মাগো আমি তোমার সোনার ছেলে এ কথাটা কজন বুক ফুলিয়ে বলতে পারে ? মার প্রতি ভালোবাসাইতো মানুষকে মনুষত্বের স্বাধ বুঝিয়ে দিতে পারে। স্বাধীনতার এক যুগ পরে আমার জন্ম। স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কে আমি কতটুকু জানি? যা জানি তা কি সত্যি? এমনো হাজারটা প্রশ্ন স্বাধীনতার পরবর্তী প্রজন্মের। যারা জীবন দিয়ে যুদ্ধ করেছেন তারাও মাকে ভালোবাসতেন আর যারা অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষার্থে চেতনার কথা বলে তারাও সমানভাবে মাকে ভালোবাসে। দেয়াল শুধু একটাই সেটা হলো মৃত্যু।
মৃত্যুই কি ভালোবাসার চরম পরীক্ষা! হতে পারে। তবে হ্যা বেচে থেকে লড়াই করে মৃত্যু কিন্তু সহজ মৃত্যু না। যে ভালোবেসে মরতে জানে সে কিন্তু কখনোই স্বীকৃতি চায় না। কারন সে বিশ্বাস করে মৃত্যুর মাঝেই তার নব জীবনের সূচনা।
দেশকে ভালোবেসে বড় বড় কথা বলার পক্ষে যারা তাদেরকে তো আপনারা চেনেন।
বেশিরভাগ সময় রাজনীতিবিদরাই এ কাজটা করে থাকে বলে আমরা মনে করি। কিন্তু সত্যিটা হলো তারা শুধু নয় সংস্কৃতিবিদরাও এর সাথে জরিত। কিভাবে ? এরা সহোদর; একি মায়ের সন্তান। রাজনীতিবিদদের যেমন মিথ্যা বলার সুযোগ আছে সংস্কৃতিবিদদেরও আছে। তারাও বই পুস্তকে অনেক বড় বড় ফাকা বুলি আওরাতে পারেন নিস্বংকচে।
এসব ব্যাক্তদের স্নায়ুবিক কৌশল সাধারন দেশপ্রেমিকের চিন্তার বাইরে।
আপনি আমি সাধারন মানুষ। আমরা চাই একটু শান্তিতে বসবাস আর মানুষ হিসেবে অল্প কিছু সামাজিক মর্যাদা। অথচ গোটা দেশ এর অস্থিরতা খেয়াল করলে মনে হবে যেন অরণ্যে রোদন করা হলো। হায় হায় রে দেশ স্বাধীন হবার পর গোটা দেশের একি অবস্থা! অথচ এটাই বাস্তব সত্যি।
এ সত্যির মধ্যে দিয়ে প্রতিনিয়ত আমরা অভিষপ্ত জীবন যাপন করে আসছি। স্বাধীনতার নামে আমাদের গোটা জ্বাতিকে করা বন্দি অবস্থায় দিন কাটতে হচ্ছে। কেন ?
এর জন্য দায়ি কে? জনগন না সরকার? অদৃশ্য এক মহাজাগতিক শক্তি আমাদেরকে কি এমন অধ্ব:পতনের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে যে সে রাহুর গ্রাস থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারছিনা! আমাদের চিন্তা আমাদের প্রাণশক্তি আমাদের কর্মক্ষমতা এতই ঠুনকো যে স্বাধীন একটা রাষ্ট্রকে কিভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হয় সে বিদ্যা প্রয়োগে আমরা অক্ষম!
কেউ কেউ বলেন দেশ উন্নতি হয়েছে, দেশের মানুষ এখন আর না খেয়ে থাকেনা। তাদের এ উক্তির পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক জবাব কি হওয়া উচিৎ তা আমার মত মামুলি ব্লগারের মুখ থেকে বের হওয়া অনুচিৎ। কেননা সেধে সেধে বলির পাঠা হতে চাইবে না কেউই।
সত্যি বলতে কুন্ঠিত বোধ করি বিধায়ইতো ব্লগিং….তবে কাউকে না কাউকে সত্যি বলতেই হবে…আমিও হয়তো বলতে পারবো তবে একদল হায়ানার সামনে ছাগুর বেশে কখনোই নয়…সাহস দেখাতে গিয়ে কামানের মুখে দারাবার মত সাহস আমার নেই।
প্রকৃতি পক্ষে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিলো ৫২ এবং ৭১-এ তাকি শেষ? আমার মনে হয়না। আমার মনে হয় এ দেশে এখনো যুদ্ধ চলছে…! চারিদিকে হাহাকার, অশান্তি আর অনিশ্চয়তার প্রভাব দেখে মনে হয় জ্বাতী এখনো কি একটা ঘোরের মধ্যে ডুবে আছে। প্রকৃতির নিয়মে দিন রাত হয় কিন্তু বাংগালির চেতনার ঘুমতো ভাঙ্গে না। বাংগালী জানে ওরা সাহসী জ্বাতী কিন্তু কই তাদের চেতনার ঘোরইতো কাটেনা।
এমনতো কথা ছিলোনা…আধমরার মত পরে থাকার।
যুদ্ধের আগে যুদ্ধের পরে এবং যুদ্ধের সময় কিছু দেশপ্রেমের গান শুনিয়ে দেশপ্রেমিকদের চেতনা জাগিয়ে রাখা হতো কই এখনতো দেশপ্রেমের গান বাজেনা। সেই মন্ত্রমুগ্ধ-সম্মহনি মায়াবী সুরতো এখন আকাশ বাতাসকে আচ্ছন্ন করে ফেলতে পারেনা….! কেন পারেনা? দেশপ্রেমিকরা কি তাহলে সব মরে গেছে? আমরা কি? আমাদের চেতনায় কি? আমাদের দায়িত্ব কি? অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা করা না আরেকটা যুদ্ধ চাই বলে কৃত্তিম সভ্যতার কানের কাছে গগনবিদারি আর্তচিৎকার করা??
বাংলায় এমন হাজারটা ইয়া বড় বড় প্রশ্ন আছে যার কোন উত্তর নাই। কেউ দিতেও পারবে না, পারলেও তার কন্ঠনালীতে আটকে যাবে। সত্যিবলতে এখনো আমরা ডিমের খোলস থেকে বুরুতে পারিনি।
একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের এমন পরিস্থিতি কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না….। ।
বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে কে? রাজনীতিবিদরা? অবশ্যই না…যুদ্ধের সময় তারা নিরাপদ দুরত্বে কেটে পরেছিলো।
বংলাদেশ স্বাধীন করেছে কে? বুদ্ধিজীবিরা? অবশ্যই না…যুদ্ধের আগে কেউ কি বলতে পেরেছিলো এ দেশে যুদ্ধ হবে, এ দেশ স্বাধীন হবে?
আপনার আমার মত সাধারন মানুষেরা, মার ইজ্জত বোনের ইজ্জত স্ত্রীর ইজ্জত বাচাতে খেয়ে না খেয়ে রোদে পুরে রাতের পর রাত জেগে থেকে অসুখে ভুগে কাদায় পানিতে ধুকে ধুকে এ দেশটাকে স্বাধীন করেছে। তারা কখনোই রাজনীতিবিদ বা সংস্কৃতিবীদদের মত সুবিধাবাদী-সুবিধাভোগী ছিলোনা…তাদের ভালোবাসা ছিলো অকৃত্তিম, তাদের ভালোবাসা ছিলো খাটি।
অথচ এখনো সেই সব দেশপ্রেমিকরা স্বাধীনদেশে চিকিৎসার জন্য রাস্তায় দাড়িয়ে হাত পাতে, কেউ কেউ রিক্রা চালায়, কেউবা ভিটা ছাড়া হয়। কিরে ভাই তারা কি পাপ করেছিলো যুদ্ধ নামের এই মহৎ কাজটি সম্মাদন করে? তারচেয়ে বড় কথা আমরা কত সহজে এসব দেখে না দেখার ভান করে থাকছি? যে জ্বাতী নিজের পরিচয় নিয়ে ভান করে আর যাই হোক সে জ্বাতীকে অন্য কেউ শ্রদ্ধা করতে চাইবে না।
যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীনতার কথাতো আমাদের চিন্তার বাইরে। কারন একজন যোদ্ধাকে তার উপযুক্ত সন্মান দেয়ার মত মানুষিক সুস্ততা আমাদের মধ্যে নেই। আমরা একধরনীর বিকলাঙ্গ জ্বাতী।
যে দেশের মানুষের নিজের দেশ পরিচালনার জন্য নিজেদের মধ্যে যোগ্য নেতৃত্য জন্ম দেয়ার ক্ষমতা রাখে না সে দেশের কাছ থেকে এর চে ভালো কিছু আশা করা অসম্ভব।
প্রতিটি স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশের স্বাধীন নাগরিকদের আরেকটা দায়িত্ব থাকে সেটা হলো দেশকে ঢালাও ভাবে নতুন করে সাজাবার দায়িত্ব। আর স্বাভাবিক ভাবেই এই দায়িত্বটা বেশি থাকে বেচে থাকা বা বেচে যাওয়া কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবি, শিক্ষক, শিল্পী এদের উপর। কই আমাদের দেশে তেমন কিছুই তো হলোনা…সবাই যুদ্ধ শেষে যার যার ভাগভাটোয়ার নিয়ে চিৎকার চ্যেচামেচি শুরু করে দিলো।
এখন তাহলে বলেন তাদের উপর কতাটা আস্থা করা উচিৎ? তারা মিডিয়াতে এখনো যেই সব বড় বড় কথা বলেন এগুলোওতো সেই ধারাবাহিকতার ফসল।
সত্যিটা সুকৌশলে এড়িয়ে যাবার নামই কি বুদ্ধিবৃ্ত্তি? কিছু হলেই রাজনীতিবিদদের কাধে দোষ দেয়া মুখস্ত করে ফেলেছি আমরা। হায় আল্লাহ্ এখন আমাদের কি হবে? এনসাইক্লোপিডিয়াতে দেখেন তথাকথিত এই বুদ্ধিবৃত্তি বা বুদ্ধিজীবি শব্দটা কেবল মাত্র আমাদের দেশেই প্রচলিত। পৃথিবীর অন্যকোন দেশে নয়। কিন্তু বুদ্ধিজীবিরা যে সুবিধাবাদি এটা কে না জানে? স্বাধীনতার পর পর সংস্কৃতিবীদেদর যে দেশ গড়ার দায়িত্ব ছিলো তা তারা করেন নি…আজো সেই ঘাটতি আমাদের দেশে রয়ে গেছে। এবং এ ঘটতি যতদিন পর্যন্ত বাংগালির চেতনা দিয়ে উপলব্ধি করতে না পারবে ততদিন পর্যন্ত সত্যিকারের স্বাধীনতা মুখ সে দেখতে পারবেনা….এমনি মুখ থুবরে বিকলাঙ্গের মত বেচে থাকবে অনন্তকাল….
(চলবে…)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।