প্রদীপ হালদার,জাতিস্মর। আমার নিজস্ব কথা(৩) গান-প্রদীপ হালদার
(১)
কোথায় আমার ঘর আর কোথায় আমার বাড়ী
সব কিছু যে শূন্য মাগো শূন্য হয়ে ভাবি।
আমি খুঁজে খুঁজে হতাশ হরি
তবু খুঁজে ফিরি।
মিললো না সেই শান বাঁধানো মায়ের হাতে হাত ধরানো
বহুদিনের সেই হারানো সেই যে পুকুরঘাট,আমার সেই যে পুকুরঘাট।
কেন্দুবিল্বে তারাপীঠে বক্রেশ্বরে ত্রিকূটে
দেওঘরে বাসকীনাথে জগন্নাথের দর্শনেতে
তবু মিললো না রে হারানো সেই
বহুদিনের সেই পুরানো সেই যে পুকুরঘাট
আমার সেই যে পুকুরঘাট।
বহুদিনের ভাবনা আমার পাবো আমার মাকে আবার
দুটি চোখের স্বপ্ন মুছে বাগান পুকুর আসবে আবার।
রাতের মেলা জাগবে চোখে মায়ের সাথে হাতটি ধরে
যাবো আবার মাকে নিয়ে কেন্দুবিল্বের দর্শনেতে।
(২)
কেউ তো আমায় ভালোবেসে ডাকলে না
কেউ তো আমায় ভালোবেসে বললে না
আমি তোমায় ভালোবাসি
আমি তোমায় ভালোবাসি।
যা দিয়েছো অনেক,অনেক ভালোবাসা
বলো কি আর ভুলি কেমন করে।
অনেক ব্যথা দিয়েছো গো আমায়
চোখের জলে কেঁদে কেঁদে হয়েছি গো পাষাণ।
মৃত্যু তুমি আসবে কখন আমার জীবনে
বৃষ্টি তুমি ঝরছো ঝরো আমার ফাগুনে।
পাখীর ডাকে ঘুম ভাঙে না,নদীর জলে ঢেউ ওঠে না
ঝড়ো হাওয়ায় ঝড় আসে না জীবন বয়ে যায়।
ফুলে ফুলে ফুল ফোটে না,মেঘে মেঘে মেঘ ডাকে না
রোদের আলোয় রোদ আসে না সময় বয়ে যায়।
মৃত্যু তুমি আসবে এসো আমায় বলে যাও
বৃষ্টি তুমি ঝরছো ঝরো আমায় ভুলে যাও।
(৩)
তোমার ডাকে
আমি সাড়া দেবো না
তুমি ভাবলে কেমন করে।
তোমার ডাকে
আমি ফিরে আসবো না
তুমি জানলে কেমন করে।
তোমায় ছেড়ে কোথায় যাবো
কোন্ পাহাড়ে কোন্ অদূরে।
আমি থাকবো কাছে,তোমার পাশে
থাকবো তোমার মাঝে।
তোমার কাছে আসবো আমি
নাই বা যদি ডাকো মোরে
স্বর্গ যদি কোথাও থাকে
সে যে আছে তোমার মাঝে।
(৪)
আমি বৃষ্টির জলে ভিজে ভিজে বৃষ্টিকে সাথী করেছি।
আর ফুলের গন্ধে মুগ্ধ হয়ে কখন প্রজাপতি হয়ে গিয়েছি।
হাওয়ার দোলায় দুলতে দুলতে মনে দোলা লেগেছে।
কোকিলের গানে কখন এ মন কোকিল হয়ে গিয়েছে।
আমি হাসতে হাসতে কখন যেন তোমার কথা ভেবেছি।
ছুঁয়ে যেতে যেতে কখন যেন তোমায় ছুঁয়ে ফেলেছি।
বৃষ্টির ছোঁয়ায় ভিজে ভিজে আমি ফুল হয়ে গিয়েছি।
তোমার ছোঁয়ায় বিভোর হয়ে সব কথা ভুলে গিয়েছি।
(৫)
ও কোকিলারে
আমার এই পোড়ামনে
গান গেয়ে তুই আঘাত করিস না রে।
ঝোপে ঝাড়ে গাছের ডালে লুকিয়ে থেকে আপন মনে
ফাগুন চৈত্র বাদে রে তুই গান গাইতে পারিস না রে।
তোর গানেতে ফুলগুলি সব আপন মনে রঙ ছড়ায় কি
সেই রঙেতে মুগ্ধ হয়ে উড়তে থাকে প্রজাপতি।
কুহু কুহু ডাক্ ডেকে রে তুই গলা ভাঙিস না রে
মেঘগুলিকে তোর ওই সুরে ভাসিয়ে রাখিস না রে।
কেন রে তুই আসিস ফিরে ঘুরে ফিরে ফাগুন চৈত্রে
গানে গানে গান ভরিয়ে রঙে রঙে রঙ লাগিয়ে
ও তুই আলসে পাখিরে।
(৬)
এ মন আমার চঞ্চলা আনমনা গুন গুন গান করে সারাদিন।
নূপুরের ছন্দে বৃষ্টিরও নৃত্যে ফুলে ফুলে গুন গুন গান করে সারাদিন।
ফুলে ফুলে প্রজাপতি রঙে রঙে বাহারে
গুন গুন গান করে আহা কি যাদুরে।
ঝুর ঝুর বরষায় গাছগুলি দুলে যায়
আকাশের কালো মেঘ ডেকে ডেকে গান গায়।
বিজলীর চমকানি নয় তার ঝলকানি
বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে মন আজই হয়রানি।
(৭)
পলাশ ফুলের আজকে কি তার ঘুম ভেঙেছে
নাকি কে যেন তার পাপড়িগুলি রাঙিয়ে দিয়েছে।
মৌমাছিরা গুনগুনিয়ে পলাশফুলের মাঝে মাঝে
পথ হারিয়ে গান গেয়ে যায় পাখিদেরই সাথে সাথে।
পলাশ বুঝি হাসে পাতাবিহীন গাছে
পাপড়িগুলি ঝরে ঝরে পায়ের নীচে পড়ে।
পলাশ বুঝি কাঁদে সূর্য্যি ডোবার আগে
জনবিহীন মাঠের মাঝে রাত বুঝি তার কাটে।
ফুলগুলি সব ঝরে ঝরে পাতায় ভরে যায়
তাইতো পলাশ ঘুমিয়ে পড়ে ঘুম ভাঙে না তাই।
(৮)
তোমার ওই এলোমেলো শাড়ী পড়া আমার চোখের নজর কেড়েছে।
তোমার ওই খালি পায়ে ঘাসে হাঁটা আমার মনের ছন্দ কেড়েছে।
তোমার মুখের হাসি পান্নাহীরের চেয়েও দামী সারাদিন শুধু ঝরছে।
মনে হয় যেন বসে মোর পাশে সারাদিন কেবল হাসছে।
আমি না হয় মরে গেছি তোমার ওই রূপের আগুনে।
তোমার মন কি একবারও ডেকে ওঠে না কোকিলের ফাগুনে।
আমার মন কি হারিয়ে গেলো তোমার ওই চুড়ির মাঝে।
নাকি তোমার ওই মন কেড়ে নিলো আমার এই মনটাকে।
(৯)
গানের খাতা হারিয়ে যাবে জীবন থেকে
সিঁথির সিঁদূর সেও তো মুছে যাবে।
হাতের শাঁখা সেও তো যাবে ভেঙে।
থাকবে না তো কিছুই যতই ধরে রাখি।
আকাশ পানে চেয়ে দেখো মেঘ
সেও তো ঝরে যাবে বর্ষারাণীর গানে।
তুমি আছো আমার পাশে নয়কো চিরদিনে
হারিয়ে যাবে সবার মতো এমন কোনোদিনে।
পলাশ ফুলের রঙে মন যে ভরে যায়
এমন সুখের দিনে সেও তো পাশে নাই।
(১০)
রাত বারোটা তুমি আমি বসে আছি ষ্টেশনে
কখন আসবে ট্রেন সেই আশাতে।
এক অন্ধকার রাতে-
তোমাকে পেয়েছি আমি অনেক কাছে।
তুমি এসেছিলে আমার কাছে
বলেছিলে লিখবে চিঠি তুমি আমার নামে।
কত দিন কত রাত গেছে কেটে
পাই নি দেখা পাই নি চিঠি তোমায় ভালোবেসে।
তুমি এখনো কি সেই পুরানো কথা ভাবো
নাকি ভবিষ্যতের আশা নিয়ে আমায় দূরে রাখো।
রাখলে না কথা লিখলে না চিঠি বুঝলে না মোর ভাষা
তাইতো আমার প্রশ্ন জাগে এই কি ভালোবাসা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।