আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছুটির দিন ও পতাকা

আকাশ আজ খুব সকালে উঠেছে। এমনিতে ঘুম থেকে উঠতে দেরী হওয়ার কারণে স্কুলে যেতে প্রতিদিনই তার দেরী হয় আর শাস্তি পেতে হয়। আজকে ওকে একবার ডাকতেও হয়নি। কারণ কাল রাতে উপর তলার শেফালী আপু বলে সকালে ওকে নিয়ে ছাদে পতাকা টাঙাতে যাবে। উঠে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে বড় কাটাটা ৬ আর ৭ এর মাঝখানে আর ছোট কাটাটা ৭ এর কাছে।

তার মানে ৭টা অথবা ৮টা কিংবা ৬টা বাজে। সে বড় কাটাটা আর অস্থির চিকন কাটার মানে এখনও বুঝতে না, কিন্তু সবার ছোট কাটা যেখানে থাকে সেটাই আসল এটা বুঝতে পেরে গেছে। যদিও ওর ক্লাসের প্রায় সবাই ঘড়ির কোনটা কোথায় থাকলে সাড়ে নাকি সমান এটা কেমন করে যেন বুঝে ফেলেছে কিন্তু সে এখনও এগুলো বুঝে না। এটা ওকে মাঝে মাঝে খুব লজ্জায় ফেলে দেয় তাই সময়ের ব্যাপারে কথা উঠলেই সে মোটামুটি গুটিসুটি মেরে যায়। যাই হোক, যে কয়টাই বাজুক এখনও যেহেতু আম্মু ওঠেনি তার মানে এখনও পুরোপুরি সকাল হয়নি।

ব্রাশ করতে আকাশের সবসময় খারাপ লাগে। আজকে চাইলে শুধু মুখে পানি দিয়েই আম্মুকে ডাকতে পারতো। কিন্তু যেহেতু শেফালী আপু বলেছ আজ অনেক বড় একটা দিন তাই আম্মু সামনে না থাকলেও সুন্দর করে বেশ সময় নিয়ে দাঁত ব্রাশ করল। তারপর গিয়ে আম্মুদের ঘরের দরজা দুইবার ধাক্কাতেই আম্মু উঠে পড়ল। আকাশকে দেখে আম্মু অনেক অবাক হয়েছে।

এত সকালে তো কোনদিন সে উঠে নাই আগে। মাকে চমকে দিতে পেরে আকাশ বেশ মজা পেল। কিন্তু এখন আর বেশি দেরী করলে চলবে না। শেষে শেফালী আপু ওকে ছাড়াই ছাদে চলে যাবে। সে দৌড়ে গিয়ে ফুলপ্যান্ট পরতে লাগল।

তা দেখে আকাশের মা আর্ও অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, কি ব্যাপার প্যান্ট পরছিস কেন। আর এত সকালে না ঘুমিয়ে কি করছিস তুই। আকাশ গেঞ্জিটা পরতে পরতেই বলল, আরে আজকে শেফালী আপু বলেছে সকাল সকাল উঠে বাসায় যেতে। ছাদে পতাকা টাঙাতে যাব আমরা। এটুকু বলেই দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়াল।

আকাশের মা ঘড়ির দিকে তাকাতে দেখল ৭টা বাজতে ১০ মিনিট বাকি। এত সকালে কার্ও বাসায় যাওয়া কেমন দেখায় তাও আবার ছুটির দিন। কিন্তু আকাশের উৎসাহ দেখে কিছু বললেন না। তাছাড়া শেফালীরা সবাই আকাশকে অনেক আদর করে। এই বাড়ির আশেপাশের এমনকি পাশের গলির কেউই আকাশের নামে কখন্ও কম্প্লেন করেনি এমন নেই।

একমাত্র শেফালীরাই ওর সম্পর্কে কোন কিছু বলে না বরং সবসময় আকাশের প্রশংসা করে। আকাশ পরীক্ষায় ফেল করুক অথবা রাস্তায় কাউকে মারধর করে আসুক কিংবা কারও বাড়ির জানালায় ঢিল মেরে আসুক, যে কোনরকম অঘটন ঘটিয়ে আসলে প্রায় সবসময় ওদের বাসাতেই লুকিয়ে থাকে। দরজাটা খুলে দিয়ে বলল, ওরা যদি বিরক্ত হয় চুপচাপ চলে এস। আকাশ মাথা নেড়ে আচ্ছা ঠিক আছে বলে এক দৌড়ে উপরের দিকে চলে গেল। (চলবে) ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।