আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জোরে হাঁটুন....জানুন এর উপকারিতা

সূত্র হতে পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করতে পারেন আমাদের অনেকেরই জীবন-যাত্রায় এখন কায়িক শ্রমের স্থান নেই বললেই চলে। এর ফলাফলটাও দেখা যাচ্ছে ইতোমধ্যেই। ডায়াবেটিস, ব্লাডপ্রেসার, স্ট্রোক ও হার্টের রোগে আক্রান্ত্ম আজ আমরা অনেকেই। একটু কায়িকশ্রম-নিদেনপক্ষে একটু হাঁটা আমাদেরকে এ সকল রোগের হাত থেকে অনেকটাই রক্ষা করতে পারে। হাঁটার জন্য কোন যন্ত্রপাতির প্রয়োজন নেই।

এতে স্বাস্থ্য ঝুকিও কম। সাধারণতঃ বয়স্ক কারোরই হাঁটতে বাধা নেই। তবে আগে থেকেই কারো হার্টের রোগ, বাত, হাঁপানী ইত্যাদি থাকলে হাঁটা শুরু করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া চাই। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা চাই। ৪০ থেকে ৬০ মিনিট হলে আরো ভালো।

সকাল/ বিকাল যেকোন সময় আপনি হাঁটতে পারেন-আপনার সুবিধা মতো। একজোড়া হাঁটার জুতো পায়ে দিয়ে বেড়িয়ে পড়-ন রাস্ত্মায়। খোলা মাঠ পেলে তো খুবই ভালো। হাঁটার রাস্ত্মাটা গোলাকার বা বর্গাকার হলে ভাল হয়। তাহলে হাঁটবেন ঠিকই কিন্তু বাড়ী থেকে বেশী দূরে যাবেন না।

শীতের দিনে একটু বাড়তি কাপড়-চোপড় পরে নিন যাতে ঠান্ডা না লাগে। আস্ত্মে আস্ত্মে হাঁটার গতি বাড়ান। দৃষ্টি থাকবে সামনের দিকে। হাত দুটো দুই পাশে দোলবে। এমন ভাবে হাঁটুন যাতে আপনার সামনের লোকটাকে ধরে ফেলতে পারেন।

হার্ট রেট বাড়তে দিন। এক সময় দেখবেন আপনি ঘেমে গেছেন, হার্টরেট ১২০ এর কোঠায়, শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হচ্ছে। কথা বলতে পারছেন ঠিকই কিন্তু গান গাইতে পারছেন না। এভাবে হাঁটতে থাকুন পুরো সময়টা। শেষের দিকে গতি আস্ত্মে আস্ত্মে কমিয়ে বাড়ী ফিরে আসুন।

কত পা হাঁটলেন তাও মাপতে পারেন। একটা ‘পেডোমিটার’ কিনে নিলেই হ’ল। দেখতে অনেকটা মোবাইল ফোনের মতো। পকেটে রেখে দিন। কত পা হাঁটলেন তা দেখা যাবে এতে।

যদি ২৪ ঘন্টায় ১০,০০০(দশ হাজার) পা হাঁটতে পারেন তা হলে খুবই ভালো। সময় ধরে হাঁটা ছাড়াও আপনি হাঁটতে পারেন সারাদিনই। অফিসের কাছাকাছি গাড়ী থেকে নেমে বাকী পথটুকু হেঁটে যান। লিফ্‌ট ব্যবহার না করে ৪/৫ তলা পর্যন্ত্ম হেঁটেই উঠা-নামা করুন। প্রতিদিন বাজার করাটা হেঁটে হেঁটেই সেরে নিন।

ধারে-কাছে বেড়াতে গেলে হেঁটে-হেঁটে যান। তাহলেই দেখবেন রাতে ঘুমুতে যাওয়ার আগে ১০,০০০(দশ হাজার) পা হাঁটা হয়ে গেছে। রাতে ঘুম ভাল হবে। শরীরের খারাপ চর্বির মাত্রা কমে যাবে, ভাল চর্বির মাত্রা বাড়বে। ফলে হার্ট এটাকের ঝুঁকিও কমে যাবে।

প্রতিদিন হাঁটলে প্রায় ২০০ কিলো-ক্যালরি খরচ হয়। এতে শরীরে জমা অতিরিক্ত চর্বি পুড়বে-ওজন কমবে। স্লিম থাকার জন্য পয়সা খরচ করে জিমে যাওয়া লাগবে না। হাঁটার সময় মাংসপেশী গুলির সঞ্চালণের ফলে কোষগুলির গ্লুকোজ ব্যবহার বেড়ে যায়। শরীরের ইনসুলিন রস বেশী ব্যবহূত হয়।

এর ফলে রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ করা যায় সহজেই। হাঁটলে সারা শরীরে বেশী রক্ত সঞ্চালিত হয়। হার্ট ও মস্ত্মিষ্ক বেশী করে অক্সিজেন পায়। হার্ট এটাক কমে যায় এবং মস্ত্মিষ্কের কর্ম ক্ষমতা বেড়ে যায়।

আপনি অনেক কিছু তখন মনে রাখতে পারবেন। হাঁটলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। ষ্ট্রোক ও কিডনী ফেইলুর এর মতো মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। হাঁটা মনকে উজ্জীবিত করে। মানসিক চাপ,উদ্বেগ ও বিষন্নতা কমায়।

সকালের হাঁটা আপনাকে সারাটা দিন ফুরফুরে মেজাজে রাখবে। আপনি হয়তো ভাবছেন আপনার রোজকার ব্যাস্ত্ম সিডিউল থেকে ৩০-৪০ মিনিট খামাকা নষ্ট করছেন। তা কিন্তু নয় মোটেই। হেঁটে হেঁটেও আপনি কাজ করতে পারেন। সারাদিনের কর্ম-পরিকল্পনাটা হাঁটতে হাঁটতেই সেরে ফেলুন না।

দিনশেষে দেখবেন সারাটা দিন কত কাজে লাগাতে পেরেছেন। অনেক সমস্যার সমাধান আপনি হাঁটতে হাঁটতে বের করে নিজেই অবাক হয়ে যাবেন। হাঁটা বোরিং লাগছে? কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে একসাথে হাঁটুন। চলার পথে আপনার পছন্দের গানগুলি শুনতে পারেন একটার পর একটা মোবাইল ফোন বা এমপি-৩ পেস্নয়ার থেকে। নিয়মিত হাঁটলে আপনার আয়ু বাড়বেই।

গবেষণা করে এর প্রমান পাওয়া গেছে। আপনি দ্রুত বুড়িয়ে যাবেন না। শরীরটা একদম ফিট থাকবে। লেখক :ডা . দীপক লাল বণিক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.