আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজনকে অপছন্দ করতেই পারি : তাই বলে অপমান করতে হবে কেন ?

জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই আমি ব্যক্তিগতভাবে কখনো হুমায়ূন আজাদের লেখার ভক্ত হতে পারি নি। লেখক হিসেবে উনি অনেক বড় মাপের। তার লাল নীল দীপাবলী ও কত নদী সরোবর পড়ে তার প্রতি এক ধরনের সমীহ গড়ে উঠেছিল। তার অগাধ জ্ঞান সম্পর্কে কোন সন্দেহ ছিল না। তার নারী পড়ে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম।

অসাধারণ এক বই। আরেকটা অসাধারণ বই হল তার প্রবচনগুচ্ছ। তার কোন কবিতার বই পড়া হয় নি। কবিতার প্রতি আকর্যণ নাই বিধায় পড়া হয় নি। কিন্তু তার উপন্যাসগুলো পড়ে আমি হতাশ হয়েছি।

সবগুলো পড়া হয় নি ; পড়ার উৎসাহ পাই নি বলে। তার উপন্যাস পড়া শুরু সেই ছাপ্নান্ন হাজার বর্গমাইল থেকে। তারপর সবকিছু ভেঙ্গে পড়ে। দুটি উপন্যাসের মধ্যে গল্পের চেয়ে নীতিকথা বেশি। তারচেয়ে বেশী পর্নগ্রাফি।

কোথাও কোথাও অতিরিক্ত নোংরা বর্ণনা । অশ্লীল কথাবার্তায় ভরা। আমার কাছে মনে হয়, যৌনতা মানুষের জীবনের স্বাভাবিক ঘটনা। তবে সেটাই জীবন নয়। জীবনে যৌনতার দরকার আছে।

কিন্তু জীবনটা কেবল যৌনতাময় নয়। যৌনতা ছাড়াও জীবনের অনেক অনেক উপাদান আছে যেগুলো লেখার উপাদান হতে পারে এবং হওযাও উচিত। কোন উপাদান কোন মাত্রায় থাকবে সেটা একটা মাত্রায় বেঁধে রাখা দরকার। নইলে লেখাটা কোন বিশেষ উপাদানসর্বস্ব হয়ে যায়। শুভব্রত, তার সম্পর্কিত সুসমাচার গ্রন্থটি আমার কাছে মনে হয় যিশু খ্রিষ্টকে ব্যাঙ্গ করে লেখা।

আসলে এই বইটা যে কোন ধর্ম প্রচারকারীকে ভণ্ড বলার চেষ্টা। ধর্ম যে একটা ভুয়া জিনিস এ কথাই প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন এই বইয়ে। ধর্মকে সরাসরি আক্রমণ করে লেখার ফলে তার শত্রুর অভাব নাই। তার এই দৃষ্টিভঙ্গির কারণে উনি হামলার শিকার হন। ফালি ফালি করে কাটা চাঁদ উপন্যাসেও রগরগে বর্ণনার অভাব নাই।

যৌনতার ছড়াছড়ি। অশ্লীল বর্ণনা। ড. হুমায়ূন আজাদ একজন প্রতিভাবান মানুষ। তার মতো প্রতিভাবান মানুষ প্রকৃত অর্থেই বিরল। তিনি যা কিছু লিখেছেন, সেগুলো ব্যক্তিগতভাবে আমাদের ভালো না লাগতে পারে, কিন্তু তার লেখা সম্পর্কে কেউ বললে বা লিখলে সেটাকে বাধা দেয়ার অধিকার কারো নাই।

প্রত্যেকের স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশের অধিকার আছে। ১১ আগস্ট ছিল হুমায়ূন আজাদের মৃত্যু দিবস। এই মৃত্যু দিবসটি যথাযথভাবে পালন করা হচ্ছে না বা মানুষ তাকে ভুলে গেছে এই আক্ষেপ নিয়ে ব্লগার রেজা ঘটক একটা পোস্ট দিয়েছেন। সেই পোস্টটা এখন স্টিকি পোস্ট। স্টিকি পোস্টে ড. হুমায়ূন আজাদকে ধোলাই করা হচ্ছে ।

সেটাও মাত্রা পর্যন্ত ঠিক আছে। কিন্তু পোস্ট স্টিকি সরান বলা বা তাকে গালাগালি করার অধিকার কারো নাই । ভালো না লাগলে কেন ভালো লাগে নি, সেটা বলতে পারি। কিন্তু অনর্থক গালাগালি করা কি ঠিক ? মানুষ তখনই গালাগালি করে যখন যুক্তি দিয়ে বলার মতো কিছু থাকে না। আমরা প্রত্যেকে নিশ্চয়ই বিশ্বাস করি যে, আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে।

যদি আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকে, তবে প্রতিপক্ষের কেন থাকবে না ? আর প্রতিপক্ষের মত প্রকাশের ব্যাপারে বাধা প্রদান করি, তাহলে আমরা কি আসলে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বা বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি ? আমরা কাউকে অপছন্দ করতেই পারি, তাই বলে তাকে অপমান করার অধিকার কি আমাদের আছে ? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.