মেধাশুন্য করার মেশিন ?????? এই শিক্ষা প্রতিষ্টানটি যত পুরনো হচ্ছে এর ঐতিহ্য ততই নিভে যাচ্ছে । যে ছেলে বা মেয়ে সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা করে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চান্স পায় , সেই ছেলে বা মেয়ের সকল মেধা কি ভর্তি হওয়ার পরে বানের জলে ধুইয়ে নিয়ে যায় ?? ধরি , বানের জলে ধুইয়ে নিয়ে যায় , এই জল কোথা থেকে আসে , এর উৎপত্তি কোথায় ??? গতকাল প্রথম আলো পত্রিকায় (৭ম পেইজ) পড়লাম সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চার জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে পরীপ্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কি মেধাবী শিক্ষার্থী গড়ার কারিগর না ক্ষা সংশ্লিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে , তাই সমাজ বিজ্ঞানের দুইজন ও পদার্থবিজ্ঞান এর চতুর্থবর্ষের দুইজন শিক্ষককে পরিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল কার্যকলাপ থেকে তিন বছরের জন্য অব্যহতি দিয়েছে । খবরটা পড়ে নিজে নিজে একবার চিন্তা করে দেখলাম পরিক্ষায় দুর্নীতি মানে নম্বর যে বেশী পাবে তাকে কম দেওয়া, আর যে কম পাবে তাকে বেশী দেয়া হয়েছে । আমার মাথা লজ্জায় নুইয়ে পড়ল ,এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি পড়ি??? যেখানে আমার শিক্ষকগণ দুর্নীতির সাথে জড়িত ??? আমার ভাবতেও কষ্ট হয় এই শিক্ষকের হাত ধরেইতো ছাত্র-ছাত্রীরা একদিন মাথা উচু করে জাতির সামনে দাঁড় হবে ??? যারা ছাত্র জীবনে শিক্ষকের দুর্নীতি সম্পর্কে জানে তাদের কাছ থেকে জাতি কি আশা করতে পারে ???? ভাগ্যক্রমে আজকে আমি হল এ ফিরছি এমন সময় মল চত্বরে কিছু ছাত্র-ছাত্রীকে দেখতে পাই মন খারাপ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি বিরুপ মনোভাব পোষণ করছে,মন খারাপ করছে এই কথা বলে যে, তাদের শিক্ষকদের অপরাধ আর শাস্তি তাদের ???? হায় জাতি ?? হায় আল্লাহ তুমি আমাদের রক্ষা কর , না জানি আর কতদিন আমাদের পরিক্ষা ,রেজাল্টের জন্য অযথা অপেক্ষা করতে হয় ??? জিজ্ঞেস করে জানতে পারি , তাদের ল্যাব(ব্যবহারিক) পরীক্ষা স্থগিত প্রায় একমাস । কিছু শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে বুঝতে পারলাম , তারা বলল, ভাই আমরা অতিষ্ঠ , পদার্থবিজ্ঞান এ পড়ে আমরা শেষ , তাদের মধ্যে একজন বলল ভাই আমাদের বিভাগ আমাদের কোন কথা শুনে না , আমাদের ভালো মন্দ কিছুই চিন্তা করে না , কিছুদিন আগে হাজার চেষ্টা করেও আমরা কাউকে(বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ) একটা কথা শুনাতে পারলাম না , আমাদের ৫০/৬০ জন ছাত্র-ছাত্রীর ন্যায্য দাবি আদায় করতে পারলাম না , আর এখন শিক্ষকদের অর্ন্তকলহে মাশুল দিচ্ছি আমরা ছাত্র-ছাত্রীরা , একবার পরিক্ষা দিয়েছি কিন্তু আবার কিনা পরিক্ষা হবে , ভাইয়া আমাদের সময়ের কোন মূল্য নাই , আমাদের কথার কোন মূল্য নাই ।
একজন মেয়ে বলল, আমরা MMP,CED ( method of mathematical physics, classical electrodynamics) তে পাস করেছি আমাদের কপালের গুনে , আমি জিজ্ঞেস করি কপালের গুনে মানে ??? তারা বলল আমাদের সময় আগের শিক্ষক ছিলনা তাই পাস, পাস ফেল আমাদের পড়াশোনা উপর নয়, শিক্ষকের উপর নির্ভর করে। বিগত তিন বছর অধিকাংশ(৮০%) ওই MMP,CED তে ফেল করেই , অনার্স শেষ করেছে , আমাদের কপাল ভালো শিক্ষক পরিবর্তন হয়েছে , আমরাও ঐ আগের শিক্ষকের আমলে এক ,দুইবার ওইসব কোর্সে ফেল করেছি, আর যখনই শিক্ষক পরিবর্তন তখনই আমরা সবাই পাস করেছি, বেশিরভাগ ৬০-৮০% মার্কস পেয়েছি । আমার বুঝতে বাকি রইল না যে , তাদের পাসের প্রধান বাঁধা ছিল তাদের শিক্ষক । এমন আর অনেক অভিযোগ শুনলাম । ফিশারিজ বিভাগের এক ছাত্রের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম , তারা ও ভালো নাই, তার অভিযোগ সে প্রতিটা কোর্সে আমি সবচেয়ে বেশি নম্বর পাই, অথচ কোর্স ভাইবায় আমি কম পাই , আর প্রথম হতে পারি না, তার অভিযোগ তার সামনে যে কয়জন ভাইবায় বেশি মার্কস পায় তারা সবাই মেয়ে ।
ভাইবায় ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েরা বরাবরই বেশি পায় , তার কারণ হয়তো বা আছে । ছাত্রীর সাথে শিক্ষকের অবৈধ সম্পর্কের কথা আমরা কম বেশি সবাই জানি । এরা কি জাতির অহংকার ??????????? স্যারের সাথে যার যোগাযোগ ভালো, যে একটু বেশি............সে ভাইবায় বেশি মার্কস বেশি পায় এটা প্রচলিত , এর রহস্য কি??
পরিক্ষার আগের দিন ছাত্রীকে ওই সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ফোন দেয় এমন কথাও অজানা নয় । যে ছাত্র বা ছাত্রী এই প্রতিষ্টানে পড়াশোনা শেষ করে বের হতে পারল না, তার দায়ভার অবশ্যই তার একার নয় , যে বছরের পর বছর একই শ্রেনীতে পড়ছে তার দায়ভার ও কি তার শুধু নিজের ??????? বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করে যাবার সময় কোন স্যার কে আপনি ভালো বলবেন এমন প্রশ্নে বেশিরভাগ সময় কোন নাম শোনা যায় না, Biochemistry & molecular biology বিভাগের এক ছাত্র বি,সি, এস ক্যাডারে এ,এস ,পি হয়েছে এটা তার শিক্ষকে বিশ্বাস করাতে পুলিশ নিয়ে স্যার এর সাথে দেখা করতে এসেছিলেন(বি,দ্রঃ তার স্যার বলেছিলেন, তুমি এই মেধা দিয়ে কোন চাকরি পাবে না ) আসলে আমরা মেধাবশুন্য হচ্ছি , না শিক্ষকরা আমাদের মাধাহীন হতে আগ্রহ যোগাচ্ছে , এই প্রশ্নে উত্তর আপনার কাছে , সমস্ত জাতির কাছে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।