আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আসমানী এখন আসমানে

আসমানীদের দেখতে যদি তোমরা সবে চাও , রহিমুদ্দির ছোট্টবাড়ি রসুলপুরে যাও। না, ফরিদপুর সদরের ইষান গোপালপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে যাওয়া হয় নি। পাখির বাসার মতো আসমানীদের কুটিরটা দেখাও হয় নি তখন। তবুও বাবার কোলে বসে থেকে প্রথম প্রথম যখন শুনতাম আসমানীদের কথা, বৈদ্য ডেকে ওষুধ করার পয়সা না থাকার কথা তখন মনটা কেমন জানি খারাপ হয়ে যেতো। এরপর যখন নিজে নিজে কবিতাটা পড়েছি তখন যেন চোখের সামনেই দেখতে পেতাম অভাবে অভাবে জর্জরিত এক ক্ষীনকায় আসমানীকে।

এরও অনেক পর, যখন 'আসমানী' কবিতার মতো হৃদয়স্পর্শী কবিতাটা হাজারো ব্যস্ততার মাঝে ভুলেই যেতে বসেছিলাম, তখনই টেলিভিশনের পর্দায় প্রথম দেখলাম পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের অমর সৃষ্টি 'আসমানী' কবিতার নায়িকা আসমানী বেগমকে। সেদিনই বুঝেছিলাম, কবি যথার্থই বলেছেন ‘ভোমর-কালো চোখ দুটিতে নাই কৌতুক-হাসি, সেখান দিয়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রু রাশি রাশি। ’ পল্লীকবির আসমানী যে কল্পনার আসমানী নয় সেটা দেখে সেদিন কেমন করে জানি নিজের অজান্তেই চোখটা জলে ভরে উঠেছিল। পরে শুনেছি, ফরিদপুরের একজন জেলাপ্রশাসক জালাল আহমদে উদ্যোগ নিয়ে এই আসমানীকে খুঁজে বের করেন। ৯০০ টাকা বেতন পাওয়া ছোট মেয়ে জোছনার কাছে থাকতেন পল্লীকবির আসমানী।

'কেমন আছেন' জিজ্ঞাসা করলে আসমানী দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে উত্তর দিতেন, ‘কবি যেমন রেখে গেছেন সে রকমই আছি। ’ জসীমউদ্ধিনের নানা সাহিত্য কর্মে কালজয়ী নানা চরিত্র যেমন রুপাই, সাজু, হাজেরা বিবি, গণি মিয়ার জীবনাবসানের পর সর্বশেষ বিদায় নিলেন এই হতদরিদ্র আসমানী। তবে, তাঁর এই দৈহিক প্রয়াণে তাঁর নাম মুছে যাবার নয়। যতদিন বাংলা ভাষা থাকবে ততদিন পল্লীকবির কালজয়ী সৃষ্টিতে অমর হয়ে থাকবেন রসুলপুরের এই আসমানী বেগম। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।