গভীর কিছু শেখার আছে ....
‘আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও,
রহীমুদ্দীর ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও। ’
পল্লীকবি জসীমউদদীনের কবিতার এই আসমানী কোনো কল্পনা ছিল না। আসমানী অতিসাধারণ এক মেয়ের নাম। পল্লীকবি জসীমউদদীনের আসমানী কবিতার সেই 'আসমানী' যায়যায়দিনে এসেছিলেন সম্প্রতি। ঢাকায় তিনি এসেছিলেন পল্লীকবি জসীমউদদীনের জীবনচিত্র নিয়ে নির্মিত বিশেষ চলচ্চিত্রের মহরত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করতে।
ছোটবেলায় যাকে কবিতায় কেবল পড়েছি, তাকে এভাবে সামনাসামনি দেখতে পারবো তা ভাবিনি কখনো। তাই তার সঙ্গে ফটো তোলার লোভ সামলাতে পারলাম না তাই। ইন্টারভিউ নেবার সময় জানলাম তার অনেক কথা।
আসমানী বসবাস করেন রসুলপুরে। কবি জসীমউদদীনের বাড়ি ছিল ফরিদপুর থেকে বেশ কিছুটা দূরে রসুলপুর গ্রামে।
সেখানে তাদের জমি ছিল। সেখানে হলুদ ক্ষেত করা হতো। কবি প্রায় সময় রসুলপুর গ্রামে আসতেন। আপন মনে ঘুরে বেড়াতেন। পাশেই ছিল রহীমুদ্দীর বাড়ি।
তিনি ছিলেন একজন ভাবুক লোক। রহীমুদ্দীর মাজার রসুলপুরে এখনো রয়েছে। জীবিত অবস্থায় তার খেদমতে ছিলেন আসমানী। জসীমউদদীন এ বাড়িতে গিয়ে প্রায় সময়ই বসতেন। চঞ্চলা আসমানীর বয়স তখন মাত্র নয় বছর।
কবির সামনে দিয়ে খুব ছোটাছুটি করতেন। কবি বৃষ্টির মধ্যে একদিন আসমানীদের ঘরে বারান্দায় বসে আছেন। ওই বারান্দায় বসেই লিখলেন আসমানী কবিতা।
কবির লেখা সেই কবিতার বিষয়বস্তুর সঙ্গে এখনো সেই মিল রয়েই গেছে আসমানীর। প্রথমে বাল্যবিয়ে ও পরে একাধিক বিয়ের পর তার এখন আট মেয়ে ও চার ছেলে।
বর্তমানে বয়সের ভার ছাড়াও রোগশোকে কাহিল অবস্থা তার। কানের কাছে গিয়ে কথা না বললে শোনেন না। স্মৃতিশক্তিও ততোটা নেই। কানের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে উত্তর দেন তিনি। বর্তমানে ছোট মেয়ে জোছনার কাছেই তিনি থাকেন।
জোছনা একটি জুটমিলে কাজ করে। বেতন পায় মাত্র ৯০০ টাকা। সংসার কীভাবে চলে কেউ জিজ্ঞাসা করলে মলিন মুখে আসমানী বলেন, আল্লায় চালায়। মাঝে মাঝে কিছু অনুদান পান বিভিন্নজনের কাছ থেকে। এ দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে।
'কেমন আছেন' জিজ্ঞাসা করলে আসমানী দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে উত্তর দিলেন, ‘কবি যেমন রেখে গেছেন সে রকমই আছি। ’
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।