অনলাইনে অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম পূরণঃ
সহজ উপায়ে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট করার জন্য অনলাইনে অ্যাপ্লাই করাটা খুবই জরুরী, কারণ এতে যেমন প্রচুর পরিমাণে সময় বাঁচবে (১ দিনের মধ্যে সব কাজ শেষ করা সম্ভব, ভাগ্য ভালো হলে ২ ঘণ্টার মধ্যে) তেমনি অনেক ঝামেলা থেকে ও রক্ষা পাওয়া যাবে। হাতে লিখে ফর্ম পূরণ করে নিয়ে গেলে আপনাকে কমপক্ষে ২০০-৩০০ জনের পিছনে লাইনে দাড়াতে হবে, কারণ মানুষজন সকাল ৭ টা থেকে লাইন দেয়া শুরু করে, এবং এক্ষেত্রে দালালদের অত্যাচার ও সীমাহীন। অনলাইনে অ্যাপ্লাই করার আরো একটি সুবিধা হলো নিজের সুবিধা-মতো সময়ে ছবি তুলার তারিখ ঠিক করা। অনলাইন ফর্ম পূরণ করার সময় ভ্যালিড ইমেইল অ্যাড্রেস দেয়াটা খুবই জরুরী, কারণ ফর্ম পূরন করার পর আপনার মেইল অ্যাড্রেস এ আপনার ফর্ম ডাউনলোড করার জন্য একটি লিংক পাঠানো হবে। অনলাইনে ফর্ম পূরণের জন্য আপনাকে এই লিংক এর মাধ্যমে ফর্ম পূরণ করতে হবে (http://www.dip.gov.bd/)।
পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার সময় যেসব জিনিস সাথে নিতে হবেঃ
১. ডাউনলোডকৃত অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম
২. ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি
৩. পূর্বের পাসপোর্ট থাকলে, পূর্বের পাসপোর্টের প্রথম তিন পাতার ( ছয় পৃষ্ঠা ) ফটোকপি এবং মূল পাসপোর্ট, এখানে লক্ষণীয় যে, ফটোকপি করার সময় পূর্বের পাসপোর্টের মলাটের পাতা থেকে যেখানে ইস্যু এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ দেয়া থাকবে, সেখান থেকে ফটোকপি শুরু করতে হবে।
৪. কলম
৫. আঠা
৬. স্ট্যপলার
পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার জন্য অবশ্যই খুব সকাল সকাল বের হতে হবে, কারণ বেলা বাড়ার সাথে সাথে লোকসংখ্য, ভীড় ও দালাদের উৎপাত বাড়তে থাকবে।
পাসপোর্টের টাকা জমাঃ
অ্যাপ্লাই করার পরবর্তী পদক্ষেপ হচ্ছে পাসপোর্টের টাকা জমা দেয়া। সোনালি ব্যাংক এর আগার-গাও শাখা ছাড়াও ফার্মগেট, মগবাজার, মালিবাগ, কলেজ-গেট, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ শাখায় পাসপোর্টের টাকা জমা দেয়া যাবে। টাকা জমা দেয়ার হারঃ
১. সাধারণ ৩০০০ টাকা
২. জরুরী ৬০০০ টাকা
এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে, যাদের পূর্বের পাসপোর্ট রয়েছে কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে, তাদের কে অতিরিক্ত নবায়ন ফ্রি দিতে হবে।
নবায়ন ফ্রির হার প্রতি বছরের জন্য ৩০০ টাকা (অর্থাৎ যাদের ২০১২ সালে মেয়ার উর্ত্তীণ হয়েছে তাদের কে ৩০০ টাকা, যাদের ২০১১ সালে মেয়ার উর্ত্তীণ হয়েছে তাদের ৬০০ টাকা)। আগার-গাও শাখাতে টাকা জমা দেয়ার সময় দালালদের অত্যাচার সহ্য করতে হবে। তবে দালাল ধরাটা খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না, নিজেই টাকা জমা দিন, এতে ভুল হওয়া ও বিশৃঙ্খলতার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।
টাকা জমা দেয়ার পর, টাকা জমা দেয়ার রশিদ ফর্মের উপর আঠা দিয়ে লাগাতে হবে, এজন্য বাসা থেকে অবশ্যই সাথে করে আঠা নিয়ে যাবেন। তবে আঠা দিয়ে রশিদ লাগানোর সময় একটা বিষয় অবশ্যই লক্ষ রাখবেন যে, ফর্ম এর ডান দিকে বার কোডের নিচে একটি নাম্বার দেয়া থাকে, নাম্বার টা যেন রশিদ লাগানোর সময় ঢেকে না যায়, কারণ ছবি তুলার সময় নাম্বারটা অবশ্যই লাগবে।
ফর্ম ভেরিফিকেশনঃ
ফর্ম এ টাকার রশিদ লাগানোর পর আপনাকে অনলাইন পাসপোর্ট ফর্ম ভেরিফিকেশন এর জন্য ৩১০ নাম্বার রুমে যেতে হবে। কিন্তু এর ভেরিফিকেশন এর আগে আপনাকে অবশ্যই আট তলার ৮০৪ নাম্বার রুম থেকে সিরিয়াল নাম্বার নিতে হবে। তাই ৩১০ নাম্বার রুমে যাওয়ার পূর্বে আপনি আট তলায় ৮০৪ নাম্বার রুমের থেকে সিরিয়াল নাম্বার নিয়ে নিবেন।
ছবি তুলাঃ
সিরিয়াল নাম্বার সংগ্রহের পর তিন তলার ৩১০ নাম্বার রুমের থেকে আপনাকে অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম টা ভেরিফাই করে নিতে হবে। সেখান থেকে ই আপনাকে ছবি তুলার জন্য পাঠানো হবে।
ছবি তুলতে যাওয়ার সময় একটা বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যে, “সাদা কাপড় পরে ছবি তুলা সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ”, তাই অবশ্যই সাদা ব্যতীত অন্য কোনো রঙের কাপড় পরে যাবেন অথবা সাথে নিয়ে যাবেন। ছবি তুলা আর ফিঙ্গার প্রিন্ট নেয়ার পর আপনাকে একটি ফর্ম দেয়া হবে যাতে আপনার পাসপোর্ট ডেলিভারি দেয়ার তারিখ দেয়া থাকবে। পাসপোর্ট ডেলিভারি নেয়ার সময় অবশ্যই ফর্মটি (যাদের পুরানো পাসপোর্ট আছে, তাদের পুরানো পাসপোর্ট ও) নিয়ে যেতে হবে।
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে যতটুকু জানতে পেরেছি, তা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আশা করি কিছুটা হলেও আপনাদের কাজে লাগবে ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।