আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হরতাল নিকৃষ্ট, ঘৃণিত একটি নাম। শতধিক তারে ....

আমার ভিতর তুমি থাকো আমি কোথায় রই, আমি না থাকিলে তোমার থাকার জায়গা কই?

সময়টা 1999 সালের সেপ্টেম্বরে। তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় (আমার কাছে ওইসব ফালতু মনে হয়) সেদিন বিরোধী দল বিএনপি হরতাল ডেকেছিল। গ্রাম থেকে আমার এক বন্ধু ঢাকা এসেছে তার অসুস্থ চাচাকে দেখতে। শাহবাগ পিজি হাসপাতালে ওর চাচাকে ভর্তি করানো হয়েছে।

হরতালের জন্য সারা শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। সকাল দশটায় মোবাইলে খবর এলো বন্ধুর চাচার অবস্থা মুমুর্ষ। হাসাপাতালে যেতে হবে। দ্রুত দুই বন্ধু পিজির উদ্দেশ্যে রিকসা নিয়ে রওনা দিলাম। পেঁৗছে দেখি চাচার জন্য রক্ত লাগবে।

রক্তের জন্য ছুটোছুটি করে দুই বন্ধু যখন হাসাপাতাল থেকে বের হলাম তখন দুপুর 12টা। শাহবাগে পুলিশ আর পিকেটারের চরম উত্তেজনাকর মুহুর্ত অবলোকন করতে করতেই আরো রক্তের চিন্তা মাথায় নিয়ে জীবন বাঁচাতে আর সকলের সঙ্গে দৌড়াচ্ছি আমরা দুই জনও। কোনোরকম মৎস ভবন পার হয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম আগে বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিই। তারপর রক্তের সন্ধানে বের হবো। বাসা ছিল মতিঝিলে।

রাস্তায় রিকসা নেই। তাই বাধ্য হয়েই কাকরাইল হয়ে হাঁটতে শুরু করলাম। বিএনপি অফিসের সামনে যখন আসলাম তখন আমাদের 100 গজ দুরত্বে একটি ককটেল বিস্ফোরিত হলো। গনহারে ধরা শুরু করলো পুলিশ। নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে চললেও কিছু বুঝে উঠার আগেই পুলিশ আমাদের দুইজনকে ডাকলো।

সামনে গেলে বললো তাদের গাড়িতে উঠতে। কারন জিজ্ঞেস করতেই তাদের মধুর গালি হজম করতে হলো। বাধ্য হয়ে তাদের গাড়িতে উঠলাম। ভেতরে এক কনেস্টবল বললো কিছু হবে না। আপনাদের থানায় নিয়ে ছেড়ে দেবে।

কিন্তু আমরা কী করেছি? সেই লোকটি আবার বললো-উপরের নির্দেশ অনেকগুলি এরেস্ট দেখাতে হবে। আমাদের কিছুই করার নাই। (সম্ভবত লোকটি বিএনপি সাপোর্ট করতো, তার সঙ্গে যোগাযোগ করে পরে তার সত্যতাও জেনেছি)। মতিঝিল থানায় (বর্তমানে পল্টন থানা) নিয়ে লকআপে অন্যান্য পিকেটারদের সঙ্গে আমাদেরকেও রাখা হলো। বুঝতে পারছিনা কী করবো।

এক কনেস্টবলকে 100 টাকা দিয়ে মতিঝিল থানার তৎকালীন আওয়ামী লীগের এক নেতাকে ফোন করালাম। তিনি এসে দেখেন আমাদের নামে কেইস ফাইল হয়ে গেছে। আমরা নাকি বোমাবাজি করছিলাম। সবচেয়ে অবাক হলাম আমি আর আমার বন্ধুকে 4 ও 5 নং আসামী দেখানো হয়েছে। রাত 12টায় সেই নেতার কল্যানে আমাদের মামলা বাতিল করে থানা থেকে বের হলাম।

যখন শুনলাম ওইদিনই বিকেল পাঁচটায় বন্ধুর চাচা হাসপাতালে মারা গেল প্রচন্ড কষ্টে বুকটা ভরে গেল। চাচাকে আর দেখা হলোনা। হাসপাতাল থেকে আমাদের খবর না পেয়ে তার লাশ দাফন করতে সরাসরি গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেদিন কী অপরাধ ছিল আমাদের? উত্তর দেবেন কী বিশিষ্ট রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবিরা?


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.