচ্ছেন মোহনকুমারের একমাত্র ছেলে মদনকুমার , দেখলেই বোঝা যায় এটি মোহনকুমারের ছেলে সেই একই চোখ , তেমনি উঁচু নাক , মোটা ঠোটের ওপরে তরোবারী সুদৃশ্য গোফজোড়া আগের মতোই পাখনা মেলে বসে আছে ! এযে অবিকল মোহনকুমার ঘোষ !!! ডাকাতির পরে মোহনকুমারের স্ত্রী ময়ুরাক্ষি দেবী যখন ভাইদের সাথে বাপের বাড়ি চলে যান তখন তিনি ছিলেন পনের দিনের অন্তসত্তা । কেউ জানতো না এখবর ! ভুবন চাটুজ্যের ষরযন্ত্রে প্রান হাড়ানো মোহনকুমারের প্রতিশোধ অস্রটি ময়ুরাক্ষি দেবীর পেটে করে নিরাপদে চলে যায় কোলকাতা । বাপের চাইতে বেশি সুচতুর মদনকুমার ভালোকরেই জানে , শুধু মাত্র কারও চেহারা দেখে ভয় পেয়ে কেউ অক্কা পেলে সেখানে আইন খুব জোরে দৌড়তে পারে না , আর বন্ধকি জমির কাগজ দেখানোর দায়ীত্ব চাটুজ্যে পরিবারের , ভুবন চাটুজ্যের অবর্তমানে যা দেখাতে তারা ব্যার্থ হয়েছে , সরকারী তহশিল দপ্তর হতে পুনরায় পৈতৃক সম্পত্তির দলিল এর প্রতিলিপি উঠিয়ে জমি জমা এখন মদনকুমারের দখলে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.