ব্যক্তিগত:
তোমার অসুখ আমাকে ভীত করে,ডাইনীর চোখের মতো।
প্রতিদিনের জামা-কাপড়ের মতো বদলে নিতে পারি না ,তা
মনে করে একটুও ক্লান্ত হয়নি আমি। তোমাকে দেখেছি
সদ্যজাত কন্যার চুলের গন্ধ নিতে নিতে আর ফিরে
গেছি ,বহুদিনের পরিচিত পথের বাঁকে বাঁকে খুঁজে খুঁজে বাড়ি।
সেই বাড়ি-অনাদি কালের মতো তোমাকে-আমাকে করেছে
স্থির, স্যভলনের গন্ধ ভরা রুমে, স্ট্যাটিক বিছানা
বালিশ আর স্যালাইনের সুঁচ,তোমার হাতের রগে রক্ত
জমে গেছে। ওরা আমাকে শিখিয়েছে কোনটা ব্লিডিং আর
কোনটা নেহায়েৎ সুঁচের সহজাত ক্ষত! আমি শুধু্ই
বোকার মতো চেয়েছিলাম - তরুণী ডাক্তারণীর প্রতি হা!
আমাকে একটুও কামুক করে তোলেনি সত্যি! আর কিছু
বললেই, তোমরা বলে বসবে;বিছানা-বালিশের সাথে এ্যাঁ-
সঙ্গম চলে না , ওটা হল স্বমেহন ! তোমরা কেউই
চিনতে পারোনি এই বাউল হৃদয়! চেনবার দায়ভার
কার এমন বল... চঞ্চল কৈশোর থেকে তারুণ্যের মধ্যমা
ছুঁয়ে, এ’সিত্যিই জেনেছি; প্রকাশিত সত্যের চেয়ে মিথ্যা
অনেক বড় ! মানুষ মিথ্যা বড় ভালবাসে! অগোচরেই!
রোগিনী:
তোমার নির্বাক চোখ জোড়া দেখি, নিয়ন্ত্রণহীন মণি
মাঝে মাঝে অবাক বিস্ময়ে জেলখানার গরাদের মতো
দেয়ালের দিকে তাকিয়ে, বালিকার সন্কোচ নিয়ে প্রশ্ন
করেছ খেয়ালে, “ আমার কী হয়েছে ?“ নৈর্ব্যক্তিক চাহনি
তোমার, আমাকে বিদ্ধ করেছে প্রতিনিয়ত! প্রতিনিয়ত!
সচেতন উদাসীনতা নিয়ে বারবার রিপোর্ট ফাইল
উল্টে-পাল্টে পাখি পড়ার মতো বলেছি জটিল জড়তা।
এর বিকল্প কোনো পথ ছিল না আমার । জীবাণুতত্ত্ব?
আমার জানা ছিল না কোনোকালে। রোগের সাথে চিকিৎসক
বহু পুরনো অভিধা, আমি নেহায়েৎ এ্যাটেন্ড্যান্টস!
মাঝে মাঝে তোমার নিশ্চল হাত- পা উপস্থিতি জানান
দেয়, ওগুলো কোনোকালে সচল ছিল ,ফিজিও থেরাপী নাও ,
আমি যুদ্ধ করে যাই, সারা শরীর জুড়ে কোমল ম্যাসাজ
করতে করতে ভেবেছি , এই হাত কদ নিপুণ ছিল,কত
বেহায়া হয়েছে প্রেমের দ্যোতনায়। অঙ্গই কেবল,
বোধ ছাড়া বোধি হয় না, এই উপলব্ধি বোধের অতীত
ছিল আমার। সকল ছোঁয়াই মধুমাখা স্রোতের ঢল না,
নির্বীষ সাপের মতো পড়ে থাকে, শুকনো খটখটে মরু।
ফিরতি আলাপ:
উদাসীন, এই গর্তে ডুবে যাচ্ছি মনে হয় আমি-তুমি
শরীরের সবখানে যেন জমে যাচ্ছে বিচিত্র আলাপ।
অসহ্য সারাদিন নিয়মের বাছ - বিচার নিয়ে সমূহ
জটিলতা করে পার, ফিরতে হয় ঘরে; কিছুটা অন্তিম
মুহুর্তের কথা মনে পড়ে যায়। ক্লোরোফর্ম ঘর!
আমি তখন মনোযোগী হই স্টার ম্যুভিজ-এ,তখনও
তোমার স্টার প্লাস দেখার জেদী চাহিদা গড়ে ওঠেনি।
সারাদিনের গল্প বলি ফাঁকে ফাঁকে , আরোপিত সব গান
গেয়ে যাই আনমনে। অনেকগুলো ফোন এ্যটেন্ড করতে
করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ি! তোমার অসুখ আমার মূল্য
নির্ধারণ করেছে পূনর্বার! বুঝি কারো কারা মূর্ত্তি
বাজারে সাজানো স্কিনি নারী পুতুল , ক্রেতা আকর্ষণ!
আমার গলা দিয়ে বেরিয়ে আসে বাতাস , লু দীর্ঘশ্বাস।
এক্ষনে তোমার উপর আমার অধিকার তীব্র হল,
বের হয়ে আসি , দেখি রেলিংয়ের উপর ফ্লুরোসেন্ট
আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে বেহিসাবি রোদ। নিয়তির নির্মম
হাসি শুনে দেখি রাতের রাস্তায় কোনো ট্রাফিক জ্যাম নাই।
এদিকে জ্যাম পড়ছে বিচিত্র শরীরের কণায় কণায়.. ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।