আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গোয়েন্দা উপন্যাসঃ ভয়ঙ্কর দ্বীপে (দ্বিতীয় পর্ব)

তিন হঠাত্ করেই ঘুম ভেঙ্গেগেল আমার । রাত নিঝুম । বাইরে একটানা রি..রি..রি ..রি ঝিঝি পোকার ডাক । বুঝতে পারলাম না কি জন্য ঘুম ভাঙল আমার । চোখ বুঝে আবার ঘুমাবার চেষ্টা করলাম ।

হয়তো চোকটা লেগেও এসেছিল । ঠিক সে সময় ,একটা শব্দ শুনলাম। ভয়ঙ্কর একটা শব্দ । একটা অমানবীয় আর্তচিত্কার । কানের এপাশ - ওপাশ করে বেরিয়ে গেল শব্দটা ।

ভয়ে আত্কেউঠলাম আমি । ঘুম একেবারেই চলে গেল । সেইসাথে খেয়াল হল আমি কোথায় আছি । একে একে মনে পড়ল সব । জাহাজে ভ্রমন,চাচার মুখ আর ভয়ঙ্কর এইদ্বীপটার কথা ।

প্রথমেই মনে এল শিলুর কথা । পাশের বেডেই শুয়েছে ও । পাশ ফিরে ওদিকে তাকালাম । একরাশ কালো অন্ধকারে কিছুই ঠাওর করতে পারলাম । কয়েকবার চোখ বুঝে আবার তাকালাম ।

চোখ ঘসে অন্ধকারটাকে চোখে সইতে দিলাম । এবার আবছা আবছা দেখা গেল শিলুকে । নাকে মুখে কাথাদিয়ে ঘুমোচ্ছেও । বেঘোরেঘুমোচ্ছে ও । এত বড় একটা শব্দ কি কানে যায়নি ওর? নাকি ,শব্দটা ছোটই ছিল ।

হতে পারে বাংলোটার আশেপাশেই হয়েছে শব্দটা । একে সজাগ ,তারপর নিঝুম রাত । তাই হয়তো মানবীয় আর্তনাদটা অতিমানবীয় হয়েধরা দিয়েছে আমার কাছে । নিজেকে বোঝ দেবার চেষ্টা করলাম । আমার ঘুমুতে চেষ্টা করলাম ।

কেমন একটা অসস্থি লাগতে শুরু করল আমার । মনে হচ্ছে কেউ যেন ঝলঝল চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে । ঘোত্ ঘোত্কয়েকটা শব্দও শুনলামঘরের মধ্যে । তারপর হাটচলার শব্দ । ধীরে ধীরে সরে গেল ওটা ।

একটা ক্যাচ করে শব্দ হল । মনে হল কেউ দরজা খোলে বাইরে বেরিয়ে গেল এইমাত্র । তারপর ক্রমশ হারিয়ে গেল হাটচলার শব্দটা । ঘুমে ঢোলে পড়লাম আমি । : এই অভি !অভি ! আরে উঠ ! রুপার ডাকে ঘুম ভাঙলো আমার ।

চোখ মেলেই ওর বিরুক্তি মাখা মুখটা দেখলাম । : পারিস বটে দুজনে । মা গো!এত ঘুম কি কোন মানুষে ঘুমায় ? দুজন মানে ? কি বলছে রুপা! মুখ ঘুরিয়ে শিলুর বেডেরদিকে তাকালাম । ঘুম ঘুম চোখে বসেছে ও । : এত সাত সকালে দরজাটা খোলে এই দাজ্জালটাকে ঘরে আনলি কেনরে তুই ? শিলুর দিকে প্রশ্নটা ছুড়ে দিলাম আমি ।

ঘোত্ করে একটা শব্দ করল রুপা । ভয়ে মুখের দিকে তাকালাম না ওর । তাকালে দেখতাম রেগে টংহওয়া একটা মুখ । : আমি কখন খোললাম আবার?আমিত এই মাত্র উঠলাম । : তাহলে ? প্রশ্নোবোধক দৃষ্টিতে রুপার দিকে তাকালাম আমি।

সে ঘরে ঢুকলো কি করে? : তাহলে আর কি ? দরজা না দিয়েই ঘুমিয়ে গিয়েছিলে তোমরা । আমি এসে দরজা খোলাই পেয়েছি । : মানে ? এবার নড়েচড়ে বসল শিলু । দিব্বি মনে আছে আমাদের । দরজা ভাল করে বন্ধ করেই ঘুমিয়ে ছিলাম আমরা।

: ছার !ফেরেস হয়ে খাইতে আয়েন । দরজার বাইর থেকে ভেসে এল কথাটা । কেয়ার টেকারের গলা । : আসছি !যাও তুমি ! বলল রুপা । তারপর আবার আমাদের মুখের দিকে তাকাল ও ।

বোকা বোকা একটা দৃষ্টিওর চোখে । হয়তো বুঝতে পারছেনা কিছুই । : শিলু ... রাতের সেই চিত্কার আর ঘরেহাটাহাটির শব্দের কথাগুলো জানাতে গেলাম ওকে । কিন্তু ও হাত দিয়ে থামিয়েদিল আমাকে । : চল ফ্রেস হয়ে খেয়ে আসি ।

অদ্ভূত একটা অবহেলা দেখলাম ওর চোখ মুখে । নিশ্চয় কিছু আচ করেছে ও । হয়তো বা এসব কথা বলা এখনঠিক হচ্ছেনা । চার কি হয়েছে রে তোর ? রেলিং ধরে হাটতে গিয়ে পাকরাও করলাম শিলুকে । ব্যাটার আচরন দেখি বেমালুম পাল্টে গেল ! রহস্যের দিকে যেন কোন ঝোকনেই ওর ।

ওরকম একটা সংঘাতিক কান্ড ঘটার পরও । : তুই কি আমার কথা শুনেছিস ! রাতের কাহিনী গুলো বলারপরও কোন ভাবন্তর নেই শিলুর মুখে । : হ্যা । আর ... । থেমে গেল শিলু ।

: আর কি ? : শু .. মুখে আঙুল চেপে চুপ থাকারইশারা দিল ও । তারপর ধীরে ছাঁদের দরজার দিকে এগিয়ে গেল । এক ঝটকায় খোলে ফেলল দরজাটা । ঝনঝন করে একটা শব্দ হল । থ হয়ে গেলাম আমি ।

থতমত হয়ে দরজার ওপারে দাড়িয়েআছে রামু । । বাংলোর কেয়ার টেকার । : আপনি এখানে কি করছেন ? শিলু যেন জেরা শুরু করল । : জ্বি স্যার ! সাহেব একটাখবর দিতে বলল ।

নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে উত্তর দিতে একটু দেড়ি হয়েগেল ওর । এই ফাকে আমি ওদের কাছাকাছি চলে এলাম । শিলুর মুখের দিকে ও রেগেগেছে কিনা বুঝার চেষ্টা করলাম । মুখ দেখেকিছু বুঝতে পারলাম না । চোখ সরিয়ে রামুর দিকে তাকালাম ।

বেশ ভালই একটাভয় পেয়েছে ও । মুখটা শুকিয়ে গেছে একদম। সিঁড়ির একদম শেষ মাথায় একগোছা চাবির রিং । ভয়ে হয়তো ফেলে দিয়েছে । : হ্যা কি খবর বল ? যেন কিছুই হয়নি এমনভাবেপ্রশ্নটা ছুড়ল শিলু ।

: সাহেব ! একটা ঢোক গিলল রামু । যেন জোর করে স্বাভাবিকহওয়ার প্রচেষ্টায় আছে ও। : আজকেও একজন খুন হয়েছে । আপনাকে দ্রুত নিচে যেতে বলেছে । বলেই ঘুরে দাড়াল ও ।

হনহন করে নিচে নেমে গেল । যাবারসময় সন্তর্পনে চাবির গোছাটানিয়ে গেল । ||পাঁচ|| ভয়ঙ্কর অবস্থা নিচে । একটা বিভত্স লাশ নিচে । বিকট গন্ধে কেউ কাছে ঘেষতে পারছেনা ।

ব্যাপারটা আমার কাছে অদ্ভুত ঠেকল । একরাতের মধ্যে লাশটা পচার কথা না । তাছাড়া গন্ধটাতেও একটা কিন্তু কিন্তু লাগছে । কেমন যেন একটু বেশি বিকট । একটু বেশি প্রকট আর কেমনযেন কৃত্রিম কৃত্রিম ভাব ।

দু চার একটা লাঠি দিয়ে লাশটাকে একটা শবখাটে উঠিয়ে নিল । তারপর নাঁকমুখ বেধে সাগরে ফেলে দিয়ে আসল । ক্রমান্বয়ে .... আগের প্রকাশিতঃ http://alor-nishan.com/viewtopic.php?id=1273 ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.