জীবনটা যেন এক বর্ণীল প্রজাপতি
অচীন অন্বেষা
১
কিছুদিন হলো একজন আমাকে ডিস্টার্ব করছে। কোত্থেকে আমার আইডি পেয়েছে জানিনা। জিজ্ঞেস করলে বলেও না। মেয়ে মানুষ যে এত ক্রিটিক্যাল হতে পারে আমার ধারণাতেই ছিলো না!
আমি অনলাইন এসে ঢুকতেই সেই মেয়ের কাছ থেকে আমার উইন্ডোতে ছুটে আসে ‘হাই’, ‘হেলো’! ‘কি করছেন?’
মেয়েটার কি আর কোন কাজকর্ম নেই! সারাদিন কি এইসবই করে?
কোত্থেকে যে আমার আইডী পেলো! জিজ্ঞেস করলেও বলে না। নিজের ছবি দেখাতে বললে শেয়ার করবে না! ফোন নাম্বার দিয়ে কথা বলতে চাইলাম।
কথাও বলবে না। আজব এক চিজের খপ্পরে পরেছি যা হোক! আমি চ্যাট করতে চাই না। তবুও যেন জোর করে কথা বলতে হয়!
২
কয়েকদিন পর...
মেয়েটার অত্যাচারে বিরক্ত হয়ে কয়েকদিন অনলাইনেই বসিনি। অবশ্য কথাটি পুরোপুরি ঠিক না। অফিসের ব্যস্ততাও ছিলো।
প্রাইভেট কোম্পানীর চাকরিগুলো সারাদিনের সবটুকু সময় নিয়ে নেয়। কয়েকদিন তো প্রায় মাঝরাতে বাড়ি ফিরলাম। আর, তখন অনলাইনে বসবো কি! খেয়ে দেয়ে ঘুম।
৩
বেশ কয়েকদিনের কথা নেই। আজ অনলাইনে বসেছি।
মেয়েটিকে দেখছিনা! নাকি নতুন কোন মানুষকে খুঁজে নিয়েছে! আহ, বাঁচা গেলো!
অনেকক্ষণ ধরে বসে আছি। হাতে সামান্য কাজ ছিলো। অফিসের। সেটা করে নিয়েছি অনেকটা আগেই। এর মধ্যে রাতের খাওয়া হয়ে গেছে।
মায়ের সাথেও একটু কথা বলে এলাম।
আবার ফিরে এলাম নিজের ঘরে। অনলাইন কানেক্ট করলাম আবারো। আর কোন কাজ নেই। কিন্তু মেয়েটি আজ নেই কেন? আশ্চর্য!
৪
আজ আমার এখানে আর কেউ নেই যার সাথে কথা বলা যায়।
আজ অফিস ছুটি। শুক্রবার। সব ব্যস্ততা ছুটি নিয়েছে। সপ্তাহের এই একটি দিনই আমার আরামের দিন। আরাম করে ঘুমাতে পারি।
নিজের মত করে সময় কাটাতে পারি।
কি করা যায়! কি যেন নাম মেয়েটার! রুনিয়া ফারুক। এইরকমই তো মনে হয় কিছু একটা। ফেসবুক প্রোফাইলে ঢুকি। অনেক দিন নিজের জায়গাটা দেখা হয় না।
নিজের একাউন্টে ঢুকতেই নজরে এলো বাম পাশে বন্ধুতার অনুরোধের অংশে নতুন একটি অনুরোধ এসেছে। জায়গাটিতে ক্লিক করতেই কিছুক্ষণের মধ্যেই নামটি ক্লিয়ার হলো। রুমিন ফারুক! ফেসবুক ফ্রেন্ডের রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে। একটা পুতুলের ছবি দেয়া প্রোফাইলে। নিজের ছবি না দেখানোর প্ল্যান! ওকে!
“আমিও যে অচেনা কাউকে আমার কোনকিছু দেখাই না।
সো, মেয়ে তোমার রিকোয়েস্ট আমি গ্রহণ করতে পারছিনা, দুঃখিত!”
সাইন আউট করে জুম্মার নামাজের প্রস্তুতি নিতে চললাম।
৫
কিছুদিন পর...
ফুরফুরে এক বিকেল। ভালোই লাগছে আবহাওয়াটা। তবে, আকাশটা গুমোট অন্ধকার। ঝড় আসতে পারে।
তাই ইচ্ছে করলো একটু সোহীর ওখান থেকে ঘুরে আসি।
সোহীর বাসা থেকে ঘুরে এসেছি।
আজ ও ডিনার করিয়ে তবেই ছুটি দিয়েছে। খুব ভালো কাটলো অনেক দিন পরে মিষ্টি মেয়েটির সাথে সময় কাটাতে। কতদিন আগের কথা! আমরা একসাথে কয়েক বন্ধু প্রায়ই টিএসসিতে আড্ডা দিতাম।
ভার্সিটি পড়ার সময়। সোহী ছিলো অসাধারণ গায়িকা। আমাদের আড্ডা মাতিয়ে রাখার জন্য অসাধারণ কণ্ঠস্বর। কোন গান ওর কন্ঠে শুনতে খারাপ লাগতো! আর, দুষ্টুমি চলতো অনেক ধরনের। হেন বিষয় নেই যা আমাদের আড্ডায় উঠে আসতো না।
সোহীর কিচ্ছু গায়ে লাগতো না। নারী-পুরুষের সব ধরনের কথাই আমরা এই কয় বন্ধু মিলে খুব শেয়ার করতাম।
এত কাছের বন্ধু ছিলাম পরস্পরের। অথচ, সোহী আর শিফাত পালিয়ে বিয়ে করে ফেলার আগে আমরা কিছু জানতেই পারলাম না। মেয়েটিকে এত ভালো লাগতো আমার।
কিন্তু, তখনো পড়াশুনা শেষ করিনি। তেমন কিছু হয়েও উঠিনি যে কাউকে প্রপোজ করা যায়। সোহী আমাকে ভীষণ টানতো। কি যেন একটা বিশেষ আকর্ষণ ছিলো ওর মধ্যে! পাতলা শ্যামলা! কিন্তু দারুন ফিগার! চট করে চোখে পরে না। কিন্তু, কোথাও এতটুকু কমতি নেই।
একেবারে খাপে খাপে ভরে নিখুঁত করে গড়েছেন যেন বিধাতা ওকে।
ওর বিয়ে হয়ে যাবার পর, আমাদের আড্ডাটা আর জমলো না। আমিও ছিটকে পরলাম অন্যদিকে।
মাঝে অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে। আজ আমি প্রতিষ্ঠিত।
কিন্তু, সোহী তো এখন অন্যের।
অনেক দিন পরে ওর দেখা মিললো। আজ আমার চিত্ত বেশ চঞ্চল!
ভালো লাগছে না। একা একা! বন্ধুরা সবাই বিয়ে করে ফেললো। দু’তিনটে করে বাচ্চাকাচ্চার বাবা হয়ে গেলো।
সোহী-শিফাতেরও তিন ছেলে। আর আমি? এখনো একা। কাউকে নিজের করে পেতে পারছি না এখনো!
৬
মাস ছয়েক পর...
খুব ব্যস্ততা বেড়েছে। এর মধ্যে কত কিছু হয়ে গেলো। ছোট ভাইটার বিয়ে হয়ে গেলো।
হয়ে গেলো বলতে ও কাউকে জীবনসংগীরূপে খুঁজে পেয়েছে তাই আর দেরী করলো না। আমিও আপত্তি করলাম না। ইদানিং এইসব নিয়ে কেউ ভাবে নাকি! যার সময় হয়ে গেছে সে তার নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে নিক।
আমার তো কাউকে পাওয়া যাচ্ছেনা। কাউকে পছন্দও করতে পারলাম না এখনো।
অনলাইনে বসেছিলাম। ঘুম আসছে না! আরেহ, মেয়েটি দেখি অনলাইনে আছে! এখন বাজে রাত দুইটার বেশি। এত রাতেও জেগে আছে! আমিও তো জেগে আছি। কই, আমাকে তো হেলো, হাই বলছে না! বলছে না কেন? আমাকে কি দেখতে পায়নি?
নিজেই আগ বাড়িয়ে আজ কথা বললাম, “ হাই, কেমন আছেন?”
প্রায় সাথে সাথেই জবাব এলো, “হ্যাঁ, ভালো। “
যাহ! আমার লাইনটা কেটে গেছে।
এত রাতে মেয়েটা কেন জেগে আছে জানতেই হবে আমাকে।
এখন কথা বলতে ইচ্ছে করছে খুউব। অথচ, লাইনটা এত্ত ডিস্টার্ব করছে! উফ! কানেক্ট হয়ে না কেন? এইবার হয়েছে। গুড।
মিনিট পনেরো কেটে গেছে।
তাও দেখছি, মেয়েটা অনলাইনে আছে। এখনো! বাহ! এবারো জিজ্ঞেস করলাম, “এখনো জেগে আছেন?”
- “হু, কাজ করছি। “
কাজ করছে। “এত রাতে অনলাইনে কি কাজ তোমার, মেয়ে!”
আরো কিছুক্ষণ বসে রইলাম। নাহ, মেয়েটি তো মোটেই পাত্তা দিচ্ছে না! ধুর! যাই-গে।
ঘুমাই।
৭
সন্ধ্যের অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে,
এখনো আলো জ্বলে ওঠেনি সবগুলো বাড়ির;
আমি বসে আছি নতুন বিছানো জাজিম আর তোষকে মোড়ানো
উঁচু বিছানায়;
থাই লাগানো লম্বা শার্শিটার পরদা সরানো,
আমার পিঠে এসে পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে
এলোমেলো হাওয়ায়;
পেছনের চিপা গলিতে সন্ধ্যার ঘর ফেরত যাত্রীর আর
ছোট ক্রিকেট খেলুড়ে ছেলেপেলেদের কথা
ভেসে আসছে টুকটাক,
আমি অন্ধকারের কাছে জানাই আর্তি, কবে পাবো দেখা আমার প্রিয়ার!
...ও প্রিয়া, ও প্রিয়া, তুমি কোথায়?
ইদানিং বড় বেশি একা লাগছে। যতটা সময় ব্যস্ত থাকি অফিস, কাজ নিয়ে ততটা সময়ই ভালো থাকি।
ছোটকা বিয়ে করে ফেলায় যেন আরো একা হয়ে গেলাম। পাশাপাশি দুটি বেড রুমের একটিতে ছোটকা আর আমি।
বেশ রাত হয়ে গেলেই অদ্ভূত শব্দ ভেসে আসে পাশের ঘর থেকে। স্পষ্ট বোঝা যায় না। কিন্তু, কেমন যেন উত্তেজিত করে দেয় আমাকে। প্রথম দিকে থিরথির করে কাঁপে শরীরটা। অদ্ভূত ভালোলাগায় ছেয়ে যায়।
ইচ্ছে করে কোন রমনীর সাথে যদি কথা বলা যেতো। ভালো লাগার অনুভূতিটা বাড়তে বাড়তে ধীরে ধীরে এমন অবস্থা হয় যে নিজেকে এক সময় ক্ষত বিক্ষত করে ফেলতে ইচ্ছে করে।
সেই মেয়েটিকে বড় বেশি মনে পরছে! আমি কি খুব খারাপ ব্যবহার করেছি মেয়েটির সাথে! বিরক্ত ছিলাম অবশ্য একটা সময়। কিন্তু, বকে তো দেইনি। তবে, এত আগ্রহ ছিলো আমাকে নিয়ে।
এখন নেই কেন?
রাত একটার দিকে দেখা মিললো, কাংখিত মানুষটার! কাংক্ষিত! আআহ! কি বললাম, আমি!
মেয়েটি এত রাতে এখানে! আবার যদি চলে যায়! তাড়াতাড়ি মেসেজ দিলাম, “হাই! আর ইউ হট টুডে?”
মেয়েটির দিক থেকে কোন সাড়া নেই। “ধ্যেত! কথা বলে না কেন? মাথায় আগুন ধরে যাচ্ছে!”
“একজন মেয়েমানুষ পাওয়া গিয়েছিলো যার আগ্রহ ছিলো আমাকে নিয়ে তাও নিজের হাতে সম্ভাবনাটা নষ্ট করলাম! উফ! আফসোস! এট লিস্ট, মেয়েটির সাথে বন্ধুত্ব হলে তো এখন এই অস্থির সময়ে কাজে লাগতো। কথা শেয়ার করা যেত! মন খারাপ ভাবটা কেটে যেতো। ”
“দেখি তো কে কে অনলাইনে আছে। আবার চেক করে দেখি।
আর কারো সাথে এই উত্তপ্ত সময়টাকে পার করা যায় কিনা দেখি। ”
আমি আমার মেসেঞ্জারের এড্রেস বুক দেখতে থাকি।
নাহিন- অফলাইন।
মেজবাহ- অফলাইন।
শুরভী- নাই।
মিতু-নাই।
জোসেফ আরিয়া...
ইশরাত...
ইয়াসীন...
মোহন...
সাথী...
...
কেউ নাই। সব ব্যস্ত! এই পৃথিবীর সবাই ব্যস্ত আমাকে ছাড়া। সব ঘুমিয়ে গেছে!
সবারই কাল সকালে অফিস আছে। কাজ আছে।
সব কাজ পাগল লোক ঘুমাতে চলে গেছে। রাত এখন তিনটারও বেশি! উফ ঘুম তুই কোথায়!
৮
আজও আমার ছুটি। আজ শনিবার। সকাল সকাল ঘুম হতে উঠে সপ্তাহের এই দিনটা আমি বাজার করি।
বাজার করে নিয়ে এসে আমি শাওয়ারে ঢুকে গেলাম।
প্রচন্ড গরম লাগছে। ঢাকা শহরটা জ্যামের জন্য পৃথিবী বিখ্যাত হয়ে যাবে মনে হচ্ছে।
এখন তো আর কোন কাজ নেই। বসি আবার একটু অনলাইনে।
বাহ, আজ দেখি ঐ মেয়েটাও আছে।
রুমিন ফারুক!
আজ মেয়েটাকে ডাকতেই বেশ খলখলিয়ে কথা বলতে লাগলো।
- কোথায় পেয়েছেন আমার ঠিকানা বলুন তো?
- সেটা কি বলতেই হবে?
- ওহ, বলতে চান না?
- নাহ, চাইনা।
- কেন?
- কি হবে বলে?
- মানে?
- কোন মানে নেই!
এর মধ্যে আমার চোখ পরলো ওর প্রোফাইল ছবিটার দিকে। আরেহ, আজ দেখি মেয়েটি ছবিও এটাচ করেছে। দারুন চোখ তো মেয়েটির! মৃদু মৃদু হাসছে যেন ছবিটা ওর দিকে চেয়েই।
ছবিটা ছোট্ট হলেও চোখ দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সাথে সাথে মনের মধ্যে গান মনে বেজে উঠলো,
“মেয়ে তুমি তো আমার নও চেনা। পলক তবু কেন আর পরেনা।
জানি না মরা যে কী হলো। যেও না যেওনা।
কিছু তো বলো।
যদি কথা না হয়। দেখা না হয়।
হারিয়ে যাও এক ঝলকে।
মেয়ে কথা না কও।
ফিরে না চাও।
সংগী করে নাও আমাকে।
হৃদয়ের প্রাণ মোহনায়।
ভেসে যাবো আজ দুজনায়।
চলোনা মেঘের সীমানায়।
সাজিয়ে দেবো দুজনায়।
জাদু। চোখেতে করেছো দিশেহারা।
ভুলতে চাই তবু পারিনা।
আমি যে আজ পাগল পারা।
তোমাতে...”
- জিজ্ঞেস করলাম- “ছবিটা কার?”
রুমিন উত্তর দিলো, “কোন ছবিটা?” মনে হয় বুঝতেই পারেনি! এহ, কত ঢঙ! জিজ্ঞেস করলাম, “আপনার প্রোফাইলে যাকে দেখতে পাচ্ছি। “
এবার খেয়াল করলো মেয়েটি। “ওহ, ঐটা কে হতে পারে। আমার প্রোফাইলে যেহেতু, আমারই ছবি!” এবার সাথে একটা হাসিমুখ এর ইমোটিকনও উপহার দিলো মেয়েটি।
উফ, মনের সেতারে ঢঙ করে বেশ জোরেই বাজলো একটি ঘন্টা!
৯
মাঝে কেটে গেছে অনেক দিন।
রুমিন এখন আমার সাথে ভালোই বন্ধুতার সম্পর্কে জড়িয়ে গেছে। এখন ওর সম্পর্কে অনেক কিছু জানাও হয়ে গেছে আমার। ও কি পড়ে। কি করে। বাসা কোথায়।
ফ্যামিলিতে কারা আছে না আছে যাবতীয় সবকিছু।
রুমিনের কথাতে তো মনে হয়, আমাকে ওর খুবই পছন্দ। আমি প্রায়ই চাইছি ওকে আমার মনের কথাটা জানানোর। কিন্তু, একটু আয়োজন করে যদি বিষয়টা জানাই, মন্দ হয় না। তবে, এবার আর দেরী করছি না।
আর ভুল করতে চাই না। একবার সোহীকে হারিয়েছি। আর সে ভুল করা যাবে না। আসছে শুক্র বা শনিবার ওকে আশুলিয়ায় আসতে বলেছি। জায়গা ঠিক হয়ে গেছে কোথায় আমাদের দেখা হবে।
শুধু ও আগের রাতে কনফার্ম করবে শুক্র নাকি শনিবার। সেদিন ওকে আমি চমকে দেবো। আমি জানি ও অনেক খুশি হবে। অনেক।
আর মাত্র দুটো দিন পরেই আমাদের দেখা হবে।
উত্তেজনায় আমি ঘুমাতে পারছিনা ঠিকমত। কবে আসবে সেই সময়টা। সেই কাঙ্ক্ষিত অসাধারণ মুহুর্তটা। আমি প্রতিটি সময়ের হিসেব করে যাই আর দেখে যাই আমার স্বপ্নপূরণের।
...সমাপ্ত...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।