নেলসন ম্যান্ডেলার স্বাস্থ্যের এতটা অবনতি তখনো হয়নি। তাঁর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে হঠাৎ করেই হাজির হতেন কেকানা মাংকুয়াম্বি। দুই পুরোনো বন্ধু মিলে আড্ডা দিতেন নানা বিষয় নিয়ে।
বিখ্যাত প্রতিবেশীর প্রেমজীবন নিয়েও খুনসুটি করতে ছাড়তেন না মাংকুয়াম্বি। তিনি ৯৪ বছর বয়সী ম্যান্ডেলার মাত্র দুই বছরের ছোট।
বর্ণবাদী শাসকদের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ম্যান্ডেলা একবার কিছুদিনের জন্য ফিরে এসেছিলেন তাঁর গ্রাম কুনুতে। সেখানেই কেটেছিল তাঁর শৈশব। মাংকুয়াম্বির সঙ্গে বন্ধুত্বের শুরুটাও হয়েছিল এখান থেকেই।
নিজের কুঁড়েঘরের দাওয়ায় বসে মাংকুয়াম্বি এএফপির সাংবাদিককে বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে সময় কাটাতাম। সাধারণত আমি রাতেই দেখা করতে যেতাম।
গিয়ে বলতাম, হে বান্ধবীহীন মানুষ, জেগে ওঠো, হাসো, দাঁড়াও, হাত মেলাও! তারপর আমরা বসে গল্প করতাম, কখনো সারা রাত। সে (ম্যান্ডেলা) শুধু আমার বন্ধুই নয়, তার চেয়ে বেশি কিছু। সে আমার ভাইয়ের মতো। ’
বর্ণবাদ-উত্তর যুগে একটি বিভক্ত দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরে গোটা বিশ্বের কাছে শান্তির এক অনন্য প্রতীকে পরিণত হয়েছেন ম্যান্ডেলা। তবে কুনু ও আশপাশের পাহাড়ি এলাকায় তিনি একই সঙ্গে একজন প্রতিবেশীও।
বিশ্বজুড়ে বিপুলভাবে শ্রদ্ধাভাজন ম্যান্ডেলা সবকিছুর পরও একজন মাটির মানুষ। তিনি গ্রামের যে কারও বাড়িতে চলে যেতেন হাঁটতে হাঁটতে। দেখে মনেই হতো না তিনি একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানুষ।
স্থানীয় তরুণ মাসিভিউয়ে গেলেদোয়ানা একাধিকবার ম্যান্ডেলার সঙ্গে আলাপ করেছেন। মাসিভিউয়ে বলেন, ‘ম্যান্ডেলা একজন নায়ক।
তিনি অনেকটা দেবতার মতো। তিনি আমাকে বলেছেন, একজন মানুষ হয়ে উঠতে চাইলে সবাইকে সম্মান করতে হয়। সব মানুষকে, তারা যেখান থেকেই আসুক না কেন, সমান বিবেচনা করতে হয়। ’
৫৪ বছর বয়সী জো এমলাংগাজি বলেন, তাঁর বাড়িতে একজন সাধারণ মানুষের মতোই এসে দেখা করেছিলেন ম্যান্ডেলা। তাঁরা চান ম্যান্ডেলা নিজ গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসুন।
তাঁকে সবাই খুব অনুভব করে। কারণ তিনি সবার জীবন বদলে দিয়েছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ম্যান্ডেলার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে বলে খবর প্রকাশিত হলেও তিনি এখনো আশঙ্কামুক্ত নন। কুনু গ্রামবাসী তাঁর আরোগ্য ও প্রত্যাবর্তন কামনা করছে। এমলাংগাজি বলেন, ‘আমরা তাঁকে দেখতে চাই এবং বলতে চাই, তিনি আগের চেয়ে ভালো আছেন।
’ এএফপি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।