Indolence always invades me but I make it as an art!! ঢাবিতে আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু ছিল বেলাল হোসেন। ছিল অসাধারন প্রতিভাদর এবং বুদ্ধিমান। ছিল বলছি, কারণ পড়াশুনার পাঠ কিছুদিন আগে চুকিয়ে ফেলেছি। তো যাই হোক, সে ছিল অলসের ঢেঁকি। ক্লাস না থাকলে ঘুম থেকে উঠত বাদ যোহর।
সকালের নাস্তা যে কবে করছিলো আল্লাহ্ই মালুম। বেশীরভাগ সময় ক্লাস এ যেত আধ ঘণ্টা পর। কিন্তু কি আশ্চর্য!! কখনই স্যাররা তাকে বকাঝকা করতো না। ক্লাসের সবাই তাকে বলতো "লেইট লতিফ"। ক্লাসে বসেই তার মনোযোগ চলে যেত স্যারের লেকচারের মধ্যে।
একবছর আগে বা তারও আগে কোন এক স্যার ক্লাসে কি বলেছিল তা সে অনর্গল বলে যেতে পারতো। আর আমরা বা বিশেষ করে আমি যদি না মনে করতে পারতাম তাহলে আমি বা আমরা হয়ে যেতাম বুদ্ধু, যদিও এটা সে মুখে বলতো না কিন্তু বোঝা যেত তার আচরণে। পরীক্ষার হলে তার প্রধান সম্বল ছিল ক্লাসে বলা স্যারের লেকচারগুলো। আগেই বলেছি, সে লেকচারগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনত এবং তাই লিখে আসতো। টার্ম পরীক্ষাগুলোতে আগের রাতে পড়তো।
যদিও আমি তার চেয়েও কম পড়তাম। যাই হোক, পরীক্ষার ফলাফলে ওর বড়বড় নম্বর দেখে আমি অবাক হতাম। সবচেয়ে বেশি অবাক হতাম ওর অ্যাসাইনমেন্ট এর নম্বর দেখে। গ্রুপ অ্যাসাইনমেন্ট গুলো বেশীরভাগ সময়ে আমি অথবা অন্য গ্রুপ মেম্বাররা করতো। সে বলতে গেলে কিছুই করতো না।
কিন্তু, সে আমার চেয়ে বেশি নম্বর পেত। কিন্তু, অ্যাসাইনমেন্ট গুলোতে একটু ভুল হলেই চলতো আমার উপর স্টিম রোলার। আমি নীরবেই মেনে নিতাম। এতো গেল একাডেমীক ব্যাপার সেপার। ওর হলে কখনই ফ্লেক্সিলোড থাকতো না।
আমাকে ফোন করে বলতো ওর জন্য একটু যেন ফ্লেক্সি করি। পাঁচতলা থেকে নামতাম, আমার হলে ফ্লেক্সি না থাকলে পাশের হলে যেতাম, কখনও কখনও ফ্লেক্সি না পেলে কার্ড কিনে তার পিন নম্বর তা ওকে মেসেজ করতাম। কতদিন ভিসি চত্বরে ও আমাকে আসবে বলে আসতো অনেক পরে। ওর অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আমাকে করে দিতে হতো। অন্য বন্ধুরাও অনেক সাহায্য করতো।
কিন্তু এতে একটু ভুল হলেই ও ভীষণ বকাঝকা করতো। কতদিন কত লোককে যে ও কতটা অপেক্ষায় রেখেছে আল্লাহ্ মালুম। ভাগ্যদেবী ওর দিকে বারবার মুখ তুলে তাকিয়েছে। হয়তো, ও অনেক বেশি প্রতিভাদর বলে। আর সেই প্রতিভা আর আল্লাহর অশেষ রহমতের ফলে আমার এই বন্ধুটি বিদেশ বিভুইএ পাড়ি দিচ্ছে।
হয়তো আর আমাকে জ্বালাতন করবে না। হয়তো আর বকাঝকা করবে না। কিন্তু আমি তো তার এসব জ্বালাতন করা মিস করবো। যাই হোক, তুই ভালো থাক যেখানেই যাস না কেন। আমি হতভাগা রামছাগল এর চেয়ে আর কিই বলতে পারি।
তোর সুস্বাস্থ্য সর্বদা কামনা করি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।