আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রতিটি মানুষ হোক তার বাবা মায়ের শ্রেষ্ঠ সন্তান

ভুত মোর নাম.. আছর দেয়া যার কাম.. মা বাবা হচ্ছে বটবৃক্ষ,যা আজীবন ছায়া দিয়ে যায়। এই মা বাবাকে যখন কোনো সন্তান ছুড়ে ফেলে দেয় তার মত দুর্ভাগা এ ধরায় আর নেই। একটি লক্ষনীয় দিক হচ্ছে মা বাবার বয়স হয়ে গেলে তাদেরকে সাদা কাপড় চোপড় পরাতে আগ্রহী হয়ে উঠি,কিন্তু তারা যখন সাদা কাপড় পরে তখন তাদের মনটা আরো বুড়ো হয়ে যায়। এই সাদা কাপড়ের সাইক্লজিক্যাল অনেক বড় ইফেক্ট আসে তাদের মনে । কোন ধর্মে,কোন বিজ্ঞানে লেখা আছে যে মা বাবা বয়স্ক হলে সাদা কাপড় পরাতে হবে?আমাদের মতই তাদের রঙিন কাপড় পরতে দিলে সমস্যা কোথায়? আমাদের অনেকের বাবা আছেন যারা প্যান্ট পরতে চায়না ।

আমরা তাদের ধমকের সুরে বলি যে এতো ভালো ভালো প্যান্ট শার্ট কিনে দিয়েছি কি পুজো করার জন্য, নাকি আলমারিতে সাজিয়ে রাখার জন্য? তাদের মনটার কথা একবারও ভাবিনা। কেন তাদের উপর এই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চাই ?তিনি সারাটি জীবন কাটিয়েছেন এই লুঙ্গি পরে, আজ যদি প্যান্ট বাবু হয় তিনি তো সস্থি পাবেননা । এতে যে তাদের মানসিক চাপ পরে তা বুঝতে চাইনা। বাবা লুঙ্গি পরে যাওয়ায় যদি কেউ মেয়ে না দেয় , বাবার লুঙ্গি নিয়ে যদি অসামাজিকতার প্রশ্ন তোলে চলে আসুন । যেখানে পোষাকের মাপ কাঠিতে মূল্যায়ন করে দরকার নেই এমন বাপের মেয়েকে বিয়ে করার, মেয়েকে তারা আইবুড়ো বানাক।

একবার উঠে আসতে পারলে দেখা যাবে মেয়ে নিয়ে বাড়ি চলে এসেছে, যে বাবা এবারের মত মাফ করো । অনেকে আবার লুঙ্গি পরিহিত বাবাকে অবস্থায় পরিচয় দিতে কিঞ্চিৎ ইতস্তত বোধ করেন, কারন তারা জাতে উঠে গেছে ,ছেলে এখন হাই সোসাইটিতে কুর্নিস করে মাথা দিতে শুরু করেছে ,কত গণ্যমান্য মদখোর, ঘুষখোরে,ঋনখেলাপি, জোতচোর(যদিও জোতচোরের সঠিক অর্থ জানিনা)এর সাথে সখ্যতা হয়েছে। গ্রাম্য মা বাবাকে নিজের কাছে এনে রাখাও কষ্টকর। অসুস্থ প্রতিযোগী বন্ধুরা কি ভাববে। কারন ঐ বন্ধুরা যদি বলে তোর বাবা লুঙ্গি পরে ? পান খায়?? আমার বাবা জিন্সের লুঙ্গি টাই ছাড়া পরেইনা ।

এটা ভীষণ লজ্জার বিষয়। (মূল সমস্যা পাছে লোকে কিছু বলে) এসব ভেবে চরম বাস্থবতার ভিতর থেকে উঠে আসা মানুষগুলো বাবা মাকে অনেক সময় গ্রামেই ফেলে রাখে। আর নিজে তমুক সাহবের মেয়েকে বিয়ে করে অতঃপর সুখে শান্তিতে দিনগোজারের বৃথা চেস্টা করে যায়। দোযখ দেখতে মরতে হবেনা এদের বাসায় গেলেও কিছুটা অন্দাজ করতে পারবেন। এদের দেয়ালে অদৃশ্য এক হাহাকার আর্তনাদ করে প্রতিনিয়ত।

অথচ এই পিতা মাতাই মাঠে ঘাটে রোদ বৃষ্টিতে গতর খেটে এদের পড়াশুনা করিয়েছে, বড় করেছে। আমাদের পথে সমকক্ষ যারা আছে, তাদের সাথেই আমাদের প্রতিযোগিতা ,আর আমার বাবার সাথে তার সমকক্ষ যারা, তার সময়ের সেই গফুর চাচা করিম চাচা এদের সাথেই প্রতিযোগিতা থাকবে। তাদের এই প্রতিযোগিতা ধন দৌলত শান শওকতের নয় । এ প্রতিযোগিতা হচ্ছে- তিনি পরিচয় দিতে চান যে তিনি একজন সফল বাবা-- সবাই দেখো আমার ছেলে আজ কত বড় অফিসার, আসো আজ তোমাদের আমি চা,মুড়ি, পান, সিগারেট খাওয়াই। বিষয়টি ঠিক এরকমই জানিনা বুঝাতে পারছি কিনা।

অথচ এই সন্তান যদি বাবাকে ভুলে যায়। এরমত হতভাগা বিজ্ঞাপন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবেনা। কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় ছেলে বিয়ে করার পর আর মায়ের থাকে না, হয়ে যায় বউয়ের। বউয়ের জন্য রোজই কিছু না কিছু আনতে ভুল হয়না। ভুল হয় মায়ের জন্য চশমার ফ্রেমটি আনতে প্রয়োজনীয় ঔষধ কিনতে।

বিষয়টি যদি এরকম হয় যে বউয়ের জন্য একটি শাড়ি কিনলে মায়ের জন্যও একটি শাড়ি । দাম ও রং হবে একই বা মায়েরটার দাম বেশি। বাজারে এমন শাড়ি আছে যা বৃদ্ধা ও দুষ্ট খুকিরা সবাই পরতে পারে। তাতে মায়ের মনটা কত বড় হবে চিন্তাও করা যায়না। উল্লেখ্য বেশিরভাগ সময় দেখা যায় মায়ের শাড়ির দাম ৮৯৯ টাকা আর বউয়ের শাড়ি ৯৯৯৯ টাকা।

বর্তমান সময়ে এই থিউরি কেউ এপ্লাই করলে পরদিন সকালে নাস্থা খেয়ে অফিসে যেতে পারবেনা মনে হয় ( নাস্তা না খাওয়া চলমান, কত দিন চলবে বলা যায়না) এবং সাথে বোনাস হিসেবে সুন্দর বিছানাটা খোয়াতে হবে সোফা হবে আপনার একমাত্র সঙ্গী। এ ক্ষেত্রে সোফা কেনার সময় বিষয়টি চিন্তায় রাখা ভালো। জীবনে প্রথম হতে চাইলে রাস্তায় গিয়ে দৌরে বা অলেম্পিকে প্রথম হওয়ার কোনো দরকার নেই। মা বাবার জন্য এমন কিছু করুন যা হবে রেকর্ড, অন্য কেউ করেনি। দিয়েছেন কোনোদিন একবারে ২০ টি শাড়ি কিনে? জানি পরবে না হয়তো আশপাশে বিতরণ করে দিবে, তবুও তার ঐ সময়ের খুশি দেখলে আপনার স্রষ্টাও আপনার উপরে খুশি হয়ে যাবেন ।

তাদের কাছে প্রথম হলেই জীবনে কখন কিভাবে কোথা থেকে অফুরন্ত কল্যাণের মালিক হবেন যা আপনার ভাবনার বাইরে। হবেন সত্যিকারের প্রাচুর্যবান । স্রষ্টাও এব্যাপারে অনেক গুরুত্ব দিয়েছেন দুই কালেই সম্মানিত হওয়ার সুযোগ আছে। আর রাস্তা ঘাটে দৌরে হাটু ভেঙ্গে পুরুস্কার আনলে তা শুধু শোকেসের ভিতরে সীমাবদ্ধ থাকবে। পরিশেষে বাবা মায়ের হাতে কিছু হাত খরচ দিতে পারেন প্রতি মাসে সামর্থ অনুযায়ী।

এই টাকা নষ্ট হবেনা (যেমন নষ্ট মেয়েদের কল্যাণে, নেশার কল্যাণে, জুয়ার কল্যাণে) এই টাকা বাবা মা খরচ করবে হয়তো গফুর চাচাকে দিলো বা গরীব আত্মীয়দের জন্য বা দাণ সদকায় ব্যায় করবে আর তাও না করলে আপনার টাকা আপনার সন্তানের পিছনেই ব্যায় করবে। নোটঃ সব সন্তানরা এখনো নষ্ট হয়ে যায়নি , যারা গিয়েছে তাদের নিয়ে মূলত লেখাটি। সাদা কাপড় ভালো কিন্তু এখানে ভিন্নচিন্তায় লেখা হলো। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.