আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিএনপিকে এখন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে

সরকারবিরোধী আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করাই বিএনপির জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ। তার মতে, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপিকে এখন জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। অতীতের আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা নিয়ে অনেকের প্রশ্ন ছিল। তাছাড়া ওইসব কর্মসূচি ছিল অনেকটাই সহিংস। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দিকে তাকিয়ে বিএনপিকে এখন শান্তিপূর্ণ গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

সে জন্য বাস্তবতার নিরিখে দলকে সুসংগঠিত করা উচিত।

অবশ্য বিএনপি ইতোমধ্যেই সেই দল গোছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে। গতকাল বিকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় বিএনপির চলমান রাজনীতি বিষয়ে বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এমাজউদ্দীন আহমদ নিজের মতামত তুলে ধরেন। তার ভাষায়, বিএনপির নেতৃত্বকে আরও তারুণ্যনির্ভর করা উচিত। বয়োবৃদ্ধদের সামনে রেখে রাজপথের আন্দোলন করা খুবই কঠিন।

বিএনপি এখন তারুণ্যনির্ভর রাজনীতির দিকেই যাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণ এই শিক্ষক বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতি ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। হিংসা, প্রতিহিংসা, সংঘাতের পথে এই দুই দলের রাজনীতি। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৮টি ব্যাংক হিসাব বন্ধ রাখা প্রতিহিংসার রাজনীতিরই বহিঃপ্রকাশ। কারণ, একই সময়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ ছিল।

তার অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হলেও বন্ধ শুধু বেগম জিয়ার অ্যাকাউন্ট। এমনকি প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের নামে সাড়ে ৭ হাজার মামলা প্রত্যাহার করা হলেও জিয়া পরিবারসহ বিএনপি নেতা-কর্মীদের কোনো মামলাই প্রত্যাহার করা হয়নি। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে আরও নতুন মামলা দেওয়া হচ্ছে। এগুলো মূলত রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি বড় কোনো সহিংস কর্মসূচিতে যায়নি।

যে কয়েকটি কর্মসূচি দিয়েছে, সেগুলোর সবই ছিল শান্তিপূর্ণ। দেশের মানুষও অহিংস আন্দোলন কর্মসূচি পছন্দ করে। বিএনপির ভবিষ্যতে এ বিষয়টি মাথায় রেখেই আন্দোলন কর্মসূচির চিন্তাভাবনা করা উচিত। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্প্রতি লন্ডনে দুই দফায় দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক ও প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দেওয়া বক্তব্যের সপক্ষে দালিলিক যুক্তি তুলে ধরেছেন তারেক রহমান। একইভাবে 'বঙ্গবন্ধু' শেখ মুজিবুর রহমানের প্রধানমন্ত্রীর বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলার সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে।

চলমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের বক্তব্য না দেওয়াই উচিত ছিল। কিন্তু বেশ কয়েকদিন ধরে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা যেভাবে তারেক রহমানকে জড়িয়ে নেতিবাচক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন তাতে তারেক রহমান মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকতে পারেননি। তাই হয়তো তারেক রহমান এসব বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে থাকতে পারেন।

তবে বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের লেখা বই 'ইমার্জেন অব বাংলাদেশ' এর ২২৭ পৃষ্ঠায় জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক ও প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে অসুস্থ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা চলছে মন্তব্য করে বিশিষ্ট এই বুদ্ধিজীবী বলেন, দেশে এখন সুষ্ঠু রাজনীতির পরিবেশ নেই।

চারদিকেই চলছে অসুস্থ রাজনীতির প্রতিযোগিতা। এ থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে। দেশ ও জনগণের কল্যাণে রাজনীতিবিদকে কাজ করতে হবে। জাতীয় ইস্যুতে সব রাজনৈতিক দলকে একই প্লাটফর্মে দাঁড়াতে হবে। তবেই বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.