আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটা ছেলে আর একটা মেয়ের গল্প----হয়ত জীবন থেকে নেওয়া কোনো ঘটনা (৭ম সংস্করণ)

রাজনীতিবীদদের ঘৃণা করি--- একটা ছেলে আর একটা মেয়ের গল্প----হয়ত জীবন থেকে নেওয়া কোনো ঘটনা (৭ম সংস্করণ) ছেলেটি মেয়েটিকে চিনত বোনের বান্ধবী হিসেবে। মেয়েটি তখন স্কুলের গন্ডী পার হয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছে। ছেলেটি কলেজের গন্ডী পার হবে। মাঝে মাঝে মেয়েটি ছেলেটির বাসায় আসে ছেলেটির বোনের সাথে। ছেলেটি মেয়েটিকে দেখেই দৌড়ে পালায় অন্য ঘরে।

এমনই লাজুক ছিল ছেলেটা। তখন ভালবাসা জমাট বাঁধেনি শুধু তারল্য ছিল মনে হয় সে ভালবাসায়। মেয়েটি ভর্তি হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছেলেটি এরই মাঝে বাইরে পাড়ি জমিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মায়াকে ছিন্ন করে বিদেশি শিক্ষায় শিক্ষিত হতে। মেয়েটি ছেলেটির বোনের কাছে ছেলেটির খোঁজ নেয়।

অনার্স শেষ হয় হয় এমন সময় ছেলেটি অনেক দেশ ঘুরে ফিরে আসে নিজ দেশে। ছেলেটি মেয়েটিকে দেখেনা তাও ৬ বছর হয়ে গিয়েছে। একদিন মেয়েটির ফোন নম্বর পায় ছেলেটি। লাজুক ছেলেটি লজ্জা ভুলে ফোন নম্বর টিপে ইয়েস বাটনে হাত রাখে । ফোনটা যে মেয়েটির ভাইয়ের জানা ছিল না ছেলেটির।

ছেলেটি ভয়ে ফোন রেখে দেয়। এবার এস এম এস দেওয়া শুরু করে। Are You.........? Please reply.এভাবেই মেসেজের পর মেসেজ পাঠাতে থাকে ছেলেটি। কোনো উত্তর আসেনা। হঠাৎ একদিন ছেলেটির ফোনে এস এম এস আসে-- Yes, I am...............but who are you? Do I know you? ছেলেটি মেয়েটিকে এস এম এস এ জানায় যে সে কথা বলতে চায়।

মেয়েটি সাড়া দিলে ছেলেটি ফোন করে। মেয়েটি এটা জানার জন্য উদগ্রীব হয়ে যায় যে, ছেলেটি কে। সে চিনেনা ছেলেটিকে। লাজুক ছেলেটিও কিভাবে যেন দুষ্টুমিতে মেতে উঠে মেয়েটির সাথে। নাম বলেনা ছেলেটি।

ফোন কেটে দেয় ছেলেটি। মেয়েটি ফোন করে, আপনি কে বলেনতো। প্লিজ। মেয়েটিকি তাহলে ছেলেটিকেই এক্সপেক্ট করছে? সেও কি ছেলেটির মত অপেক্ষায় ছিল? যদিও কখনও কোনো ভালবাসার কথা বলা হয়নি মেয়েটিকে, করা হয়নি কোনো কমিটমেন্ট। ছেলেটি একটু পরে নিজের পরিচয় দেয়।

মেয়েটি উচ্ছ্বাসিত হয়। মেয়েটির নিজের ফোন ছিল না। তাই সন্ধ্যার পর শুরু হত দু'জনার এস এম এস এর খেলা। ছেলেটি দেখা করতে চাইল। মেয়েটি রাজি হয়।

ছেলেটি একটু ব্যাকুল কারণ আর ২ মাস পরই আবার তার ফ্লাইট। ১ মাস এস এম এস আর ফোনালাপের পর তারা দু'জন দেখা করল। লাজুক ছেলেটি বাচাল হয়ে গেল আর যার কথার তোড়ে সবাই উড়ে যেত, যার দুষ্টুমিতে সবাই পাগল- সেই মেয়েটি চুপচাপ হয়ে থাকল। সারাট দিন ঘুরাঘুরি করে কাটানোর পর মেয়েটিকে তার বাসার কাছে নামিয়ে দেয় ছেলেটি। মেয়েটি বলে, আসি ভাইয়া!! ছেলেটির মন খারাপ হয় "ভাইয়া" ডাক শুনে।

পরদিন আবার দেখা করে ছেলেটি। মেয়েটির সাথে ভার্সিটি পর্যন্ত। এভাবেই ছেলেটির রুটিন হয়ে যায়। ছেলেটি মেয়েটিকে ভার্সিটি পর্যন্ত নিয়ে যায় আবার আসার সময় একসাথে আসে। কেউ কাউকে তখনও ভালবাসার কথাটি বলেনি।

সকালে একবার আর বিকালে একবার দেখা না করলে ছেলেটি পাগল হয়ে যেত। আস্তে আস্তে সেটা রুটিনে পরিণত হল। গ্রামীন ফোন কোম্পানী এই দু'জনার ফোনালাপে বড়ই সন্তুষ্ট! ছেলেটির হাতে আছে আর মাত্র ১মাস। একদিন ছেলেটি মেয়েটিকে দুপুর বেলা নিয়ে যায় কোনো এক পার্কে। মেয়েটি পড়েছিল পিংক কালারের ড্রেস, যেহেতু ছেলেটি ঐ কালার পছন্দ করত।

ছেলেটি কোনো ভালবাসার কথা বলেনা। সে সরাসরি মেয়েটিকে বলে, I want to marry you. Will you marry me? মেয়েটি লজ্জায় কিছু বলতে পারেনা। ভালবাসার শুরু এখান থেকেই। মেয়েটি তার বাসায় জানানোর পর একটু বাঁধা আসে। ছেলে-মেয়ে দু'জনেই চিন্তিত।

মেয়েটির বাবা না থাকায় তার চাচারা তার অভিভাবক। তারা থাকেন আমেরিকায়। ছেলেটির ছবি আর বায়োডাটা পাঠানো হয়। তারা মতামত দেন। ছেলেটির ফ্লাইট অক্টোবরের ১০ তারিখে।

বিয়ের তারিখ অক্টোবরের ৭। খুব বেশি জাঁকজমক হয়না বিয়েতে। কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের পর ছেলেটি চলে আসে তার বাড়িতে, মেয়েটি তার বাড়িতে! বাসর হলোনা তাদের। সেই রাতে ছেলেটি আর মেয়েটি সারারাত ফোনে কথা বলে আর কাঁদে। এভাবেই ১০ তারিখ চলে আসে।

ছেলেটি চলে যায় দূরদেশে। এবার আর ছেলেটি মেয়েটিকে ছেড়ে থাকতে পারেনা। ১ বছর পরেই ছুটে আসে। মেয়েটিকে নিয়ে আসে নিজগৃহে। শুরু হয় তাদের সংসার।

টুকটাক ঝগড়া ব্যতীত কয়েকটা বছর তারা পার করল হাসি-আনন্দে। তারা দু'জনে খুব সুখী। ২০১২ তে তাদের ঘর আলো করে এলো একটা ফুটফুটে রাজকন্যা। রাজকন্যাকে নিয়ে তাদের সুখের সংসার। আজ সেই ছেলে আর মেয়েটির ৭ম বিবাহবার্ষিকী।

তারা সবার কাছে দোয়াপ্রার্থী। (প্রতিবছর এইদিনে গল্পের সময়টা পরিবর্তিত হয়, হয়ত যোগ হয় আরেকটি চরিত্র) ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.