ডান হাতে একটুকরো আলতো পরশ রেখে আমি ঘুম থেকে জেগে উঠি। উত্তপ্ত নিঃশ্বাসে আমার আশপাশের বাতাস ভারী হয়ে এলেও আমি উদ্দীপ্ত হয়ে উঠতে পারিনা আর। নিকষ কালো আঁধারের দূর্ভেদ্যতা আমায় আরও কিছু প্রহর নিজেকে নিয়ে ভাবার বন্দোবস্ত করে দেয় অবলীলায়।
প্রশ্ন আর উত্তরের খেলায় আমি যখন নিতান্তই মগ্ন, ওর পাশ ফেরা কৌতুহল মেশানো জড়ানো কন্ঠ আমাকে মন্ত্রমুগ্ধের মত টেনে আনে। টেনে আছড়ে ফেলে বিছানা-বালিশ-সোঁদা চুলের গন্ধে।
"এইই...ঘুমাওনি?"
আধো ঘুম আধো জাগরণে হ্যা না কিছু একটা বলতে গিয়ে আর বলা হয় না আমার। শুধু একটা অস্পস্ট ধ্বনি কিছু একটা উত্তর দিয়ে যায়।
"তুমি না বললে, সকাল সকাল উঠবে। রাতে না ঘুমিয়ে সারাদিন চোখ কচলাবে নাকী?" অনুযোগের ভাষা আরো তীব্র হয়ে ওঠে এবার।
বললাম,"আমার ঘুম নিয়ে টেনশন করতে হবে না লক্ষীটি।
"
"হয়েছে, থাক, দুষ্টুমি করতে হবে না আর। "
ঠিক তখুনি আমার অনিচ্ছুক হাতটা আদর্শ কোমলতায় নির্বিবাদে স্থানচ্যুত হয়।
"আমি তোমাকে সব বলতে চাই। অনেকবার ভেবে দেখেছি, নির্ভার হওয়ার এই একটা উপায়ই আছে। তবে অবশ্যই একটা শর্ত আছে।
"
"কী?"
"আমাকেও বলতে হবে। "
"যাহ্!"
"উহু, এড়িয়ে গেলে চলবে না। "
"শোনো, আমার এমন কোনো হিস্ট্রি নেই যা তোমার মত অর্ধেকটা বলে বাকী অর্ধেকটা 'আগামী পর্বে' বলতে হবে। "
"বিশ্বাস হয় না। প্রতিটা মেয়েরই কিছু না কিছু থাকে।
"
"তোমাকে বিশ্বাস করানোর জন্য তাহলে আমাকে 'এ্যারাবিয়ান নাইটস' লিখতে হবে। "
"সেটা তোমার অভিরুচি। মিথ্যার ফাঁক-ফোকর দিয়ে সত্য বেড়িয়ে আসে। আমি ওই এ্যারাবিয়ান নাইটস'ই শুনব। "
"এরকম কচলা-কচলী করে লাভ নেই।
আমার মনে একগাদা ময়লা ছাড়া কিছুই নেই। "
"মানে?"
"মানে মনটা ভীষণ খোলামেলা তো, সহজেই ময়লা ঢুকে জমে গেছে। "
"তাহলে এবার ময়লাগুলো ডাস্টবিনে ফেলছ না কেন? ডাস্টবিনতো সামনেই হাজির। একেবারে লাব্বায়েক লাব্বায়েক করছে। "
"ক্যামনে ফেলি?"
"ক্যানো?"
"ডাস্টবিনতো ভর্তি-"
আমি আর হাসি চেপে রাখতে পারি না।
বলি,
"তাহলে তো সিটি কর্পোরেশনে খবর দিতে হয়। গাড়ী পাঠিয়ে সব ময়লা তুলে নিতো। "
"তোমার ওগুলো তো ময়লা নয়। "
"তবে কী?"
"যতদুর মনে হয়, ওগুলো বিষাক্ত বর্জ্র হতে পারে। ওগুলোর তেজষ্ক্রিয়তা থেকে বাঁচতে চাইলে জাহাজে করে অন্য কোথাও পাচার করতে হবে।
নইলে আশেপাশে যারা থাকবে ইফেক্ট সইতে হবে সবাইকেই। "
"আর সবচে বেশি তোমাকেই। " আঘাতে পযুর্দস্ত আমি পাল্টা আঘাত করতে বিন্দুমাত্র ছাড় দিই না।
মনে মনে আমি ভীষণভাবে শিউরে উঠি। শিউরে ওঠে অনিকেত আশংকায় বারবার আমার সমস্ত দোলাচল।
কিংকর্তব্যবিমুঢ় এই আমি ধাতস্ত হতে পারি না সহজেই। নিজের সাথে প্রশ্নবিদ্ধ এই ওকে অবশ্যই আমি জড়িয়ে ফেলেছি ওতপ্রোতভাবেই। হালকা কথাবার্তা দিয়ে এভাবে কতদিন লুকোচুরি খেলা যাবে আর!
নিদেনপক্ষে ওরতো জানা উচিৎ, সে যে চাঁদটা দেখছে তা সূর্যের মেকী আলোয় উদ্ভাসিত। কলংকের প্রসঙ্গটা নাহয় উহ্যই রইল।
পেছন থেকে একটা অদ্ভুত আধার আমার কানে কানে ফিসফিস করে বলে যায়, 'মানুষ আর পশুতে পার্থক্য খুব বেশী নয়, পার্টিকুলারলী হোয়েন ইট ইজ ইন সেক্স।
'
(চলবে)
২য় অংশ পড়তে চাইলে
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।