আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অর্থনৈতিক স্থিতির জন্য চাই রাজনৈতিক সমঝোতা: মির্জ্জা আজিজ

বিরোধী জোটবিহীন নির্বাচনের পর বাংলাদেশ কোন পথে যাচ্ছে- তার বিশ্লেষণে শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি এই মত প্রতাশ করেন।

মির্জ্জা আজিজ বলেন, “আমরা সবাই জানি সমাধান কী? কিন্তু বাস্তবায়ন করি না। স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্যে সমঝোতার বিকল্প নেই। কিভাবে সমঝোতা হবে, তা বের করতে হবে। এ বিষয়ে ঐকমত্য সৃষ্টি করতে হবে।


ঘটনাবহুল দশম সংসদ নির্বাচনের পর একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা করে ঐকমত্যের ওপর জোর দেন শিক্ষক-কলামনিস্ট সলিমুল্লাহ খানও।

তাদের সঙ্গে এই আলোচনা সভায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমও।

মির্জ্জা আজিজ বলেন, দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে প্রবৃদ্ধির হার ধরে রাখতে দরকার বিনিয়োগ। বিনিয়োগের এক পঞ্চমাংশ আসে সরকারি খাত থেকে। বেসরকারিখাত থেকে বাকি চার পঞ্চাংশ বিনিয়োগ হয়।

“বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের জন্য দরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, আইন শৃঙ্খলা, সুশাসন ও অন্যান্য ধাপ। ”

নির্বাচনের পর বিদ্যমান স্থিতিশীল অবস্থা কতদিন থাকবে তা নিয়েও শঙ্কা প্রকশ করেন মির্জ্জা আজিজ।

“হরতাল নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেই যে হরতাল হবে না, তার নিশ্চয়তা কে দেবে?”

এই সভায় বক্তব্যে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা বলেন, দশম সংসদ নির্বাচনে এসে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ধারায় ছেদ ঘটেছে।

নিজের দায়িত্ব পালনের সময়ে ইসিতে ব্যাপক সংস্কারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শামসুল হুদা বলেন, “দশম সংসদ নির্বাচনে ব্যালট পেপারে স্ট্যাম্পিং হয়েছে, সেই সঙ্গে সহকারি প্রিজাইডিং কর্মকর্তার ওপরে হামলা হয়েছে।

“ভালো নির্বাচনের পথে এটা ব্যত্যয়।

ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার ওপর হামলা মানে রাষ্ট্রের ওপর হামলা। এটা খারাপ নজির হয়ে থাকল। ”

যে ধরনের সরকার থাকুক না কেন, স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

তবে ইসি শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে কমিশনারদের সংখ্যা বৃদ্ধি সমস্যা আরো বাড়িয়ে তোলে বলে তার অভিমত।

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইসি সংস্কারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতাও বড় কাম্য বলে মত দেন শামসুল হুদা।

“নির্বাচন কমিশন এককভাবে কিছু করতে পারে। তার সঙ্গে ১৫টি সংস্থা সহযোগিতা করে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলকে সহযোগিতা করতে হবে। ”

ভোটের পরে ফল মেনে নেয়ার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বানও জানান তিনি।

সভায় তার আগে বক্তব্য সলিমুল্লাহ খান বলেন, “নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এবার সহিংসতা হয়েছে।

এক্ষেত্রে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার মাত্রা বাড়িয়েছে। এখন ভোটের আগে শুধু নির্বাচন নিয়ে একটি পদ্ধতি চালু করা যায় কি না, ভাবতে হবে। ”

সিপিবি সভাপতি সেলিম জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের বিষয়ে আওয়ামী লীগকে অবস্থান স্পষ্ট করতে বলেন।

“বিএনপি তো পরিষ্কার করেছে, জামায়াত তাদের সঙ্গে থাকবে। আওয়ামী লীগ যদি অগ্রসর না হয়, তাহলে আরো বিপদ বাড়বে।

আওয়ামী লীগ কেন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে না?”

জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়ে সলিমুল্লাহ খান বলেন, সন্ত্রাসবাদীর সঙ্গে জোট করলে তাদেরও সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে।

“জামায়াত সন্ত্রাসবাদী দল হিসেবে নিষিদ্ধ হলে, এমন নিষিদ্ধ দলের সঙ্গে যারা জোট করবে তারাও একইভাবে চিহ্নিত হবে। এসব বিষয়ে কনসেনসাসে করতে হবে। ”

এর আগে বক্তব্যে দশম সংসদ নির্বাচন রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধ হয়নি দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এই অবস্থা চললে জনগণের ভোটাধিকার ফিরে আসবে না।

বিরোধী জোটবিহীন নির্বাচনের দিকে ইঙ্গিত করে আমীর খসরু বলেন, “এ নির্বাচন সাংবিধানিকভাবে সিদ্ধ, কিন্তু রাজনীতিকভাবে সিদ্ধ হয়নি।

কোনোভাবেই তা জনপ্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন নয়।

“সবার অংশগ্রহণে ভোট নিশ্চিত করতে না পারলে নির্বাচনে ভোটাধিকার থাকবে না। ”

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানান ভোট বর্জন করে আসা বিএনপির এই নেতা।

সভায় বিএনপি নেতার আগে বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, “একটি নির্বাচন হয় ৫ বছরের জন্য।

সরকার ৫ বছর থাকার চেষ্টা করে।

“আমরা কখনো বলিনি, সংলাপের প্রয়োজন নেই। অবশ্যই একাদশ সংসদ নির্বাচন হবে, এ জন্য আলোচনা হবেই। ”

দশম সংসদ নির্বাচনে সব দলকে আনতে আওয়ামী লীগের চেষ্টা ছিল জানিয়ে তোফায়েল বলেন, “দুর্ভাগ্য সেটা হয়নি, তবে আমরা চেষ্টার ত্রুটি করিনি। ”

নতুন সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল বলেন, রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে দেশের অগ্রগতি নিয়ে কাজ করবেন তারা।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিক, কূটনীতিক, ব্যবসায়ী, নারীনেত্রীরা এক হয়েছেন।

নারীনেত্রী মহিলা পরিষদের সভানেত্রী আয়েশা খানম, নিজেরা করি’র প্রধান খুশি কবির, সাবেক কূটনীতিক নাসিম ফেরদৌসও রয়েছেন এই আলোচনায়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এই আলোচনায় সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবীর, একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবুও অংশ নিচ্ছেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ওয়েবসাইটে এই অনুষ্ঠান দেখা যাচ্ছে।

সরাসরি সম্প্রচার করছে একাত্তর টেলিভিশনও।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।