আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পলিটিক্স ও পলিথিন সমাচার

i am fine still now.

কুমিল্লা ইস্টার্ন মেডিক্যাল কলেজে পড়ার দুর্ভাগ্য(কেবল আমার বেলায়!) হয়েছিলো একবার। কিছুদিন পর যথারীতি 'ডাক্তার হব না, ইঞ্জিনিয়ার হব' ভাব নিয়ে সে কলেজ ছেড়েও দিয়েছিলাম। তো তখনকার আমার এক ক্লাসমেটের একটা কথা আজ খুব মনে পড়ছে। ও বলেছিলো, ''পলিটিক্স অনেক আগে থেকেই আমাদের দেশে পলিথিনের মত সস্তা টপিক। '' আর এতদিনে এখন তো মনে হয় তার মতে ''পলিথিনের মতই নিষিদ্ধ'' করার অবস্থায় এসে গেছে।

তো আমি যাইহোক নিষিদ্ধতা নিয়ে কোন কথা বলতে নারাজ। কেননা, পলিটিক্স এবং পলিথিন প্রতিটা মানুষের চেতনায় চিন্তায় স্থান করে নিয়েছে জান্তে-অজান্তে। এ ব্যাপারেই একটা ঘটনার উল্লেখ করছি। বাবার চাকরীর সুবাধে ও নিজের লেখাপড়ার তাগিদে বিভিন্ন জায়গায় থাকতে হয়েছে আমাকে। তাই গ্রামের বাড়ী যাওয়াটা আর একসময় ফ্রিকোয়েন্ট থাকলো না।

অনেকদিন পর যখন গ্রামে এলাম, ভিমড়ি খেলাম। কয়েকশ' অপিরিচিত বাচ্চাকাচ্চা, কয়েকডজন অপরিচিত বউ, জামাই। আমার রাজ্যে আমিই প্রজা । পরিচিত এক দাদু যে আর কোনদিন বিয়ে করবে না বলেই ধরে নিয়েছিলাম তার ইতোমধ্যে দুটি ছেলেমেয়ে এবং আরেকজন অন ট্র্যাকিং। আজীবন বাচ্চাকাচ্চা সাইজকারক ও বাচ্চাবিদ্বেষী এই লোক হঠাৎ উদাত্তভাবে বাচ্চা প্রস্তুতকারক হিসেবে আত্মপ্রকাশের রহস্য (অনেকটা 'লাক্স বিউটি সোপ' এর রহস্যের মত) জানতে চাইলে তিনি জানালেন, -বুঝলি ভাই, বিয়া যেমন তেমন; ভাবছিলাম বাচ্চাকাচ্চা নিবো না।

বউয়ের জ্বালায় একটা বাচ্চা নিতে রাজী হলাম। বাচ্চা হলো মেয়ে। বউকে শিক্ষা দেওয়ার কথা চিন্তা করেই নাম রাখলাম 'ইতি'। ইতি মানে বাচ্চা নেওয়ার ইতি। কিন্তু কয়েক মাস যেতে না যেতেই বউয়ের ঘ্যানর ঘ্যানর নতুন রূপ পেলো।

তার শখ ছিলো ছেলের, মেয়ে হয়েছে তাতেও খুশি। কিন্তু তার আরেকটা ছেলে চাই। আমার তো আক্কেলগুড়ুম! বলে কী! এই বয়সে মেজাজ আগের চে'ও তিরিক্ষি থাকে। বাচ্চাকাচ্চা এখন আগের চে বেশী বিরক্তিকর লাগে। ইতোমধ্যে বউ বাপের বাড়ী চলে গেলো রাগ করে।

দুইদিনের মাথায় শ্বশুর শ্বাশুরী আর আমার বউয়ের এক বড় বোন এলেন সমন নিয়ে। ভাবটা এমন যে, তুই ছেলে হওয়াবি না মানে? তোর বাপ ... ... ... ইত্যাদি ইত্যাদি। তো, গ্রামে যেমনটা হয়ে থাকে; তুই তোর ঘরের খবর যতটুকু জানবি, তা কেবল শিরোনাম মাত্র। ত্রিশ সেকেন্ডের মাথায় বিস্তারিত খবর জানতে পাবি সারা গ্রামময়। আমার বেলায়ও তাই।

ঘটনা এমন দাঁড়ালো যে, রাগ ধরে গেলো। কাউকে জানতে দিলাম না রাগের কথা। 'নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি' ভাব করে আবার বাচ্চা নেওয়ার সীদ্ধান্তের কথা জানালাম বউকে। সব ঠিকঠাক হয়ে এলো, বউও ফিরে এলো। বাচ্চা হলো, এবার ছেলেই হলো।

বউকে এবার উচ্চতর শিক্ষার উদ্দেশ্যে ছেলের নাম রাখলাম 'অনন্ত। ' বউ আমার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলো। আমি খিক খিক করে হাসলাম। অনন্তের আভাস পেয়ে গেছে বেচারা। হা হা হা।

'' তারপর আর যাওয়া হয়নি গ্রামে, জানি না ইতি আর অনন্ত তারপর আর কতজন ভাইবোন পেয়েছে। বড় পলিটিক্সের ক্ষয় ক্ষতির খবর পত্রিকায় আসে, ছোট পলিটিক্সের ক্ষতি যত বড়ই হোক আসে না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।