আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘুড্ডির পাইলট ও এস আই মোজাফ্ফর

সামুর এক মাত্র সর্বাধীক বানান ভুল সম্পন্য ব্লগ ! মনে রাখবেন আপ্নে সামুর সবচাইতে বিপজ্জনক ও বদ ব্লগারের ব্লগে প্রবেশ করেছেন , আপ্নি দুষ্টু প্রকৃতির না হলে এখানে সময় নষ্ট কইরেন না ।

কাওরে কমেন্ট দিতে পারতেছিনা , আর নিজের ব্লগের কমেন্ট গুলোর জবাবও দিতে সময় লাগতেছে তােই দুখিত । থানার টেবিলের উপর রাখা জিলাপির ঠোংগা হতে একটা জিলাপি এক হাতে নিয়ে অন্য হাতে কানে মোবাইলটা ধরে কথা বলছে এস,আই মোজাফ্ফর হোসেন , মোবাইলের কলার তাকে জিলাপিটা খেতেই দিচ্ছে না ! কথার মাঝে কয়েকবার মুখ হা করে জিলাপিটাকে দন্তের জাতাকলে পিশতে চেয়েছে মোজাফ্ফর, কিন্তু কাকতালীয় ভাবে তখনই কলার এমন কিছু বলেছে যে জিলাপিটা তার পান খাওয়া দাতের আক্রমন হতে রক্ষা পেয়ে শোকর করেছে ! ফোনটা আসার পর হতে এমন চারবার হলো !অফিসার রুমের বাইরের বারান্দায় টুলে বসে কনস্টেবল রজ্জব সেটাই ফলো করছিলো !একসময় ফোনে কথা বলা শেষ হলো জিলাপিটা না খেয়ে ঠোংগায় রেখে বাইরে বেরিয়ে এলেন মোজাফ্ফর সাহেব । # রজ্জব ? সবাই তৈরী ? আমাদের এখনই বেরোতে হবে ! * জি স্যার সবাই পিকাপে বসা আছে । # টেবিলের উপর থেকে ঠোংগাটা লও, আমি গাড়িতে বসলাম, আজকা সারারাত ডিউটি ।

মধ্য বয়সি মোজাফ্ফর সাহেব বিয়ে সাদী করেননি , বন্ধুরা তাকে আনমেরিড পুলিশ ডাকে, তার সাথের বন্ধুরা সবাই ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিচ্ছে , সেসব বিয়েতে দাওয়াতও খেয়েছে সে !এই মুহুর্তে ছোট্ট এই মফস্বল শহরের গন্যমান্য এক ব্যাবসায়ীর পালিয়ে যাওয়া মেয়ে আর তাকে ভাগিয়ে নিয়ে গিয়ে আপ্সর্ধা দেখানো ছেলেটিকে খুঁজছে এস,আই মোজাফ্ফর , এমপি সাহেব নিজে ওসি সাহেবকে ফোন করেছিলেন যে করেই হোক শহর ছেড়ে পালাতে দেয়া যাবে না । সমস্ত শহরে নাকাবন্দি করে রাখা আছে , পালিয়ে যাওয়া জুটিকে ধরা খুব কঠিন কিছু নয় , শহরের ঢুকার ও বেরোবার পথ তিনটা, তিন জাগাতেই চেকপোষ্ট বসানো আছে সকল বাস গাড়ি চেক না করে করে শহর থেকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না ! মোজাফ্ফর সাহেব পিকাপ নিয়ে ঘুরে ঘুরে প্রতিটা চেকপোষ্টের তদারকি করছেন । জিলাপি খেতে গেলে হাত আঠা আঠা হয়ে যায় ! আর হাত চট চট করে এটা খুবই বিরক্তিকর একটা ব্যাপার ,টিশ্যু পেপার দিয়ে ধরে খেলে জিলাপির ঝোলের আঠা হাতে লাগতো না , তাই একটা বন্ধ দোকানের সামনে পিকাপ থামানোর ইশারা করলেন মোজাফ্ফর । মফস্বলের দোকানদার রাত ১১ টা বাজতেই দোকানের ঝাপ নামিয়ে ঘুমায় ! এই রাতের বেলা দোকানের সামনে পুলিশ দেখে দোকান্দারের চোখ কপালে উঠেছে ! কোনরকম ঢোক গিলে টিশ্যু দিয়ে পুলিশ বিদায় করলো প্রথমে টাকা নিতে চায় নাই ! পরে মোজাফ্ফরের ধমকে টাকা নিয়ে ঝাপ বন্ধ করেছে । এদিকে স্টেডিয়াম রোডের চেকপোষ্টে ঢাকাগামি একটা বাস আটকে রেখেছে পুলিশ ।

মোজাফ্ফর নিজে গিয়ে যাত্রিদের সনাক্ত করে তারপর বাস ছাড়বে । জিলাপির সাথে টিশ্যু ঢুকে গেছে মুখের মধ্যে , একটু পর পর আংগুল দিয়ে সেটা খোঁজার ব্যার্থ চেষ্টা করছে মোজাফ্ফর আর বাসের ভেতর বসে থাকা প্রতিটি যাত্রির মুখ মন্ডল এর সাথে হাতে ধরে রাখা একটি মেয়ের ছবি মিলিয়ে মিলিয়ে দেখছে , মেয়ের ছবির সাথে পুরুষ মানুষের চেহারা মিলানোর চেষ্টা করায় কয়েকজন যাত্রি প্রতিবাদও করেছে ! কিন্তু মোজাফ্ফর তার দায়ীত্বে অবহেলা করার মতো এস আই নয় ! ছোট খাটো একটা চিতকার করে উঠলো কনস্টেবল রজ্জব ! স্যার এই দিকে আসেন ! বাসের পেছনের দিকে ছুটে গেলো মোজাফ্ফর ! বাসের পেছনের সিটে এক জোড়া তরুন তরুনী অসহায় ভাবে চেয়ে আছে এস,আই মোজাফ্ফরের দিকে ! দুই জোড়া করুন চোখ মোজাফ্ফরের দিকে করুনা ভিক্ষা চেয়ে বার বার হতাশায় ভেংগে পরছিলো । পকেট হতে একবার ব্যাবসায়ীর মেয়ের ছবিটা বের করে যাত্রা পালার রাবনের মতো অট্ট হাসি দিয়ে উঠলো মোজাফ্ফর ! সে হাসিতে তরুন তরুনির করুন চোখে শ্রাবনধারা শুরু হলো ! রজ্জবের হাতে জিলাপির ঠোংগাটা ধরিয়ে দিয়ে বললো যাও মিয়া গারিতে গিয়া বইসা খাইতে থাকো , পাবলিক চ্যাতাইয়া ঘোলা জল আরও ঘোলা কইরো না মিয়া । তরুন তরুনিকে নিয়ে বাস চলে গেছে ঢাকার উদ্দেশ্যে , এস, আই মোজাফ্ফর পিকাপের পিছনে অন্ধকারের মধ্যে দাড়িয়ে আছে , রজ্জবের হাতে তখনও জিলাপির ঠোংগা , রজ্জব জানে স্যার তাকে জিলাপি খেতে বললেও খাওয়া যাবে না , কারন স্যার আসলে তাকে জিলাপি খাওয়ার জন্য গাড়িতে পাঠায়নি । মোজাফ্ফর অন্ধকারে দাড়িয়ে চোখ মুছছে , আজ হতে১৬ বছর আগে মারুফা এতোটা সাহসি হলে আজ বন্ধুরা তাকে আনমেরিড পুলিশ ডাকতো না , অন্ধকারে স্যারের চোখ মোছা দেখা যাচ্ছে না তারপরও রজ্জব জানে তার স্যার কাঁদছে , স্যারকে তার চাইতে বেশি কে চেনে ?


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.