অবশেষে রঙ্গিন স্বপ্ন জন্মদিনের ভেলেইনটাইন
আমরা বাঙালীরা মিস্ করতে ওস্তাদ। যখন কেও চলে যায় তখন আমরা তাকে পেতে অস্থির হয়ে উঠি। যেমন হূমায়ূন স্যার চলে যাবার পর তার প্রতি আমাদের ভালোবাসা অনেক গুন বেড়ে গিয়েছে,মনে হচ্ছে স্যার থাকলে সব রঙিন লাগতো। মিস্ করার গুনটা আমার মধ্যেও বেশ প্রকট, ও আমাকে প্রায় বলত, ‘যে চলে গেছে তার জন্যে না ভেবে যে আছে তাকে ভাবো’। মিস্ দুই ধরনের,ইনফিনিট মিস্,যে মিস্ কখনো শেষ হয়না,স্যারকে আজীবন মিস্ করবো, ও কেও করবো।
ওন্নটা ফিনিট মিস্,যেখানে মিস্ শেষ হবার একটা আশা থাকে,আমি আপাতত ভালো নেট স্পীড কে মিস্ করছি।
মজা করে তাচ্ছিল করার একটা বদ অভ্যাস আমার রয়েছে। ওর সাথে এই ব্যাপারটা একটু বেশী হয়ে গিয়েছিলো,তাই এখন আমি নর্থ সাউথে আর ও ইস্ট ওয়েস্টে। হুটহাট রাগ করাটাও আমার আরেকটা সমস্যা। ঐ দিন ইফতারের পর পরই আমি বের হয়েছিলাম তাও দেরি হয়ে গেলো,আর সিএনজি করে ও চলে এসছিলো বলে আমার জন্যে বেশ কিছুক্ষন ওকে ওয়েট করতে হলো।
এতেই রাগ হয়ে গেলাম,কেনো সিএনজি করে আসতে গেলো। ও আমার হাত ধরে বললো, ‘আজ তোমার জন্মদিন,আজ অন্তত রাগ করোনা’। আমি আবার টাচ্ এর ব্যাপারে বেশ টাচি। রাগ গেলো কমে।
BFC তে বসলাম খুব আগ্রহ নিয়ে,আগেই জেনে গিয়েছিলাম বেশ কিছু সারপ্রাইজ রয়েছে।
একে একে বের হতে থাকলো। তখন আমার ২৩,কোনো জন্মদিনে এত্তো গিফ্ট পাইনি,অবাকের উপর অবাক। হঠাৎ বার্থডে কার্ডটার উপর নজর পড়ল,ভয়ানক অবাক হলাম,বিশাল কার্ড,লিখা ‘বি মাই ভেলেইনটাইন’, একটু হেসে বললাম ‘আজ আমার বার্থডে বেবি’। ও বললো ‘আমার কনো কার্ড লাইক হয়নাই,ছোটো ছোটো কার্ড,তাই এটা কিনলাম’। ও খুবই উদার,এটার সাথে আমার একটু কম মিলে।
তবে একটা সময় আমাদের অনেক মিল ছিলো,আমরা খুব হাসতাম,অনেক গান পাগল,ব্রাজিল সাপোর্টার,প্রগতিবাদি আর কিছুটা ওয়াইল্ড । অভিমান করাতেও ওর উদারতা ছিলো বেশ। আমার মা বলতেন ‘বাবা কখনো আভিমানি মেয়ে বিয়ে করিস না’,মা আরো বলে ‘মেয়েদের কখনো কষ্ট দিস্ না’। মা বোঝেন মেয়েরা তুলার মত, নরম,বালিস বন্দী হয়ে আরাম দিবে,বাধ্য থাকবে,আর বালিস ছিড়ে গেলে ঐ তুলাই উড়ে বেড়াবে,জ্বালিয়ে মারবে,অবাধ্য হবে।
তবে ও কিছুটা কষ্ট সহ্য করতে পারতো,এটা পড়ে ও হয়তো আমার নামে মামলা করে দিবে, বলবে, কিছুটা না,অনেক কষ্ট সহ্য করেছি।
কষ্ট নিয়ে মেঝো ভাইয়ার একটা উদাহরণ দিতে ইচ্ছে করছে, ভাইয়া বলতেন ‘তুই ৫ ঘন্টা পড়লে 4.7 পাবি, আর যদি আর একটু বেশি কষ্ট করে ৭ ঘন্টা পড়িস তবে 5.00 পাবি’ । আমার ঐ একটু বেশি কষ্ট করা হলোনা আর প্লাসও পাওয়া হলোনা,আফসোস। । তবে এখন আর ৭ ঘন্টা পড়তে হয়না। গ্রুপ স্টাডি,৪-৫টা বই,ইন্টারনেট মিলিয়ে কাজটা হয়ে যায়।
যাই হোক,এখন হয়তো ও বুঝবে কেনো বললাম একটু কষ্ট সহ্য করেছে, আর একটু কষ্ট করলে হয়তো এখন আমরা দুই জন দুই জায়গায় থাকতাম না। আবার মামলা খাবো,বলবে আমি শুধু ওর দোষ ই দিতে জানি।
ও ভালো মানুষ,আশা করি কোর্ট পর্যন্ত ও যাবেনা। খুব আদুরে তো তাই হয়ত বেশি কষ্ট সহ্য করতে পারেনা। আমার এক বন্ধু বলতো GF হিসেবে আদুরে মেয়েরা ভালো অপশন না,এরা নাকি খুব বেশি সেনসেটিব হয়।
মারামারি সহ্য করতে পারবে এমন মেয়ে খুজেঁ পাচ্ছিনা,তাই একলাই চলতে হচ্ছে।
কেউ কেউ একলা থাকার,ব্রেকআপ করার ভালো উপদেশ দিতে পারেন,যেমন ওর জান বান্ধবী,তিনি নাকি ওকে বলেছেন তুই একাই থাক। অথছ ঐ শয়তান বান্ধবী ব্রেকআপ পর বেশ কিছুদিন কেদেঁ একলা থাকতে না পেরে আবারো রিলেশনে গেলো; হায়রে, ওরা করলে সবি রাইট হয়,আমি করলেই রং। তবে আমি যে একলা চলছি তাওনা,বলা যায় অনেক বেশি UNSTABLE BONDING হচ্ছে। ফারজানা তো প্রায়ই বলে ভাইয়া আপনি এমন কেনো।
একটা সময় ফারজানা ওর বোনের সাথে আমাকে বিয়ে দিতে চেয়েছিলো,এখন আর চায়না,বিরাট আফসোস। মানুষের ভালো লাগা দিনদিন কমতে থাকে,৬ মাস থেকে ২ ব্ছর পর্যন্ত ভালো লাগা বেশি থাকে। রাগটা হয়তো বেশি দিন থাকে,ভুল বোঝাবুঝিও।
তবে ভুল থেকে যারা শিক্ষা নেন তারা নাকি বড় হন। বন্ধু আহির একদিন বলল‘BRO,তুই একদিন অনেক বড় হবি’।
শুনে হসে উঠলাম। মানুষ ৩ ভাবে বড় হয়,বয়সে,অর্থ-সম্পদে আর সম্মানে। আমি সম্মানে বড় হতে চাই। বয়সে বড় হলে ছোটবেলার ভালো লাগা গুলি বদলে যায়,আগে সকালে হাটতে ভালো লাগতো,এখন আর লাগেনা। ও বোধহয় বয়সে বড় হয়েছে তাই আর আমকে ভালো লাগেনা।
টাকা পয়সার প্রতি ওর তেমন কনো টান নেই।
ওর টান এখন অন্নদিকে,টান যে দিকেই হোক,নভেম্বর মাসের তারা ‘মৌনোভা’কে যেমন ও ভুলতে পারবেনা তেমনি আমাকেও ভুলতে পারবেনা। হয়ত নতুন ভেলেইনটাইন পাবে কিন্তু জন্মদিনের ভেলেইনটাইন একজনই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।