আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আন্দোলনের তুচ্ছতা, তুচ্ছতার আন্দোলন

http://www.myspace.com/423882880/music/songs/31785002

সকাল বেলা প্রথম আলোর সম্পাদকীয় পড়ে চিন্তায় পড়ে গেলাম। গত দুইদিনের ঢাবি সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যে জাগরণ আমরা দেখেছি তাকে ইতিমধ্যে নানান ভাবে সবাই বিশ্লেষণ করা শুরু করে দিয়েছে। প্রথম আলো সম্পাদকীয়তে বলেছে, কোনো অশুভ শক্তি যেন এ সহিংসতার সুযোগ নিতে না পারে। আমি খানিক বোঝার চেষ্টা করলাম, অশুভ শক্তি টা কি? কাল একজন ব্লগার তাত্ক্ষণিক মন্তব্যে সবাইকে জানাতে চাইলেন যে, জেনারেলরা পুরোদমে সামরিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য পথ তৈরি করছেন। আসলে তাত্ক্ষণিক ভাবে অনেক কিছুই বলা যায়।

এই তাত্ক্ষণিক ভাবে বলতে বলতে আমরা কোথায় এসে ঠেকেছি। কিছুই কি আমরা আগে থেকে অনুমান করতে পেরেছি? ব্যাপারটা আবহাওয়া অফিসের ওয়েদার রিপোর্টের মতো! আমার কথা হলো, জেনারেলরা কেন এভাবে পথ তৈরি করবেন? কি জন্য? তাহলে কি, সরকারের সাথে সেনাবাহিনীর দুরত্ব তৈরি হচ্ছে? জেনারেল মঈন আর উপদেষ্টা ফকরুদ্দীন সাহেবের মধ্যে দুরত্ব তৈরি হচ্ছে? আমার চিন্তা হলো, কেন? সেনাবাহিনীকে যাতে কোনোভাবে বিতর্কিত না করা হয়, এর আগে এ নিয়ে শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া নানান কথা বলেছেন! দেশে যখন অনিশ্চয়তা, জাতি যখন অসহায় ঠিক সেই মূহুর্তে সেনাবাহিনীর আগমনকে সবাই স্বাগতম জানিয়েছে। সেনাবাহিনী বির্তকিত হবেনা, জাতির কল্যাণ সাধনে নিয়োজিত হবে সবাই সেটাই চেয়েছিলো!সরকার সেনাবাহিনীর সহয়তায় ইতিমধ্যে একটি এন্টি করাপশন ইমেজ গড়ে তুলেছে। আমরা কি সেটা অস্বীকার করবো? কিন্তু ঢাবিতে খেলা দেখা নিয়ে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে অন্য চোখে দেখার চেষ্টা করা কতোটুকু বাস্তবসম্মত। অনেকে এমনও বলেছেন, সরকারতো কাইত! আমি তো মনে করি, সরকার অনেক স্মার্ট।

আন্দোলোন করলো, ছাত্ররা, বিজয় হলো সরকারের! কিভাবে? সরকার দুঃখ প্রকাশ করেছে, এবং সেনাবাহিনী তাদের ক্যাম্প সরিয়ে নিচ্ছে! এরপর আর আন্দোলনের কিছু থাকে!! আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নানান সরকার এসে নানান ভাবে নাজেহাল করেছে। ছাত্ররাজনীতির আড়ালে চলেছে নানান কূট নীতি! আমাদের শাদাদল, নীলদল মার্কা শিক্ষকেরা ছাত্রদের এসবে সঠিক পথ দেখাতে পারেনি, নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে চেয়েছে! কিন্তু, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে যদি "সরকার কাইত" জাতীয় দুরভীসন্ধিমূলক সাফল্যের সাথে মেলানোর অপচেষ্টা করা হয়, তাহলে দুঃখ জনক। বড়ো আন্দোলনের জন্য বড়ো ধরনের প্রস্তুতি থাকা দরকার। যদিও ছোট অনেক ঘটনা থেকে বড়ো সাফল্য চলে আসতে পারে। দেশে অনেক বছর ধরেই আমাদের আষ্টে পৃষ্টে বাধা আছে সমস্যা।

গণতান্ত্রিক নির্বাচিত সরকার আমাদের জন্য কি করেছে , আমরা জানি। তাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ছিলো, কথায় কথায় ধর্মঘট, হরতাল। আমরা চাইনা গণতন্ত্রে এ সংস্কৃতি ফিরে আসুক। আমরা চাইনা, আমাদের বারবার ব্যবহার করা হোক! এ সরকার চলে একদিন যাবেই, কিভাবে যাবে সেটা বিবেচ্য বিষয়। কিন্তু কথায় কথায় কারো প্ররোচনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনে আমাদের ঝাপিঁয়ে পড়াতে সাফল্য অন্য কোথায় চলে যেতে পারে! আমরা যদি আবার পুরনো সংস্কৃতিকেই জায়গা করে দিই, তাহলে নতুন করে স্বপ্ন দেখবো কি করে, সেই পুরানো স্বপ্নটিই বার বার দেখে যেতে হবে।

বর্তমানে সরকারের সমালোচনা আমরা করছি, পাশাপাশি সরকার যে , এন্টি করাপশন ইমেজ গড়ে তুলেছে ,তাকেও আমরা সাধু বাদ জানাচ্ছি। আমাদের চাওয়ার সাথে , আমাদের সংগ্রাম ও সাফল্যের যাতে বৈষম্য না ঘটে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমরা বড়ো কোনো পরিকল্পনা, প্রস্তুতি ছাড়া আন্দোলন করে আবার জঙ্গলে ফিরে যেতে চাইনা!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.